Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৯ শুক্রবার, মে ২০২৫ | ২৫ বৈশাখ ১৪৩২ | ঢাকা, ২৫ °সে

ঢাবিতে চান্স পাওয়া যমজ বোনের দায়িত্ব নিলেন ডিসি, মোবাইল দিলেন চেয়ারম্যান!

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৫ অক্টোবর ২০১৯, ০৬:০১ PM
আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০১৯, ০৬:০১ PM

bdmorning Image Preview


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) চান্স পাওয়া যমজ দুই বোন সাদিয়া আক্তার সুরাইয়া ও নাদিরা ফারজানা সুমাইয়ার পড়াশোনার দায়িত্ব নিয়েছেন বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মামুনুর রশীদ।

শনিবার দুপুরে সার্কিটে হাউসে মেধাবী ওই দুই শিক্ষার্থী ও তাদের মায়ের সঙ্গে কথা বলে পড়াশোনার দায়িত্ব নেয়ার এ আশ্বাস দেন ডিসি।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন- বাগেরহাট সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সরদার নাসির উদ্দিন, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কামরুল হাসান, মোহাম্মাদ শাহজাহান, রাহাত উজ্জামান, শিক্ষার্থীদের মা শাহিদা বেগম ও কাউন্সিলর মোল্লা নাসির উদ্দিন প্রমুখ।

একই সঙ্গে ওই দুই শিক্ষার্থীকে দুটি মোবাইল ফোন উপহার দিয়েছেন বাগেরহাট সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সরদার নাসির উদ্দিন।

সরদার নাসির উদ্দিন বলেন, বাগেরহাটে এরকম দুইজন মেধাবী শিক্ষার্থী রয়েছে বিষয়টি জানতে পেরে সকালেই তাদের বাড়িতে যাই। স্থানীয় সংসদ সদস্য শেখ সারহান নাসের তন্ময়কে বিষয়টি জানাই। দুই শিক্ষার্থী যাতে নির্বিঘ্নে তাদের পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারেন সে ব্যবস্থা করতে বলেছেন এমপি তন্ময়।

দুই শিক্ষার্থীর দায়িত্ব নেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ বলেন, দেশ যেমন এগিয়ে যাচ্ছে, মানুষও মানুষের সহযোগিতায় এগিয়ে আসছে। তাই দুই শিক্ষার্থীর লেখাপড়ার জন্য আমরা জেলা প্রশাসন থেকে সহযোগিতা করব। পড়াশোনা করে ভালো মানুষ হবে তারা।

দুই শিক্ষার্থীর মা শাহিদা বেগম বলেন, অর্থনৈতিক দৈন্যদশার মধ্যে দুই মেয়েকে পড়ালেখা করিয়েছি। ওরা পড়ালেখা করতে চায়। ওরা সুযোগ পেয়েছে আমারও ইচ্ছা পড়ালেখা চালিয়ে যাক। তবে আমার যে সামর্থ্য তাতে দুজনকে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানো অনেক কষ্টের। দুই মেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাওয়ার পর অনেক চিন্তিত ছিলাম। কিন্তু সবাই সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়ায় এখন একটু ভারমুক্ত হয়েছি।

সুমাইয়া বলেন, শৈশব থেকেই দারিদ্র্যতার মধ্যে বেড়ে উঠেছি আমরা। পারিবারিক অসচ্ছলতার কারণে মাধ্যমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত আমরা টিউশনি করিয়ে পড়াশোনার খরচ জোগাড় করেছি। স্বপ্ন দেখেছি যেন আমরা দুই বোন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো স্বনামধন্য একটি প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করতে পারি। সে স্বপ্ন আমাদের পূরণ হয়েছে।

সুরাইয়া বলেন, ঢাবিতে সুযোগ পাওয়ার পরে এক ধরনের অনিশ্চয়তা কাজ করছিল মনের মধ্যে। ডিসি, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান ও পৌরসভার মেয়র মহোদয়সহ অনেকের সহযোগিতার আশ্বাসের জন্য আমরা কৃতজ্ঞ। সবার কাছে দোয়া চাই। যাতে ভালো লেখাপড়া করে দেশের সেবা করতে পারি আমরা।

প্রসঙ্গত, বাগেরহাট সদর উপজেলার হরিণখানা এলাকার দিনমজুর বাবা মহিদুল হাওলাদারের যমজ মেয়ে সুরাইয়া ও সুমাইয়া। অর্থাভাবে টিউশনি করিয়ে পড়াশোনা চালিয়েছেন তারা।

এরপরও মাধ্যমিকে বাণিজ্য বিভাগে সুরাইয়া ৪.৮৬, সুমাইয়া ৪.৯১ এবং উচ্চ মাধ্যমিকে দুই বোনই গোল্ডেন এ-প্লাস পান। ঢাবিতে ভর্তি পরীক্ষায় গ-ইউনিটে ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (গ-ইউনিট) বাণিজ্য অনুষদে সুমাইয়ার মেধাক্রম ৮৪৬ এবং সুরাইয়ার মেধাক্রম ১১৬৩। ঢাবিতে তাদের ভর্তির শেষ দিন ৩১ অক্টোবর।

Bootstrap Image Preview