প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪৩-৬৮ শতাংশ স্কুলে ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি শিক্ষার্থী। প্রাথমিক শিক্ষকরা ইচ্ছামতো স্কুলে যাওয়া-আসা করেন। ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তায় দুর্গম চর, হাওর ও উপকূলীয় ১৩টি উপজেলায় ‘গণতান্ত্রিক সুশাসনে জনসম্পৃক্ত প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণ’ শীর্ষক এক জরিপে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
কুড়িগ্রাম, জামালপুর ও সিরাজগঞ্জের তিনটি উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোয় জরিপ চালানো হয়। এটি বাস্তবায়ন করেছে সিপিডি ও অক্সফাম ইন বাংলাদেশ।
টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) আটটি অভীষ্ট বাস্তবায়নে জনসম্পৃক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর দক্ষতা বৃদ্ধিতে নেওয়া ওই প্রকল্পের আওতায় পরিচালিত জরিপের ফলাফলে বলা হয়, ওই সব এলাকার ৫২-৫৭ শতাংশ স্কুলে মেয়েদের আলাদা ল্যাট্রিন নেই। কোনো বিদ্যালয়ে প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা নেই।
৭১ শতাংশ উত্তরদাতা বলেছেন, শিক্ষকরা প্রাইভেট পড়তে উৎসাহিত করেন। ৬২-৮৫ শতাংশ উত্তরদাতা বলেছেন, শিক্ষার্থীদের প্রাইভেট পড়তে হয়।
জরিপের অংশ হিসেবে চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ ও বরগুনা সদর উপজেলায় স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে তথ্য সংগ্রহ করা হয়। এতে দেখা যায়, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে ও কমিউনিটি ক্লিনিকে নির্দিষ্ট কিছু ওষুধ প্রায়ই থাকে না।
সন্দ্বীপে ৪৫ শতাংশ ও বরগুনায় ৬০ শতাংশ সেবাগ্রহীতা বলেছেন, তারা প্রয়োজনীয় ওষুধ পান না। কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো নির্ধারিত সময়ের চেয়ে কম খোলা থাকে। বরগুনায় চারটি কমিউনিটি ক্লিনিকের তিনটিতেই ওষুধ পেতে পাঁচ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত দিতে হয়।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক রেহমান সোবহান বলেন, ‘টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সরকার সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে। নানা সূচকে উন্নয়ন হয়েছে। তবু পিছিয়ে আছে অনেক জায়গায়।
স্বাস্থ্য, শিক্ষাসহ যে সূচকগুলোতে উন্নয়নের জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, কাজ করা হচ্ছে, সেই সূচকগুলোতে আমাদের অর্জন কতটুকু সেটার একটা সার্বিক মূল্যায়ন হওয়া জরুরি।
এসডিজি অর্জনে যে টাকা খরচ হচ্ছে তার কতটুকু কাজে লাগছে, কতটুকু লিক হচ্ছে বা অন্য লোকের পকেটে চলে যাচ্ছে, ঠিকাদার বা সরকারি কর্মচারীর পকেটে যাচ্ছে সেটা দেখতে হবে। উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য বরাদ্দকৃত টাকা কোথায় যায় তার খবর রাখতে হবে।