একুশে পদকজয়ী কবি ও স্থপতি রবিউল হুসাইনের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে তার ধানমন্ডির বাসায় গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রবিউল হুসাইনের চিকিৎসায় গঠিত মেডিক্যাল বোর্ডের সদস্য অধ্যাপক ডা. হারিসুল হক জানান, মঙ্গলবার দুপুরে প্রায় আধাঘণ্টা কবির বাসায় উপস্থিত থেকে তিনি কবির চিকিৎসার বিষয়ে এবং তার পরিবারের খোঁজ-খবর নেন।
অধ্যাপক ডা. হারিসুল হক বলেন, মঙ্গলবার দুপুর দেড়টার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কবির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে তার ধানমন্ডির বাসায় আসেন। আমি সেখানে ছিলাম। আমার কাছে প্রধানমন্ত্রী জানতে চান—রবিউল হুসাইনের কী কী হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রীকে বিস্তারিত জানালাম।
ডা. হারিসুল হক বলেন, বুধবার প্রথমে বাংলা একাডেমি, পরে শহীদ মিনারে সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদনের কথা জেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সকাল ১১টায় একবারেই তাকে শহীদ মিনারে নেয়া হোক।’ আর যেহেতু বাংলা একাডেমি এবং শহীদ মিনার কাছাকাছি, তাই ঠিক করা হয়েছে একবারেই শহীদ মিনারেই নেয়া হবে। পরে মিরপুরের শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।
প্রধানমন্ত্রী প্রায় আধাঘণ্টার মতো কবির বাসায় অবস্থান করেন বলেও জানান অধ্যাপক ডা. হারিসুল হক।
তিনি বলেন, এসময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া এবং রবিউল হুসাইনের চিকিৎসায় নিয়োজিত অন্য চিকিৎসকরাও সেখানে উপিস্থিত ছিলেন।
রবিউল হুসাইন ১৯৪৩ সালে ঝিনাইদহের শৈলকুপায় জন্মগ্রহণ করেন। ভাষা ও সাহিত্যে অবদানের জন্য ২০১৮ সালে একুশে পদক পাওয়া এই কবি মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন সংরক্ষণের জন্যও কাজ করেছেন।
তিনি ছিলেন বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর ও মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি সংরক্ষণ কেন্দ্রের ট্রাস্টি, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির নির্বাহী পরিষদের সদস্য।
রবিউল হুসাইনের লেখা উল্লেখযোগ্য বই হলো—‘কী আছে এই অন্ধকারের গভীরে’, ‘আরও ঊনত্রিশটি চাঁদ’, ‘স্থিরবিন্দুর মোহন সংকট’, ‘কর্পূরের ডানাঅলা পাখি’, ‘আমগ্ন কাটাকুটি খেলা’, ‘বিষুবরেখা’, ‘দুর্দান্ত’, ‘অমনিবাস’, ‘কবিতাপুঞ্জ’, ‘স্বপ্নের সাহসী মানুষেরা’, ‘যে নদী রাত্রির’, ‘এইসব নীল অপমান’, ‘অপ্রয়োজনীয় প্রবন্ধ’, ‘দুরন্ত কিশোর’, ‘বাংলাদেশের স্থাপত্য সংস্কৃতি’, ‘নির্বাচিত কবিতা’, ‘গল্পগাথা’, ‘ছড়িয়ে দিলাম ছড়াগুলি’ ইত্যাদি।
মঙ্গলবার সকাল ৭টা ৫৫ মিনিটে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান রবিউল হুসাইন। তার বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর।