ভারতে চলমান নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন এবং এনআরসি বিরোধী আন্দোলনেক সমর্থন দিয়ে খ্যাতিমান কবি জয় গোস্বামী এবার মুখ খুললেন। এর আগেও একাধিকবার প্রতিবাদে সামিল হতে দেখা গিয়েছে তাকে। ২০০৩ সালে গুজরাট হত্যার পর তিনি হাতে কলম তুলে নিয়েছিলেন।
পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে নন্দীগ্রাম জমি আন্দোলনের সময়ও থেমে তার কলম চলেছে সমানতালে। তার কবিতার লাইন হয়ে ওঠে প্রতিবাদের ভাষা, ‘আজও না-যদি ঝাঁপিয়ে পড়তে পারি/ আমার সমস্ত শিল্প আজ থেকে গণহত্যাকারী!’
এবার হিন্দুত্বাদের জিকির তুলে ভারতের নাগরিকত্ব আইন সংশোধন করার প্রতিবাদে যখন দেশটির নাগরিকরা প্রাণ দিচ্ছে, তখন জয় গোস্বামী বললেন, ‘কিছুদিন আগেই জামিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকে পুলিশ লাঠিচার্জ করেছে। পড়ুয়াদের নিগ্রহ করেছে। এমন ঘটনা সারা ভারতে নানা জায়গায় ঘটছে। যা অত্যন্ত নিন্দাজনক। আমার লজ্জা হয় এ কথা ভাবতে যে, আমি একটা হিন্দু রাষ্ট্রে বাস করি। এই রাষ্ট্র কেবল হিন্দুদের নয়। সমস্ত ধর্মের মানুষের সমন্বয় এই রাষ্ট্রের মধ্যে হয়েছে।’
কবি আরও বলেছেন, ‘এখন যে সিএএ এবং এনআরসি চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে তা সম্পূর্ণ ভাবে গণতন্ত্র বিরোধী। সম্পূর্ণ ভাবে স্বেচ্ছাচারী, সংবিধান লঙ্ঘনকারী একটি সিদ্ধান্ত। বিজেপি পরিচালিত যে সরকার তার যে প্রধানমন্ত্রী তিনি আজ থেকে ১৭ বছর আগে গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। সেই গুজরাটে ২০০৩ সালে যেভাবে নরহত্যালীলা চলেছিল এবং ধর্ষণলীলা চলেছিল তা আমরা জানি। তখন গুজরাটের দায়িত্বে ছিলেন আজকের প্রধানমন্ত্রী।’
পশ্চিমবঙ্গের মূখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীর সঙ্গে জয় গোস্বামীর সুসম্পর্কের কথা সকলেরই জানা। তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতায় আসার আগেই মমতার সঙ্গে নানা আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন জয়। পরে সরকারে এলে নজরুল একাডেমির সভাপতি করা হয় কবি জয় গোস্বামীকে।
এছাড়া বাংলা একাডেমির আজীবনের সদ্য তিনি। পশ্চিমবঙ্গ সরকার তাকে ‘বঙ্গবিভূষণ’ পুরস্কারে ভূষিত করেছে। সিএএ এবং এনআরসি প্রসঙ্গে জয় বলেন, মমতার জন্যই এখনও আশা আছে।
জয়ের কথায়, ‘আমাদের একটা আশা আছে পশ্চিমবঙ্গে, কারণ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আছেন। তিনি যেভাবে মাঠে নেমে কাজ প্রতিবাদ করছেন, আন্দোলন করছেন। আমার বিশ্বাস এর একটি শুভ পরিণতি হবে। আমরা যারা বাংলায় বাস করি, আমাদের কাছে প্রধান আস্থা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আমিও তার প্রতিবাদ সভায় গিয়েছিলাম।’