কাজ শেষে বাড়ি ফেরার আগে চর্ম চিকিৎসকের কাছে গিয়েছিলেন এক তরুণী পশু চিকিৎসক। সেখান থেকে ফেরার সময় দেখতে পান চার যুবক তার আশে পাশে ঘোরাফেরা করছে। আচরণ সন্দেহজনক মনে হওয়ায় বোনকে ফোন করেন তিনি। কিন্তু তাতেও কাজ হয়নি। গণধর্ষণের শিকার হন।
শুধু তাই নয় ধর্ষণের পর শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয় তারা। সকাল বেলা তরুণীর মৃত শরীরের পোড়া অংশ উদ্ধার করে পুলিশ।
ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রদেশ তেলেঙ্গানার রাজধানী হায়দ্রাবাদে। কলকাতাভিত্তিক আনন্দবাজার পত্রিকা তাদের এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, পরিকল্পনা করেই ওই তরুণী পশু চিকিৎসককে ধর্ষণ করে চার যুবক। পরে তার শরীরে আগুন দিয়ে মেরে ফেলে। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আনন্দবাজার পত্রিকা বলছে, গত বুধবার রাতে ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের প্রায় ৩ ঘণ্টা আগে ওই তরুণী পশু চিকিৎসককে ধর্ষণের পরিকল্পনা করে তেলেঙ্গানার চার যুবক। তাদের নাম মোহাম্মদ আরিফ (২৬), জল্লু শিবা (২০), জল্লু নবীন (২০) এবং চিন্তকুন্ত চেন্নাকেশভুলু (২০)। তারা সবাই ট্রাকের কর্মী।
পরিকল্পনা অনুযায়ী শামশাবাদ টোল প্লাজায় রাখা তরুণীর মোটরবাইকের চাকা ফুটো করে দেয় তারা। ওই চিকিৎসক নিজের বাইকের সামনে এসে দেখেন চাকায় হাওয়া নেই। এ সময় ওই চার যুবক তার সামেন আসে। চাকা ঠিক করার কথা বলে মোটরবাইকটি নিয়ে যায় জল্লু শিবা। পরে সেখান থেকে তরুণীকে একটি ঘরে টেনে নিয়ে যায় আরিফ, নবীন এবং চিন্তকুন্ত। সেখানে তাকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। বাইক ঠিক করিয়ে এনে পরে শিবাও তাকে ধর্ষণ করে।
এর আগে নিজের বোনকে ফোন করেন ওই তরুণী। বলেন, ‘কয়েকজন অচেনা লোক ঘুরে বেড়াচ্ছে এখানে। আমার সঙ্গে কথা বলতে থাক। দুই ট্রাকচালক তাকে সাহায্য করবে বলছে। আপত্তি সত্ত্বেও টায়ার ঠিক করে দেবে বলে স্কুটার নিয়ে চলে গেছে একজন।’
এসব শুনে তার বোন পরামর্শ দেন, স্কুটারটি রেখে ট্যাক্সি নিয়ে বাড়ি ফিরতে। এরপর থেকেই নিহতের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
ধর্ষণের পর বাইক নিয়ে পেট্রল কিনে আনে চারজনের দুজন। তরুণীর মোটরবাইক থেকেও ডিজেল বের করা হয়। মারাত্মক আহত তরুণীর শরীরে জ্বালানি তেল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয় তারা।
গত বুধবার রাতের এ ঘটনার পর বৃহস্পতিবার ভোরে এক দুধ-বিক্রেতা শামশাবাদ টোল প্লাজার নিচে তরুণীর জ্বলন্ত শরীর দেখতে পান। পরে তিনি থানায় ফোন করলে পুলিশ এসে লাশটি উদ্ধার করে।
এদিকে গতকাল শুক্রবার মোহাম্মদ আরিফ, জল্লু শিবা, জল্লু নবীন এবং চিন্তকুন্ত চেন্নাকেশভুলুকে গ্রেপ্তার করে হায়দরাবাদ পুলিশ। জিজ্ঞাসাবদে তারা ঘটনার বিবরণ দেয়।
আনন্দবাজার পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঘাতকদের জিজ্ঞাসাবদের বরাত দিয়ে পুলিশ জানিয়েছে, বুধবার সন্ধ্যা ৬টায় ওই তরুণী পশু চিকিৎসককে টোল প্লাজায় দেখে ধর্ষণের ছক কষে তারা। পরে তার বাইকের চাকা ফুটো করে দেয়। গোচিবাওলিতে চর্মচিকিৎসকের সঙ্গে দেখা করে তিনি এসে দেখেন তার চাকায় হাওয়া নেই। এ সময় ঘাতকরা তাকে সাহাজ্যের জন্য এগিয়ে গিয়ে এমন কাণ্ড ঘটায়।
পুলিশ আরও জানিয়েছে, এ ঘটনায় আরও কেউ জড়িত আছে কী না খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। ঘাতকদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।