Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১২ সোমবার, মে ২০২৫ | ২৯ বৈশাখ ১৪৩২ | ঢাকা, ২৫ °সে

গভীর রাতে নাগরিকত্ব বিলে স্বাক্ষর ভারতের রাষ্ট্রপতির

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৩ ডিসেম্বর ২০১৯, ০৭:৫১ PM
আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০১৯, ০৭:৫১ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত


কোথাও জ্বলছে টায়ার, কোথাও আবার পুলিশের গুলি প্রাণ কাড়ল দু’জনের, জ্বালিয়ে দেওয়া হল দুই বিজেপি সাংসদদের বাড়ি, প্রতিবাদীদের সঙ্গে সুরক্ষাবাহিনীর লড়াইয়ের চিত্র এখন আসামের দিনপঞ্জি। নাগরিকপঞ্জি থেকে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল, প্রতিবাদের আগুন জ্বলেছে শহরের প্রতিটি কোনায়।

আর এই বিক্ষুদ্ধ পরিস্থিতির মাঝেই বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় আইন মন্ত্রণালয় একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়ে দেয় যে, এই নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলে সায় দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ।

২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত অ-মুসলিমদের নাগরিকত্ব দেওয়ার যে দাবি পদ্মশিবির বিলে পরিণত করেছে, এবার তাতেই রাষ্ট্রীয় সম্মতি মিলেছে, এমনটাই জানিয়েছে আইন মন্ত্রণালয়।

কিন্তু আসাম শান্ত হয়নি। বরং ক্রমশ উত্তপ্ত হয়েছে পরিস্থিতি। নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের প্রতিবাদের মাঝেই রক্ত ঝরল গুয়াহাটিতে। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে প্রাণ হারালেন বছর একুশের তরুণ দীপাঞ্জল দাস এবং বত্রিশের যুবক স্যাম স্ট্যাফোর্ড। সংঘর্ষের মাঝেই আহত হলেন প্রায় ২১ জন। সকলকেই ভর্তি করা হয়েছে গুয়াহাটি মেডিকেল কলেজে। তাঁদের মধ্যে একজন এখনও জীবনযুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন।

কিন্তু লড়াইয়ের এই আবহে দীপাঞ্জলের এই মৃত্যু মানতে পারছেন না কেউ। কামরূপ জেলা থেকে আসা তাঁর পরিবার জানিয়েছে গুয়াহাটির সৈনিক ভবনের ক্যান্টিনে কাজ করতেন দীপাঞ্জল। বাবা পেশায় রিকশাচালক। নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের প্রতিবাদে প্রাণ হারানোর দীপাঞ্জলের পরিবারকে ততক্ষণে ঘিরে ধরেছে বারুদগন্ধের ধোঁয়াশার মেঘ।

যে প্রতিবাদের আগুন জ্বালিয়েছে আসামবাসী, তা অবিলম্বে শান্ত করার ডাক দিয়েছেন সে রাজ্যের রাজ্যপাল জগদীশ মুখি এবং মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনওয়াল। প্রতিবাদ রক্ত দিয়ে নয় শান্তি বজায় রেখে হোক, পৃথকভাবে সেই আবেদনই আন্দোলনকারীদের জানিয়েছেন রাজ্যের সাংবিধানিক এবং প্রশাসনিক প্রধান।

যদিও মুখ্যমন্ত্রীর শহর ডিব্রুগড়ের চাবুয়ার সরকারি আধিকারিকরা জানিয়েছেন, বিক্ষোভকারীরা সার্কেল অফিস, রেলস্টেশনেও ভাঙচুর চালিয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাময়িকভাবে বন্ধ করা হয়েছে আসাম-ত্রিপুরা রেলপরিষেবা। মোতায়েন করা হয়েছে ১২ কোম্পানি বিশেষ সুরক্ষাবাহিনী।

কিন্তু আসামের পরিস্থিতি এতোটাই উতপ্ত, তা ছোঁয়া তো দূর অস্ত, কাছে গেলেও প্রতিবাদের আঁচ টের পাওয়া যাচ্ছে। ইতিমধ্যেই এই আঁচকে শান্ত করতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফে ২ হাজার সশস্ত্র পুলিশ বাহিনীকে মোতায়েন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ১০টি জেলায় বন্ধ করা হল ইন্টারনেট পরিষেবা, অনির্দিষ্টকালের জন্য কার্ফু জারি করা হল গুয়াহাটিতে।

পুলিশ সূত্রে খবর, গ্রেফতার করা হয়েছে কৃষক মুক্তি সংগ্রাম সমিতির প্রধান অখিল গগৈকে। আসামের এই প্রতিবাদের অন্যতম মুখ অখিলের এই সংগঠন।

দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে এক উচ্চপদস্থ পুলিশকর্তা বলেন, ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে এই বিক্ষোভ। যদিও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তবু সংঘর্ষ চলছেই রাজ্যজুড়ে।

আসাম বিধানসভার স্পিকার এবং যোরহাটের বিজেপি বিধায়ক হীতেন্দ্র নাথ গোস্বামী বলেন, “ক্যাব যে রাজ্যের বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে বিদ্বেষ সৃষ্টি করবে, এটা আমি অনেক আগে থেকেই বলে আসছি।”

সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

Bootstrap Image Preview