Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৬ মঙ্গলবার, মে ২০২৫ | ২২ বৈশাখ ১৪৩২ | ঢাকা, ২৫ °সে

ভারতে বিক্ষোভে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২১

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২২ ডিসেম্বর ২০১৯, ০৯:৪১ AM
আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০১৯, ০৯:৪১ AM

bdmorning Image Preview


ভারতের সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে দেশজুড়ে চলমান বিক্ষোভে বিভিন্ন রাজ্যে এ পর্যন্ত ২১ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে গত বৃহস্পতি ও শুক্রবার উত্তরপ্রদেশে বিক্ষোভে পুলিশের গুলি ও সংঘর্ষে ১৫ জন নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসামেও গত সপ্তাহের বিক্ষোভে ছয়জন নিহত হয়েছেন।

গতকাল শনিবার তামিলনাডুর রাজধানী চেন্নাই ও বিহারের উত্তরাঞ্চলীয় শহর পাটনাসহ বিভিন্ন শহরে হাজার হাজার লোক নতুন করে বিক্ষোভে যোগ দিয়েছেন। রাজধানী নয়াদিল্লিতেও সড়কে ব্যাপক জমায়েত দেখা গেছে। ধর্মভিত্তিক এই আইনটি নিয়ে মানুষের মধ্যে হতাশা বাড়ছে। বিক্ষোভ দমাতে কঠোর অবস্থান নিয়েছে পুলিশ। আওরঙ্গবাদ, মহারাষ্ট্রে জারি করা হয়েছে ১৪৪ ধারা। শনিবার থেকে শুরু হয়ে ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত তা বহাল থাকবে।

নাগরিকত্ব সংশোধন আইনের বিরুদ্ধে গতকাল প্রায় এক লাখ মানুষ রাস্তায় বেরিয়ে আসার পর এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বিক্ষোভকারীদের দিকে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে লাঠিচার্জের পরও তারা রাজপথ ছাড়ে নি। আমরোহা, বিজনোর, মুজাফ্ফরনগর, বুলন্দশাহর, হাপুরে পুলিশের বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগও করা হয়েছে। এমন অবস্থায় শনিবার উত্তর প্রদেশ সরকার সব স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করেছে।

এদিকে নাগরিকত্ব আইন এবং নাগরিকপঞ্জীর বিরুদ্ধে আন্দোলনকে যেভাবে পুলিশ দিয়ে দমনের চেষ্টা হচ্ছে তার কঠোর সমালোচনা করে বিবৃতি দিয়েছেন কংগ্রেস সভাপতি সোনিয়া গান্ধী। এর আগে বিরোধী কণ্ঠস্বরকে বন্ধ করার অভিযোগও উঠেছে নরেন্দ্র মোদি সরকারের বিরুদ্ধে। সেই সব উপেক্ষা করেই সরকার টিভি চ্যানেলগুলোতে বিক্ষোভ ও অশান্তির দৃশ্য দেখানোর ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। সমাজে হিংসা তৈরি করতে পারে, এমন দৃশ্য টিভিতে সম্প্রচার করতে নিষেধ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। গত শুক্রবার কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রক একটি নির্দেশিকা জারি করে সমস্ত বেসরকারি টিভি চ্যানেল, ডিটিএইচ অপারেটর এবং কেবল অপারেটরগুলোকে পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছে, এমন কিছু টিভিতে দেখানো যাবে না যাতে সমাজে হিংসা ছড়িয়ে পড়ে।

সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে গত কয়েকদিনের বিক্ষোভে দেশের বিভিন্ন রাজ্য থেকে আটক করা হয়েছে চার হাজারেরও বেশি মানুষকে। শুক্রবার দেশটির রাজধানীসহ বিভিন্ন শহরে ইন্টারনেট বন্ধ রাখার পাশাপাশি জনসমাবেশ নিষিদ্ধ করে পুলিশ। তবে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করেই দেশটির বিভিন্ন রাজ্যে বিক্ষোভ করছেন মানুষ। শনিবার তামিলনাড়ুর রাজধানী চেন্নাই ও বিহারের উত্তরাঞ্চলীয় শহর পাটনাসহ বিভিন্ন শহরে হাজার হাজার লোক নতুন করে বিক্ষোভে যোগ দিয়েছেন। রাজধানী নয়াদিল্লির সড়কেও ব্যাপক জমায়েত দেখা গেছে।

উত্তরপ্রদেশ পুলিশ বলছে, শুক্রবার রাজ্যের মিরাট জেলায় চারজন, ফিরোজাবাদ ও বিনজোরে দুজন করে চারজন, সামভাল, কামপুর, বারানসি ও লক্ষেèৗতে একজন করে নিহত হয়েছেন। এর আগে গত বৃহস্পতিবার সামভাল ও লক্ষেèৗতে একজন করে নিহত হয়েছেন। পুলিশের দাবি, বিক্ষোভে ২৬৩ পুলিশ সদস্যও আহত হয়েছেন।

তবে উত্তরপ্রদেশ পুলিশের মহাপরিচালক ও পি সিং বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে পুলিশের গুলি ছোড়ার ঘটনা অস্বীকার করেছেন। শনিবার মধ্যদিল্লির যন্তরমন্তরে ব্যারিকেড স্থাপন করেছে পুলিশ। এ ছাড়া বিক্ষোভে পুলিশ এলোপাতাড়ি গুলি ও কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করেছে বলে দেশটির গণমাধ্যমে খবর এসেছে। এদিকে আইনটি বাতিলের আগ পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা।

উল্লেখ্য, গত ১১ ডিসেম্বর ভারতের পার্লামেন্টে আইনটি পাস করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকার। এতে প্রতিবেশী বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে অমুসলিম অভিবাসীদের নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। তবে আইনটি থেকে মুসলমান সম্প্রদায়কে বাদ দেওয়া হয়েছে।

Bootstrap Image Preview