সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে প্রসব বেদনা নিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন এক মা। কিন্তু হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার ২০ মিনিটের মাথায় কোন চিকিৎসা না দিয়েই ডাক্তার তাকে ছাড়পত্র হাতে ধরিয়ে অন্য হাসপাতালে যাওয়ার পরামর্শ প্রদান করেন।
এদিকে ছাড়পত্র নিয়ে দ্বিতীয় তলা থেকে নেমে হাসপাতালের প্রধান ফটকের সামনে সিএনজিতে ওঠার সময় ওই প্রসূতি মা জনসম্মুখেই জন্ম দেন এক নবজাতক। গতকাল রোববার (১ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
প্রসূতির পরিবার ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার রুপসাচর এলাকার মো. আব্দুর রহিমের স্ত্রী মোছা. রহিমা খাতুন (২২) গর্ভকালীন সমস্যা নিয়ে গতকাল রোববার রাত ১০টার দিকে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হন। ভর্তি হওয়ার পর প্রসবের কোন ব্যথা অনুভব না হওয়া ও রক্ত স্বল্পতার অযুহাত দেখিয়ে তাকে ১০টা ২০ মিনিটে ছাড়পত্র দেন কর্তব্যরত চিকিৎসক বনশ্রী সাহা। এ সময় তাকে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরামর্শও দেন তিনি।
এদিকে কর্তব্যরত চিকিৎসক বনশ্রী সাহা প্রসব বেদনায় ছটফট করতে থাকা প্রসূতি ওই মায়ের চিকিৎসা সেবা না দিয়ে মোবাইলে কথা বলতে ব্যস্ত থাকেন। একপর্যায়ে প্রসূতির স্বামী মো. আব্দুর রহিম গাইনী ও প্রসূতি ওয়ার্ডের দ্বিতীয় তলা থেকে চিকিৎসা না পেয়ে তাকে নিচে নামিয়ে হাসপাতালের প্রধান ফটকে একটি সিএনজিতে উঠানোর সময় জনসম্মুখেই ওই প্রসূতি মা জন্ম দেন এক নবজাতক। তবে সদ্য ভূমিষ্ঠ নবজাতকটি গুরুতর আঘাত পায়। পরে রোগীর স্বজন ও স্থানীয়দের তোপের মুখে প্রসূতি মা ও নবজাতককে শিশু ওয়ার্ড ও প্রসূতি মাকে গাইনী বিভাগে নিয়ে যাওয়া হয়।
এ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে গাইনী ও প্রসূতি ওয়ার্ডের সিনিয়র স্টাফ নার্স ফাহমিদা খাতুন ও শিল্পী খাতুন বলেন, প্রসূতি রহিমাকে ডাক্তার বনশ্রী সাহা ছাড়পত্র দেন। এ কারণে আমরা তাকে চলে যেতে বলেছি।
প্রসূতির স্বামী আব্দুর রহিম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, তার স্ত্রী যখন প্রসব বেদনায় ছটফট করছিলো তখন তিনি বারবার দায়িত্বরত ডাক্তারকে অনুরোধ করেও সেবা পাননি। অবশেষে খোলা আকাশের নিচে তার স্ত্রীকে সন্তান প্রসব করতে হয়েছে। তিনি এ ঘটনার সঠিক বিচার চেয়েছেন।
এ বিষয়ে দায়িত্বরত চিকিৎসক বনশ্রী সাহার সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি প্রশ্নের সদত্তর দিতে না পেরে ফোনটি কেটে দেন।
বঙ্গমাতা জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. রমেশ চন্দ্র সাহা বলেন, বিষয়টি আমি জানতে পেরেছি। তবে চিকিৎসক প্রসূতির অবস্থা একটু জটিল হওয়ায় ছাড়পত্র প্রদান করেছিলেন।