চট্টগ্রামে এসে দলের প্রথম ম্যাচেই ৫১ বলে ৯৬ রানের অসাধারণ এক ইনিংস খেলেছিলেন খুলনা টাইগার্সের অধিনায়ক মুশফিকুর রহীম। তার ইনিংসে ভর করেই রাজশাহী রয়্যালসের করা ১৮৯ রান টপকে দুর্দান্ত এক জয় পায় খুলনা। সে ম্যাচ তথা ইনিংসের পর সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেননি মুশফিক। ফলে জানা যায়নি কোনো প্রতিক্রিয়া।
দুই ম্যাচ পর যখন তার দল পেলো প্রথম পরাজয়ের স্বাদ, তখন যেনো দলের পক্ষে চাপ সব নিজের কাঁধে নিতেই সংবাদ সম্মেলনে এলেন মুশফিক। জানালেন ম্যাচে হারের কারণ, নিজের ৯৬ রানের ইনিংসের প্রতিক্রিয়া ও আরো অনেক বিষয়। টানা তিন জয়ের পর না এলেও, হারের পর কী কারণে এসেছেন সংবাদ সম্মেলনে, সে বিষয়ে স্পষ্টই বলেছেন- চাপ মোকাবেলা করতে পছন্দ করেন বলেই এসেছেন তিনি।
তার ভাষ্যে, ‘হ্যাঁ, অবশ্যই, এজন্যই (চাপ মোকাবেলা করতে) আসলে আসা। আমি কালকেই (শুক্রবার) বলে রেখেছিলাম, যদি আল্লাহ না করুক, আমরা তো আর ১১-১২ বা ১৫টা ম্যাচই জিতব না। হয়তো কোনো একটা ম্যাচ হারব। তো বলছিলাম, ওই ম্যাচটাই আমাকে (মিডিয়াতে) ডাইকেন, আমার কোনো সমস্যা নেই। সবাই চেষ্টা করে ভালো করার। আর ভালো করলে তখন প্রশ্নও অনেক বেশি থাকে। খারাপ করলে হয়তো বা প্রশ্নও কয়েকটা কম থাকে। এজন্যই আসা।’
যেহেতু ৯৬ রানের ইনিংসের পর সেঞ্চুনি হাতছাড়া হওয়ার ব্যাপারে তার প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি, তাই স্বাভাবিকভাবেই ওঠে সেই প্রসঙ্গ। মুশফিক বলেন, ‘সেটা (৯৬ রানের ইনিংস) তো কতদিন আগে চলে গেছে। সত্যি বলতে ওটা আমিও ভুলে গেছি (সেঞ্চুরি মিস)। আপনারা আবার মনে করিয়ে দিলেন।’
তবে একই সময় আবার বিশ্লেষণী উত্তর দেন তিনি, ‘সব সময় চেষ্টা থাকে দলের জয়ের অবদানে সবচেয়ে বেশি অবদান যেন আমার থাকে। একজন অধিনায়ক হিসেবে আমি সব সময় চাই সেটা করতে। আর আজকেও... এত বড় রান চেজ করতে টপ অর্ডার থেকে কাউকে বড় কিছু করতে হয়। রাইলি (রুশো) খুব ভালো ব্যাটিং করেছে, কিন্তু ওকে আমরা কোনো সঙ্গ দিতে পারিনি। এ কারণে রান তাড়া তো দূরের কথা, কাছাকাছিও যেতে পারিনি। পরবর্তীতে আবার চেষ্টা করব, আবার যদি সুযোগ আসে বড় ইনিংস খেলে আমার দলকে জেতানোর।’
মুশফিকের সেদিনের ইনিংসের পর তাকে ৩৬০ ডিগ্রি ব্যাটসম্যান বলেন খুলনার কোচ জেমস ফস্টার। কিন্তু নিজেকে এমন মানতে রাজি নন মুশফিক। বরং প্রতিদিনই নিজেকে আরও উন্নত করার লক্ষ্য তার।
তিনি বলেন, ‘দুই ম্যাচও লাগে না কিন্তু ৩৬০ ডিগ্রি থেকে ০ ডিগ্রিতে আসতে! এটা বাংলাদেশ। এটা (ডি ভিলিয়ার্সের মতো ৩৬০ ডিগ্রি ব্যাটসম্যান) আমি কখনোই বিশ্বাস করি না। আমি নিজেকে কখনোই এরকম খেলোয়াড় মনে করি না। আমি সব সময় চিন্তা করি আমার খেলাটা দিনকে দিন কতটা উন্নত করা যায়।’
এদিকে ভালো ব্যাটিং উইকেট বানানোয় চট্টগ্রামের কিউরেটর জাহিদ রেজা বাবুকে তার প্রাপ্য কৃতিত্ব দেন মুশফিক। তিনি বলেন, ‘আমি নির্দিষ্ট করে কৃতিত্ব দিতে চাই, এখানে যিনি কিউরেটর আছে। উইকেটটা এত ভালো যে, আপনি একটু মাথা খাটিয়ে একটু স্মার্ট ব্যাটিং করতে পারলে, আমার মনে হয় আপনি স্বাধীনভাবে শট খেলতে পারবেন। রিস্কও নেয়া যাবে।’