পেশার সুবাদে পুলিশের সঙ্গে সাংবাদিকদের ভালো সম্পর্ক থাকে। আবার পেশাদার কাজের ক্ষেত্রে সাংবাদিকদের সঙ্গে পুলিশের ঝামেলাও সৃষ্টি হয়। এবার ভারতের এক সাংবাদিকের দাড়ি তুলে ফেলার হুমকি দিলো দেশটির এক পুলিশ কর্মকর্তা।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভিকে সাক্ষাতকার দিয়েছেন ভুক্তভোগী সাংবাদিক ওমর রশিদ। ভারতের উত্তরপ্রদেশের লখনৌ’র বাসিন্দা ওমর রশিদ দেশটির প্রভাবশালী ইংরেজি দৈনিক দ্য হিন্দুতে কাজ করেন।
শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) লখনৌ শহরে হিংসা ছড়ানোর অভিযোগে তাকে আটক করে রাজ্য পুলিশ।
ওমর রশিদ বলেন, শহরের এক রেস্তোরাঁয় আমি খবর লিখতে ব্যস্ত ছিলাম। আমার সঙ্গে এক বন্ধুও ছিল। ঠিক সে সময় চার-পাঁচজন সাদা পোশাকধারী পুলিশে এসে আমাদেরকে ঘিরে ধরে। আমার বন্ধুকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। ও কে? আমি কে? আরও নানা প্রশ্ন করে বিব্রত করা শুরু করে। ঠিক তারপরই আমার বন্ধুকে তারা গাড়িতে তোলে। আমি নিজের পেশার পরিচয় দিই। সেটা শুনে ওরা আরও ক্ষেপে যায়, আমাকে বলে আপনিও গাড়িতে উঠুন।
তিনি বলেন, থানায় নিয়ে গিয়ে আমাদের ফোনসহ সঙ্গে যা ছিল সব কেড়ে নিয়ে একটা ঘরে আটকে রাখা হয়। আমার বন্ধুকে মারধর শুরু করে পুলিশ। ওকে লখনৌ শহরে হিংসা ছড়ানোর মদদ দেওয়ার ঘটনার সঙ্গে জড়িয়ে নানা প্রশ্ন শুরু করে। আমাকেও একই অভিযোগে জড়ানো হয়। এমনকি আমি নাকি হিংসা ছড়ানোর মূলচক্রী- এমন অভিযোগও তোলে।
তিনি আরও বলেন, কাশ্মীরিদের প্রসঙ্গে প্রশ্ন করেন। ওরা নাকি (কাশ্মীরিরা) এই হিংসার ঘটনায় জড়িত। প্রতিবারই আমি যখন ওদের পাল্টা প্রশ্ন করি; আমাকে গলা উঁচিয়ে ‘‘আপনি চুপ করুন’’ বলে শাসাতে থাকে।
ওমর জানিয়েছেন, অশ্লীল ভাষায় তাকে বলা হয় সাংবাদিকতা অন্য কোথাও দেখাবি। আমরা ওসব দেখতে ও শুনতে আগ্রহী নই। এমনকি তার বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে প্রমাণও আছে, এমন হুমকিও দেওয়া হয়। এরপর তাদেরকে গাড়িতে বসিয়ে সামনের ফাঁড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়।
ওই ফাঁড়িতে আরও এক পুলিশ কর্মকর্তা ছিলেন। তিনি অত্যন্ত সাম্প্রদায়িক শব্দ ব্যবহার করে তাকে গালিগালাজ করে দাড়ি টেনে ছিঁড়ে নেওয়ার হুমকি দেন বলেও অভিযোগ করেছেন ওমর রশিদ। এরপর উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ও পুলিশ কর্মকর্তা ওপি সিং (ডিজিপি)-র অফিস থেকে ফোন পেয়ে ওমরকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
এনডিটিভি ওপি সিংয়ের সঙ্গে কথা বললে, তিনি বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেন।
ওমরের সঙ্গে আইনজীবী মহম্মদ শোয়েব ও সাবেক আইপিএস এসআর দারাপুরিকেও আটক করা হয়। যদিও তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছিল কিনা, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে উত্তরপ্রদেশে পুলিশের সমালোচনা করে ম্যাগসাইসাই পুরস্কারপ্রাপ্ত মানবাধিকার কর্মী সন্দীপ পাণ্ডে বলেন, ‘নিজেদের অকর্মণ্যতা ঢাকতে পুলিশ এসব করছে। ওদের জবাব দিতেই হবে।কোথায় আমাদের সহকর্মীরা ?