বল্লার (মৌমাছি) চাকে হাত দিয়েছি বলেই একটি বিশেষ শ্রেণির মানুষ ক্ষেপে উঠেছেন বলে মন্তব্য করেছেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।
বুধবার দুপুরে মানিকগঞ্জের বিজয়মেলা মাঠে জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ আয়োজিত মুক্তিযোদ্ধাদের এক সমাবেশে তিনি এ মন্তব্য করেন।
আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, ‘আমি জানি, বল্লার চাকে আমি হাত দিয়েছি। রাজাকার, আল-বদর ও আল-শামসদের তালিকা প্রকাশ করেছি। সঙ্গত কারণেই একটা বিশেষ শ্রেণি ক্ষিপ্ত হয়ে গেছে। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেছেন, ৪৮ বছর পরে রাজাকারদের তালিকা করার কি দরকার? তারা তো বলবেই। কারণ, তাদের আতে ঘা লাগে। কি করে তারা বুঝলেন যে, তাদের দলেই রাজাকার আছে। তারা (বিএনপি) বলছে, ষড়যন্ত্র করে তাদের নাম নাকি লিখে দেয়া হয়েছে। কোনো কিছু হলেই তারা শুধু যড়যন্ত্র দেখে। এটা তাদের মুখস্থ কথা।’
তিনি বলেন, তালিকা সবেমাত্র শুরু হয়েছে। তবে দুঃখের সঙ্গে স্বীকার করছি, আমাদের একটু ভুল হয়ে গেছে। মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের কিছু লোক কিংবা যারা মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন, তাদের নাম রাজাকারদের তালিকায় এসে গেছে। এ ঘটনায় আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি। বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমেও আমি বিষয়টি জানিয়েছি।
মুক্তিযুদ্ধের সময় এ দেশের মানুষের ওপর পাকবাহিনী ও তাদের দোসরদের নির্মম অত্যাচার ও নির্যাতনের বর্ণনা তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, আজ নতুন প্রজন্ম এই ইতিহাস ভুলতে বসেছে। আমাদের বই-পুস্তকেও তা ঠিক মতো উল্লেখ নেই। বারবার আমি দাবি করে এসেছি, মুক্তিযুদ্ধ গৌরবগাঁথা উল্লেখ করলেই চলবে না, পাকবাহিনী ও দোসরদের নির্যাতন ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনা না জানলে নতুন প্রজন্ম তা বিচার-বিশ্লেষণ করতে পারবে না। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে মুক্তিযোদ্ধারা জীবনকে বাজি রেখে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে দেশকে স্বাধীন করে গেছেন।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু শততম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে ১৪ হাজার মুক্তিযোদ্ধাকে বাড়ি করে দেয়া হবে। প্রত্যেকটি বাড়ির জন্য ১৬ লাখ টাকা করে দেয়া হবে। সংশ্লিষ্ট উপজেলার ইউএনও সভাপতি এবং যার নামে বরাদ্দ হবে তিনি সদস্য হবেন। এতে টাকা-পয়সা এদিক-সেদিক হবে না। এ ছাড়া উপজেলা প্রকৌশলী ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে কমিটিতে সদস্য রাখা হবে।
তিনি বলেন, মানিকগঞ্জেও ১৫০ জন মুক্তিযোদ্ধাকে ১৬ লাখ টাকা করে দেয়া হবে। অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধারা এ ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবেন। আগামী ফেব্রুয়ারি মাস থেকে এই প্রকল্প শুরু হবে।
মুক্তিযুদ্ধকালীন জেলা কমান্ডার তোবারক হোসেনের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন শিক্ষা অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলী দেওয়ান হানজালা, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম মহীউদ্দীন, মানিকগঞ্জ পৌরসভার মেয়র গাজী কামরুল হুদা এবং জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি আবদুল মজিদ প্রমুখ।