বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম ইসমাইল হোসেন এবং তার পরিবারের সঙ্গে অমানবিক আচরণের অপরাধে দিনাজপুরের জেলা প্রশাসক মাহমুদুল আলম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব), সদর উপজেলার ইউএনও ও এসিল্যান্ড আরিফুল ইসলামের অপসারণ ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ।
শনিবার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ‘মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ’ আয়োজিত মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে এ দাবি জানানো হয়।
মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. আল মামুন বলেন, ‘জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধা ইসমাইল হোসেন কেন রাষ্ট্রীয় গার্ড অব অনার প্রত্যাখ্যান করলো? এর জবাব দিনাজপুরের জেলা প্রশাসনকে অবশ্যই দিতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় দিনাজপুরের জেলা প্রশাসন ও সদর উপজেলা প্রশাসনের এত বড় দুঃসাহস কীভাবে হলো যে একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার পরিবারকে অপমান করা! বীর মুক্তিযোদ্ধা ইসমাইল হোসেনকে বাস্তুচ্যুত করেই তারা ক্ষান্ত হয়নি, তার সন্তান নূর ইসলামকেও চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। পরবর্তীতে জেলা প্রশাসকের কাছে প্রতিকার চাইতে গেলে বীর মুক্তিযোদ্ধাকে অপমান করে বের করে দেন জেলা প্রশাসক ও এসিল্যান্ড।’
‘গাড়িচালকের চাকরি হলেও তাকে দিয়ে এসিল্যান্ড রান্না করানো, শৌচাগার পরিষ্কারসহ ব্যক্তিগত কাজ করাতেন। দিনাজপুর জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের প্রতি কতটা ক্ষোভ থাকলে একজন মুক্তিযোদ্ধা মৃত্যুর আগে পত্র লিখে যান যে, তাকে যেন রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় গার্ড অব অনার না দেয়া হয়। এসব ঘটনা প্রমাণ করে জড়িত এসব কর্মকর্তা কখনওই মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী নন। প্রশাসনে লুকিয়ে থাকা স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তির এজেন্ট তারা। একজন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে অপমান করে তারা রাষ্ট্রকে অপমান করেছে। মহান মুক্তিযুদ্ধকে অবমাননা করেছে। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বীর মুক্তিযোদ্ধা ইসমাইল হোসেন ও তার পরিবারকে অপমানকারী ডিসি, এডিসি, ইউএনও ও এসিল্যান্ডকে অপসারণ করে আইনের আওতায় আনতে হবে। অন্যথায় মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ ২৪ ঘণ্টা পর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ঘেরাও কর্মসূচি পালন করবে’- জানান আল মামুন।
মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সনেট মাহমুদ, সাধারণ সম্পাদক ইয়াসির আরাফাত তূর্য, ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি আহমেদ হাসনাইন, সাধারণ সম্পাদক সোহেল মিয়া, মহানগর উত্তরের সভাপতি সোহেল রানা, সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন সরকার প্রমুখ।
মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের তিন দফা দাবি পেশ করা হয়। এগুলো হলো- ১. দিনাজপুরের জেলা প্রশাসক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব), সদর উপজেলার ইউএনও ও এসিল্যান্ডকে দ্রুত অপসারণ ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।
২. বীর মুক্তিযোদ্ধা ইসমাইল হোসেনের নামে বরাদ্দকৃত সরকারি খাস জমি ফেরত দিতে হবে।
৩. ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবার সুরক্ষা আইন’ প্রণয়ন করতে হবে।