Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৮ বৃহস্পতিবার, মে ২০২৫ | ২৪ বৈশাখ ১৪৩২ | ঢাকা, ২৫ °সে

দিল্লির জামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভে সমর্থন হার্ভার্ড শিক্ষার্থীদের

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৭ ডিসেম্বর ২০১৯, ০৭:৪১ PM
আপডেট: ১৭ ডিসেম্বর ২০১৯, ০৭:৪১ PM

bdmorning Image Preview


দিল্লির জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া ও উত্তরপ্রদেশের আলীগর মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে পুলিশি পদক্ষেপকে ‘বিক্ষোভকারীদের সহিংস দমন’ হিসেবে অভিহিত করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। একই সঙ্গে ভারতের বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে সমর্থন জানিয়ে দেশটির সরকারের কাছে একটি খোলা চিঠি লিখেছে হার্ভার্ডের শতাধিক শিক্ষার্থী।

চিঠিতে চলমান শিক্ষার্থী বিক্ষোভ দমনে সহিংস পন্থা বেছে নেয়ায় ভারতের নিন্দা জানিয়ে বিতর্কিত নতুন নাগিরকত্ব আইন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ও আলীগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের (এএমইউ) শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে একাত্মতা জানিয়ে হার্ভার্ডের শিক্ষার্থীরা বলেছেন, ‘প্রতিবাদ এবং মতভেদ গণতন্ত্রের অন্তর্নিহিত’ বিষয়।

চিঠিতে বলা হয়েছে, প্রতিবাদ অস্বস্তিকর এবং ঐক্যনাশক হলেও এটি দেশের ধর্মনিরপেক্ষ এবং গণতান্ত্রিক কাঠোমোর অংশ। হার্ভার্ডের শিক্ষার্থীরা বলেছেন, শান্তিপূর্ণ মতবিরোধের জবাবে বিক্ষোভকারীদের ওপর পুলিশের সহিংস দমন, টিয়ারগ্যাস ব্যবহার, লাঠিচার্জ, শারীরিক নির্যাতন ও বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পুলিশের জোরপূর্বক প্রবেশ এবং ইন্টারনেট বন্ধ করে দেয়া অত্যন্ত নিন্দাজনক।

বিক্ষোভের সময় শিক্ষার্থীদের ওপর অতিরিক্ত বলপ্রয়োগের অভিযোগ উঠেছে দিল্লি এবং উত্তরপ্রদেশের আলীগর পুলিশের বিরুদ্ধে। রোববার পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে অন্তত ৫০ শিক্ষার্থী আহত হয় এবং বিনা অনুমতিতে ক্যাম্পাসে প্রবেশের পর জামিয়া মিলিয়ার শতাধিক শিক্ষার্থীকে আটক করে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী।

ওইদিন রাতে দিল্লিতে পুলিশের সদর দফতরের সামনে শিক্ষার্থীরা জমায়েত হয়ে ব্যাপক বিক্ষোভ করলে পুলিশ আটক শিক্ষার্থীদের ছেড়ে দেয়। 

ধর্মের ভিত্তিতে তৈরি ভারতের নতুন নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে দেশটির বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গত তিনদিন ধরে বিক্ষোভ চলছে। রোববার দিল্লির জামিয়া মিলিয়া ও উত্তরপ্রদেশের আলীগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ দমনে পুলিশের সহিংস অভিযানের জবাবে দেশটির বিভিন্ন প্রান্তের সরকারি-বেসরকারি শত শত বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এই বিক্ষোভ শুরু হয়েছে।

বিক্ষোভ ঠেকাতে পুলিশ ও দেশটির আধা-সামরিক বাহিনী লাঠিচার্জ, রাবার বুলেট নিক্ষেপ করেছে। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বিভিন্ন ক্যাম্পাসে সংঘর্ষে কয়েকশ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। মঙ্গলবারও দিল্লির উত্তরপূর্বের সিলামপুরে হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভ করেছেন। এ সময় বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ ও গাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনাও ঘটেছে।

সমালোচকরা বলেছেন, ক্ষমতাসীন হিন্দুত্ববাদী বিজেপি সরকার ধর্মনিরপেক্ষ প্রজাতন্ত্র হিসাবে প্রতিষ্ঠিত ভারতে বিভাজন তৈরি করতে এই নতুন নাগরিকত্ব আইন তৈরি করেছে। নতুন নাগরিকত্ব আইনে বলা হয়েছে, ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের আগে প্রতিবেশী বাংলাদেশ, পাকিস্তান এবং আফগানিস্তান থেকে যেসব অমুসলিম শরণার্থী ভারতে গেছেন; তারা দেশটির নাগরিকত্ব পাবেন।

এই আইনে মুসলিম শরণার্থীদের ব্যাপারে একই ধরনের বিধান রাখা হয়নি; যা ভারতের ধর্মনিরপেক্ষতার ভিত্তিকে দুর্বল করে দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন অনেকেই।

সূত্র : এনডিটিভি, রয়টার্স।

Bootstrap Image Preview