ক্যানসারের চিকিৎসা করাতে যাওয়া বাংলাদেশি নাগরিকের কাছ থেকে টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় ভারতের কলকাতা পুলিশের এক সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে দেশটির গোয়েন্দা বিভাগ।
গত ২১ নভেম্বর ভোরে ছিনতাইয়ের ঘটনাটি ঘটেছিল। তবে এ ঘটনায় অভিযোগ দায়ের হয় ১৬ ডিসেম্বর।
গ্রেপ্তার ওই ব্যক্তির নাম বিশ্বনাথ বিশ্বাস। তিনি কলকাতা পুলিশের গাড়িচালক হিসেবে তালতলা থানায় কর্মরত।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার’র প্রতিবেদনে বলা হয়, মোশারফ হোসেন নামের ৪৮ বছর বয়সী ভুক্তভোগী ব্যক্তি গাইবান্ধা জেলার বাসিন্দা। তিনি কোলন ক্যানসারের চিকিৎসা করাতে মুম্বাইয়ে গিয়েছিলেন। ২০ নভেম্বর রাতে তিনি কলকাতায় ফিরে মির্জা গালিব স্ট্রিটের একটি হোটেলে উঠেছিলেন। পরের দিন অর্থাৎ ২১ নভেম্বর ভোরে তার শিয়ালদহ স্টেশন থেকে ট্রেন ধরার কথা ছিল।
কলকাতার পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মা এবং যুগ্ম কমিশনার (অপরাধ) মুরলীধর শর্মাকে ই-মেইলে করে অভিযোগপত্রে ভুক্তভোগী জানান, ওই দিন তার আত্মীয় গোলাম সাকলাইনকে নিয়ে ট্যাক্সিতে শিয়ালদহ যাচ্ছিলেন মোশারফ। মৌলালি মোড়ের কাছে পুলিশের পোশাকে থাকা এক ব্যক্তি তাদের ট্যাক্সি দাঁড় করান। এরপর তাদের পরিচয় জানতে চান।
মোশারফের অভিযোগ, বাংলাদেশি নাগরিক শুনেই ওই পুলিশ সদস্য তাদের পাসপোর্ট এবং সঙ্গে থাকা ২৭ হাজার বাংলাদেশি টাকা কেড়ে নেন। এ সময় ওই পুলিশ সদস্য মোশারফ এবং তার সঙ্গীকে মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তারের ভয় দেখিয়ে, এমনকি প্রাণ নাশেরও হুমকি দেন।
মোশারফ বলেন, ‘অনেক অনুনয়-বিনয় করার পর ওই পুলিশ সদস্য সাত হাজার টাকা ফেরত দিয়ে বাকি ২০ হাজার টাকা নিয়ে নেন।’ ওই দিন ভয়ে কোনো অভিযোগ দায়ের করেননি মোশারফ। পরে ডিসেম্বর মাসের ১৬ তারিখ তিনি ই-মেইলে অভিযোগ জানান।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, অভিযোগ পেয়ে কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের সন্ত্রাস দমন শাখা ওই ঘটনার তদন্ত শুরু করে। মৌলালিতে ওই দিনের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখা হয়। ওই দিন মৌলালি মোড়ে কোন কোন পুলিশ কর্মীর ডিউটি ছিল তারও তালিকা তৈরি করা হয়। সেখান থেকেই চিহ্নিত করা হয় তালতলা থানার পুলিশের গাড়ির চালক বিশ্বনাথকে।
পুলিশ জানায়, বিশ্বনাথ উত্তর ২৪ পরগনার গোপাল নগরের বাসিন্দা। তার বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৮৬ ধারায় ভয় দেখিয়ে টাকা আদায়ের মামলা করে বিভাগীয় তদন্ত শুরু করা হয়েছে। সেই সঙ্গে ওই ঘটনায় আরও কোনো পুলিশ কর্মী যুক্ত কি না খতিয়ে দেখা হচ্ছে।