জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে পা রেখে সাংবাদিকরা সবার আগে যার খোঁজ করেন তার নাম জাহিদ রেজা বাবু। মাঠের কিউরেটরদের একজন তিনি। ক্রিকেট ম্যাচের উইকেট তৈরিতে থাকে যার প্রত্যক্ষ ভূমিকা।
খেলায় হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হলে কিংবা প্রচুর রান উঠলে খেলোয়াড়দের পাশাপাশি কৃতিত্ব পান কিউরেটররাও। বুধবার বিপিএলের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রানের ম্যাচ হয়েছে সাগরিকার এই মাঠেই। দুই দলের রানের যোগফল ৪২৬।
চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স ২২১ রানের বিশাল সংগ্রহ জমা করলেও ঢাকা প্লাটুনের সঙ্গে তাদের হয়েছে দারুণ প্রতিদ্বন্দিতা। জয়ের আশা জাগিয়েও শেষ পর্যন্ত মাশরাফী বিন মোর্ত্তজার দল ১৬ রানে হারে ম্যাচ।
বিপিএলের ইতিহাসে এই নিয়ে চারবার কোনো ম্যাচে দুই ইনিংস মিলে রান চারশ ছুঁয়েছে। হয়েছে সর্বোচ্চের রেকর্ড। ২০১৩ আসরে এই চট্টগ্রামেই দুরন্ত রাজশাহী ও বরিশাল বার্নাস ম্যাচে হয়েছিল সর্বোচ্চ ৪২২ রান। রাজশাহীর ২১৩ রানের জবাবে বরিশাল করেছিল ২০৯।
রান উৎসবের পর খুশিতে আত্মহারা হওয়ারই কথা ছিল কিউরেটর বাবুর। কিন্তু তার কথায় পাওয়া গেল না উচ্ছ্বাসের রেশ, বরং থাকল আরও কিছু রান না হওয়ার আক্ষেপ।
‘রেকর্ড রানের ম্যাচ’ উল্লেখ করে প্রশংসাবাক্য ছুঁড়ে দিতেই বাবু বলে উঠলেন, ‘এ রান তো মামুলি! উইকেট যেমন ছিল তাতে ২২২ রান চেজ হলেও অবাক হতাম না। আরও রান হতে পারত!’
কিউরেটর বাবু ঠাট্টার ছলেই বলেছেন একথা। তবে এখানকার উইকেটের যে ধরণ তাতে তার ওই কথাটা বাড়াবাড়ি কিছু নয়। এক ইনিংসে দুই সেঞ্চুরি, সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ, সবচেয়ে বেশি রান তাড়ায় জয়, সর্বোচ্চ সেঞ্চুরি-সব রেকর্ডই যে এখানে!
চট্টগ্রামে ম্যাচ রানের জন্য চিন্তা করতে হয় না ব্যাটসম্যানদের। টি-টুয়েন্টির ক্ষেত্রে যা খুবই মানানসই। মিরপুরের শের-ই-বাংলার সঙ্গে জহুর আহমেদ স্টেডিয়ামের উইকেটের পার্থক্য অনেক। মাঠের আয়তনও কিছুটা ছোট, আউটফিল্ডও দ্রুতগতির। শহর থেকে অনেকটা বাইরে সমুদ্রের তীর ঘেঁষে স্টেডিয়ামটির অবস্থান হওয়ায় প্রকৃতিগত দিক থেকে পাওয়া যায় কিছুটা সুবিধা।
মিরপুরে বড় সংগ্রহ তোলা কষ্টসাধ্য হলেও চট্টগ্রামে তেমনটা হয় না। ঢাকায় ৮ ম্যাচের পর বিপিএল চট্টগ্রামে আসতেই দেখা যায় সর্বোচ্চ ১৮৯ রান। সেটি আবার টপকেও যায় প্রতিপক্ষ দল। জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে হওয়া চার ম্যাচে আট ইনিংসে ওঠা রানের গড় ১৭৮.৬! মিরপুরে যা কল্পনাতীত।