Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৭ বুধবার, মে ২০২৫ | ২৪ বৈশাখ ১৪৩২ | ঢাকা, ২৫ °সে

৫ সন্তান থাকা স্বত্ত্বেও বৃদ্ধ বাবা-মায়ের ঠিকানা গোয়ালঘর

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৫ অক্টোবর ২০১৯, ০৫:৩৫ PM
আপডেট: ২৫ অক্টোবর ২০১৯, ০৫:৩৫ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত


শুকুর দেওয়ান (৭০) ও সহুরা বেগম (৬৫) বৃদ্ধ এক দম্পতি। এক ছেলে ও চার মেয়ে রয়েছে এই দম্পতির। ছেলে-মেয়ে কারও ঘরে ঠাঁই হয়নি বৃদ্ধ বাবা-মায়ের।

তাই এই বৃদ্ধ বয়সে থাকতে হচ্ছে পাশের বাড়ির ঘোয়াল ঘরে। সেখানে আশপাশের লোকজন কিছু খাবার দিয়ে যায়, তা খেয়েই জীবন বাঁচাচ্ছেন তারা।

ধর্মভীরু মুসলিম এই দম্পতির নামাজের জন্য ন্যূনতম পবিত্র জায়গাটুকুও নেই। ঝড়-বৃষ্টির মধ্যেও ঘোয়াল ঘরে থাকতে হচ্ছে। এভাবেই মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন তারা।

এমন ঘটনা ঘটেছে পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার কাউখালী গ্রামে। ঘটনার এক মাস অতিবাহিত হলেও স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেয়া হয়নি কোনো ব্যবস্থা।

জানা গেছে, শুকুর দেওয়ান পেশায় একজন কৃষক ছিলেন। নিজের বাড়ি ছিল, জায়গা সম্পত্তি ছিল এমনকি গরু-ছাগলের খামারও ছিল। এক সময় সুখে-শান্তিতে কেটেছে তাদের জীবন। তাদের- রয়েছে- মর্জিনা, রোকেয়া, খোদেজা ও সালমা নামে চার মেয়ে। মেয়েরা বড় হলে তাদের বিয়ে দেন তারা।

সংসারে ছিল, একমাত্র ছেলে হোসেন দেওয়ান (৩০), পুত্রবধূ ও তারা দুজন। এই চারজনের সংসারও দীর্ঘদিন সুখে কাটছিল। পরে শুকুর দেওয়ান বার্ধক্যজনিত কারণে অসুস্থ হয়ে পড়লে, চিকিৎসার কথা বলে ছেলে হোসেন বাবাকে নিয়ে যান পাশের উপজেলা গলাচিপায়। সেখানে গিয়ে বাবার সব সম্পাতি নিজের নামে দলিল করে নেন তিনি।

এরপর সেই সম্পত্তি চাচা তাজু দেওয়ানের কাছে বিক্রি করে এলাকা ছেড়ে লাপাত্তা হয়ে যান হোসেন দেওয়ান। কিছু দিন পর ক্রয়সূত্রে জমির মালিক তাজু দেওয়ান বাড়ি থেকে শুকুর দেওয়ান ও তার স্ত্রীকে বের করে দেন। ছেলের নামে সব জমি লিখে দেয়ায় মেয়েরাও বাবাকে ত্যাগ করেন। এতে অসহায় হয়ে পড়েন বৃদ্ধ এই বৃদ্ধ দম্পতি। কোনো উপায় না পেয়ে পাশের বাড়ির একটি গোয়ালঘরে আশ্রয় নেন। এরপর থেকে সেখানেই মানবেতর জীবন কাটছে তাদের। পাশের বাড়ির লোকজন কিছু খাবার দিয়ে যায়, তা খেয়ে বেঁচে আছেন অসহায় এই বৃদ্ধ দম্পতি।

শুকুর দেওয়ান ও সহুরা বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, বাবা আমাগো তাজু বাড়ির থেকে নামিয়ে দিয়েছে। আমরা বর্তমানে গরুর ঘরে বসবাস করছি। আশপাশের মানুষ আমাদের খাবার দিলে খাই না দিলে না খেয়ে থাকি। শেষ জীবনে যাতে একটু নামাজ-রোজা করে মরতে পারি সেইটা চাই।

যোগাযোগ করা হলে ছোটবাইশদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এবিএম আব্দুল মান্নান বলেন, বিষয়টি আমি জানি। স্থানীয় মেম্বার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। বৃদ্ধ তার সকল সম্পত্তি ছেলের নামে লিখে দিয়েছেন। বর্তমানে তার কোনো স্বজন তাকে জায়গা দিচ্ছে না। এখানে আমার কি করণীয় আছে?

রাঙ্গাবালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাশফাকুর রহমান বলেন, আমরা খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

Bootstrap Image Preview