মাত্র ১৬ বলেই পাকিস্তানের কাছে হেরে গেলো শ্রীলঙ্কা!
৭ উইকেটে স্কোরবোর্ডে সংগ্রহ তখন ২১২ রান। ১০২ রান নিয়ে মাঠে নামলেন ওসাদা ফার্নান্দো। সঙ্গে নতুন ব্যাটসম্যান হিসেবে মাঠে নামলেন লাসিথ অ্যাম্বুলদেনিয়া। মাঠে নামতে না নামতেই তরুণ পেসার নাসিম শাহের বলটাকে ব্যাটের কানায় লাগিয়ে উইকেটের পেছনে উইকেটরক্ষকের গ্লাভসে জমা দিলেন এম্বুলদেনিয়া।
পাকিস্তান ক্রিকেটারদের জোরালো আবেদন; কিন্তু সাড়া দেননি আম্পায়ার। আজহার আলি রিভিউ নিলেন এবং দেখা গেলো বল গ্লাভস ছুঁয়ে গেছে। দিনের প্রথম বলেই উইকেট শ্রীলঙ্কার। তখনও দুই উইকেট বাকি ছিল লঙ্কানদের। সবচেয়ে বড় কথা একপাশে ১০২ রান করা ওসাদা ফার্নান্দো আছেন তখনও।
পরের চার বল মোকাবেলা করলেন বিশ্ব ফার্নান্দো। দিনের দ্বিতীয় ওভার করতে এলেন স্পিনার ইয়াসির শাহ। প্রথম চার বল কোনোভাবে ঠেকালেন বিশ্ব ফার্নান্দো। কিন্তু পঞ্চম বলে গিয়ে আর পারলেন না। বলকে ব্যাটের কানায় লাগিয়ে পাঠিয়ে দিলেন প্রথম স্লিপে দাঁড়ানো আসাদ শফিকের হাতে।
মাঠে নামেন লাহিরু কুমারা। ইয়াসির শাহকে মোকাবেলা করলেন তিনি বাকি বল। পরের ওভারে আবারও এলেন নাসিম শাহ। ব্যাটসম্যান বিশ্ব ফার্নান্দো। প্রথম চার বল মোকাবেলা করার পর পঞ্চম বলে গিয়েই পরাস্ত হলেন। এলবিডব্লিউ হয়ে ফিরে গেলেন বিশ্ব।
৫ উইকেট পূরণ হলো তরুণ বোলার নাসিম শাহের। সঙ্গে ৫ম দিন ব্যাট করতে নেমে কোনো রান না করেই, মাত্র ১৬ বলের মধ্যে তিন উইকেট হারিয়ে বসলো শ্রীলঙ্কা। ফলশ্রুতিতে ২৬৩ রানের বিশাল ব্যবধানে পাকিস্তানের কাছে হেরে গেলো দিমুথ করুনারত্নের দল এবং একই সঙ্গে সিরিজ হারলো ১-০ ব্যবধানে।
প্রথম ইনিংসে লিড নিয়েছিল ৮০ রানের। শ্রীলঙ্কা তখন ঘূর্ণাক্ষরেও ভাবতে পারেনি, দ্বিতীয় ইনিংসে তাদের জন্য কি অপেক্ষা করছে। যে দলটি প্রথম ইনিংসে ১৯১ রানে অলআউট হয়ে গিয়েছিল, সেই দলটিই দ্বিতীয় ইনিংসে টপ অর্ডারের চার ব্যাটসম্যানের সেঞ্চুরিতে ৫৫৫ রানে ইনিংস ঘোষণা করে তারা (স্বাগতিক পাকিস্তান)।
কিন্তু জবাব দিতে নেমে পাকিস্তানি বোলারদের সামনে তথৈবচ অবস্থা হয় শ্রীলঙ্কান ব্যাটসম্যানদের। বিশেষ করে তরুণ পেসার নাসিম শাহ একাই কোমর ভেঙে দেন লঙ্কান ব্যাটিং লাইনআপের। ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মত তিনি নিলেন এক ইনিংসে ৫ উইকেট। শুধু তাই নয়, এই টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেট নিয়ে ক্যারিয়ারে প্রথম ফাইফারের গৌরব অর্জন করেন শাহিন আফ্রিদি।
তবে ম্যাচ সেরার পুরস্কার নাসিম শাহ কিংবা শাহিন আফ্রিদির হাতে ওঠেনি। উঠেছে, আবিদ আলির হাতে। দ্বিতীয় ইনিংসে তিনি করেছিলেন ১৭৪ রান।
পঞ্চম দিন পাকিস্তানের জয় দেখতে সকালেই হাজার হাজার দর্শক এসে উপস্থিত হয় করাচি ন্যাশনাল স্টেডিয়ামে। পুরো গ্যালারি ভরে গিয়েছিল। কিন্তু মাত্র ১৬ বলেই জয় নিয়ে তারা ঘরে ফিরবে, তা হয়তো কেউ ভাবেইনি। সংক্ষিপ্ততম সময়ের জন্য হলেও, জয়ের তৃপ্তি নিয়েই তো তারা মাঠ থেকে ফিরতে পেরেছেন! এটাই বা কম কিসে?