এসএসসি নির্বাচনী পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পরও ফারজানা আক্তার নামে এক ছাত্রী ফরম পূরণ করতে পারছে না। জেএসসি পরীক্ষায় ফেল করেছে এই অজুহাতে তাকে ফরম পূরণ করতে দিচ্ছে না স্কুল কর্তৃপক্ষ।
ফারজানা আক্তার গেড়ামারা গোহাইলবাড়ী সবুজ সেনা উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী। সে উপজেলার চান্দুলিয়া গ্রামের ফজলুর রহমানের মেয়ে। বৃহস্পতিবার ওই শিক্ষার্থী এ বিষয়ে বিচার চেয়ে মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবদুল মালেকের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে। তাছাড়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার হারুন অর রশিদকেও অভিযোগের অনুলিপি দিয়েছে বলে জানা গেছে।
অভিযোগে জানা যায়, ফারজানা আক্তার ২০১৭ সালে গেড়ামারা গোহাইলবাড়ী সবুজ সেনা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে জেএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়। ফল প্রকাশের পর ফারজানা ওই বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির মানবিক শাখায় ভর্তি হয়। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নবম শ্রেণিতে মানবিক শাখায় তাকে নিবন্ধন করান এবং বার্ষিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে দশম শ্রেণিতে ভর্তি করেন। দশম শ্রেণিতে তার ক্লাস ক্রমিক নম্বর ৩০।
গত ১৫ অক্টোবর থেকে নির্বাচনী পরীক্ষা শুরু হলে তাকে ১৪ অক্টোবর বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক স্বাক্ষরিত প্রবেশপত্র দেওয়া হয়। নির্বাচনী পরীক্ষায় ফারজানা সকল বিষয়ে উত্তীর্ণও হয়।
এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণ শুরু হলে তার কাছ থেকে ফরম পূরণ বাবদ ৪ হাজার ২৫০ টাকা নেওয়া হয়। কিন্তু জেএসসি পরীক্ষায় তুমি ফেল করেছ একথা বলে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দুদিন পরে তাকে টাকা ফেরত দেন। এছাড়া স্কুল কর্তৃপক্ষ ওই ছাত্রীর নির্বাচনী পরীক্ষার ফলাফলে ফেল করা অপর ছাত্রী ফারজানা আক্তারকে ফরম পূরণ করান।
এ ঘটনা জানতে পেরে ওই ছাত্রী ও তার পরিবারের সদস্যরা মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন। এলাকাবাসীর প্রশ্ন ফারজানা যদি জেএসসি পরীক্ষায় ফেল করেও থাকে তাহলে কিভাবে তাকে নবম শ্রেণিতে ভর্তি এবং নিবন্ধন করা হলো। এই ভুলের খেসারত কে দেবে? এ প্রশ্ন এলাকাবাসীর।
ফারজানার বাবা ফজলু মিয়া জানান, চার মেয়ে ও ছেলে সন্তানের মধ্যে সবার ছোট ফারজানা। দিনমজুরের কাজ করে মেয়েকে লেখাপড়া করাচ্ছি। দুই বছরে তার মেয়ের লেখাপড়া বাবদ প্রায় ৫০ হাজার টাকা খবচ হয়েছে। টাকা বড় বিষয় না হলেও মেয়ের জীবন থেকে তিনটি বছর এভাবে হারিয়ে গেল এ দায় কে নেবে?
এ ব্যাপারে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মোজাম্মেল হকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ফারজানা নামে দশম শ্রেণিতে কামারপাড়া গ্রামের এক ছাত্রী ফরম পূরণ করেছে।
ফারজানা আক্তারের (রোল ৩০) নিবন্ধন ও নবম ও দশম শ্রেণির বেতন, পরীক্ষার ফিস, মিলাদ ও পূজার চাঁদা নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোনো সদোত্তর দিতে পারেননি।
মির্জাপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. হারুন অর রশিদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ওই ছাত্রীর লিখিত অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।