Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৮ বৃহস্পতিবার, মে ২০২৫ | ২৪ বৈশাখ ১৪৩২ | ঢাকা, ২৫ °সে

নাগরিকত্ব আইন নিয়ে মোদি সরকারকে সুপ্রিম কোর্টের নোটিশ

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৮ ডিসেম্বর ২০১৯, ০২:২৪ PM
আপডেট: ১৮ ডিসেম্বর ২০১৯, ০২:২৪ PM

bdmorning Image Preview


ভারতের সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বৈধতা খতিয়ে দেখতে কেন্দ্রীয় সরকারকে নোটিশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। বুধবার এই সংক্রান্ত মামলার শুনানিতে এমনই নির্দেশ দিয়েছে দেশের সর্বোচ্চ আদালত। তবে ওই আদালত একই সঙ্গে আইনটি স্থগিত করার আবেদন খারিজ করে দিয়েছে। মামলার পরবর্তী শুনানির তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে আগামী রোববার।

নাগরিকত্ব আইনের সাংবিধানিক বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে ইতিমধ্যে ৬০টি মামলা দায়ের হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। বুধবারের শুনানিতে ওই আইনের বৈধতা খতিয়ে দেখতে ভারতের মোদি সরকারকে একটি নোটিশ দিয়েছে আদালত। মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য হয়েছে আগামী রোববার, ২২ জানুয়ারি। ওই দিনই শীর্ষ আদালতে কেন্দ্রকে তাদের বক্তব্য জানাতে হবে।

তবে আপাতত ভারতের প্রধান বিচারপতি এস এ বোবদের নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম কোর্টের তিন বিচারপতির বেঞ্চ ওই আইনের প্রয়োগ স্থগিত রাখার আবেদন খারিজ করে দিয়েছে।

বিতর্কিত আইনটির বিরোধিতা করে আরো অনেকের মতো দেশের শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন কংগ্রেসের প্রবীণ নেতা জয়রাম রমেশ, ইন্ডিয়ান ইউনিয়ন মুসলিম লীগ এবং অসমে ক্ষমতাসীন বিজেপির সহযোগী দল অসম গণ পরিষদ।

বুধবার সুপ্রিম কোর্টে ভারতের প্রধান বিচারপতি এস এ বোবদের নেতৃত্বে তিন বিচারপতির বেঞ্চে এই আবেদনের শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। বেঞ্চের অন্য বিচারপতিরা হলেন বিআর গাভাই এবং সূর্য কান্ত।

নতুন নাগরিকত্ব আইনে বলা হয়েছে, পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও বাংলাদেশ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে যে সব অমুসলিম মানুষরা ধর্মীয় নিপীড়নের শিকার হয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন তারা এবার ভারতীয় নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবেন।

আবেদনকারীরা যুক্তি দেখিয়েছেন যে, ধর্মের ভিত্তিকে কখনোই নাগরিকত্ব প্রদান করা যায় না। তারা আরও বলেন যে, নতুন আইনটির মাধ্যমে ধর্মের ভিত্তিতে বিবেচনা করে অবৈধ অভিবাসীদের দেশের নাগরিক হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়া সংবিধানের মূল কাঠামোর পরিপন্থী। এই আইন নাগরিকদের জীবন ও মৌলিক অধিকার তথা সাম্যের অধিকার লঙ্ঘন করে।

তাদের দাবি, জাতির ধর্মনিরপেক্ষতার মূলনীতিকে প্রভাবিত করে। তারা বলেছিল যে, সকল ধর্মের সদস্যদের জন্য সমান আচরণের দায়িত্ব সরকারের রয়েছে।

গত বুধবার রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ এই আইনে স্বাক্ষর করার পরেই দেশ জুড়ে বিক্ষোভ আন্দোলন শুরু হয়। বিশেষত দেশের উত্তর-পূর্ব অঞ্চল, বাংলা এবং দিল্লিতে এই আইনের বিরুদ্ধে ব্যাপক প্রতিবাদ শুরু হয়েছে। আসামে বিক্ষোভের পর ঘটা হিংসার ঘটনায় ইতিমধ্যেই পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে।

এদিকে দিল্লিতে জামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা রোববার প্রতিবাদ মিছিল করার সময় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায় সেখানে। পুলিশ ওই পদযাত্রা থামানোর চেষ্টা করলে তাদের লক্ষ্য করে কেউ বা কারা পাথর ছুঁড়ে মারে, পুড়িয়ে দেওয়া হয় বাস এবং দু'চাকার গাড়িও। বিশ্ববিদ্যালয়ে বিনা অনুমতিতে পুলিশ ঢোকে, এমন অভিযোগেও উত্তাল হয় রাজধানী। শতাধিক শিক্ষার্থীকে আটকেও রাখে দিল্লি পুলিশ, পরে যদিও তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু পুলিশি পদক্ষেপের বিরুদ্ধে সারা দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতেও আছড়ে পড়ে প্রতিবাদের ঝড়।

মঙ্গলবারও অব্যাহত ছিল শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ এবং দিল্লিতে এই বিক্ষোভ ঘিরে ফের হিংসা ছড়ায়। উত্তর-পূর্ব দিল্লির সিলামপুরে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ বাঁধে। জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়ায় শিক্ষার্থীরা একটি শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ মিছিলেও সামিল হয়।

এদিকে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন এবং পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দর সিং, তিনজনেই ঘোষণা করেছেন যে তারা তাদের রাজ্যে নাগরিকত্ব আইন এবং এনআরসি প্রয়োগ করতে দেবেন না।

Bootstrap Image Preview