Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৫ সোমবার, মে ২০২৫ | ২২ বৈশাখ ১৪৩২ | ঢাকা, ২৫ °সে

বিক্ষোভে অংশ নেয়ায় জার্মান ছাত্রকে ফেরত পাঠাল ভারত সরকার

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৪ ডিসেম্বর ২০১৯, ০৯:২৬ PM
আপডেট: ২৪ ডিসেম্বর ২০১৯, ০৯:২৬ PM

bdmorning Image Preview


বিতর্কিত নাগরিকত্ব বিলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছিলেন। স্লোগানে বলেছিলেন গণতন্ত্রের কথা। এই অপরাধে জার্মান ছাত্রকে দেশে ফিরিয়ে দিল ভারতের অভিবাসন দফতর। এ নিয়ে ফের প্রতিবাদ শুরু হয়েছে দেশজুড়ে।

জেকব লিনডেনথাল নামক ওই জার্মান ছাত্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ, সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) এবং জাতীয় নাগরিকপঞ্জির (এনআরসি) বিরুদ্ধে বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিলেন তিনি। খবর ডয়চে ভেলে ও আনন্দবাজার পত্রিকার।

জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে পুলিশি তাণ্ডবের প্রতিবাদে জেকব রাস্তায় নেমেছেন প্ল্যাকার্ড হাতে। যাতে লেখা ছিল, ‘ভারতের সংবিধান ধর্মনিরপেক্ষ। সেই ধর্মনিরপেক্ষতা যদি বজায় না রাখা হয়, তাহলে কী হতে পারে আমি জানি। কারণ আমি জার্মান।’

এই অপরাধের জেরেই রাতারাতি চেন্নাই আইআইটি থেকে পত্রপাঠ জার্মানি ফিরে যেতে হল ২৪ বছরের জেকব লিনডেনথালকে।

এক বছরের এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রামের অংশ হিসেবে ভারতে এসেছিলেন জেকব। মাদ্রাজ আইআইটির পদার্থবিদ্যার স্নাতকোত্তরে এই ছাত্র গত ১৬ ডিসেম্বর মাদ্রাজ আইআইটি ক্যাম্পাসের তার সহপাঠীদের সঙ্গে সিএএ এবং এনআরসি বিরোধী কর্মসূচিতে অংশ নেন। ওই বিক্ষোভে ২৪ বছরের জেকবের হাতে দেখা যায় নাৎসি জার্মানির সঙ্গে তুলনা টানা প্ল্যাকার্ড ‘১৯৩৩-১৯৪৫ উই হ্যাভ বিন দেয়ার’।

আইআইটির প্রতিটি মিছিলেই হাতে পোস্টার নিয়ে দেখা গিয়েছে জেকবকে। এরই জেরে সোমবার তাকে ডেকে পাঠায় ভারতের অভিবাসন দফতর। বলা হয় তার রেসিডেন্ট পারমিটে সমস্যা আছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেকবের এক বন্ধু জানান, জেকবের কাছে তিনি শুনেছেন, অভিবাসন দফতরে যাওয়ার পরে জেকবকে প্রশ্ন করা হয় সিএএ বিরোধী মিছিল নিয়ে। একটি কাগজ দিয়ে তাকে বলা হয়, মিছিল করার জন্য ক্ষমা চাইতে হবে। কিন্তু জেকব আপত্তি জানান।

এরপরই অভিবাসন দফতরের অফিসাররা জানিয়ে দেন, জার্মান ছাত্র ভিসার নিয়ম ভেঙেছেন। ফলে যত দ্রুত সম্ভব তাকে দেশ ছেড়ে যেতে হবে।

এ ঘটনার পর জেকব নিজেই তার টিকিট কাটেন এবং মঙ্গলবার সকালে দেশের উদ্দেশে রওনা হন। যাওয়ার আগে বন্ধুদের জন্য একটি মেসেজ রেখে যান তিনি। যাতে লেখা আছে- ‘আমি বিমানবন্দরে। চললাম। আর ফিরব না। এটাই অভিবাসন দফতরের সিদ্ধান্ত।’

জেকবের ঘটনায় ভারতে ফের প্রতিবাদের ঢেউ উঠেছে। প্রশ্ন উঠেছে, গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে কোনও বিদেশি যদি প্রতিবাদে অংশ নেন, তাহলে কি অভিবাসন দফতর আদৌ এ কাজ করতে পারে?

বিশেষজ্ঞদের একাংশের বক্তব্য, ভিসার নিয়ম অনুযায়ী, অভিবাসন দফতর যে কোনও সময় কারও ভিসা বাতিল করতে পারে। দেখতে হবে জেকবের ভিসায় কী কী বিধিনিষেধ ছিল।

জেকবের বন্ধুদের দাবি, তার ভিসায় লেখা ছিল, এ দেশে কোনও কাজ তিনি করতে পারবেন না। কিন্তু প্রতিবাদ করতে পারবেন না, এমন কিছু সেখানে লেখা ছিল না। পৃথিবীর বহু দেশেই বিদেশি ছাত্ররা বহু কারণে প্রতিবাদে সামিল হন। তার জন্য তাদের বাধা দেয়া হয় না। জেকবের ঘটনা ফের প্রমাণ করল, ভারতে গণতন্ত্র তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে।

Bootstrap Image Preview