শিক্ষার্থীদের ঘেরাও-বিক্ষোভের মুখে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকতে পারলেন না পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল তথা আচার্য জগদীপ ধনখড়। তৃণমূল কংগ্রেস সমর্থিত শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের দ্বারা দেড় ঘণ্টা অবরুদ্ধ থাকার পর তিনি ক্যাম্পাস ছাড়তে বাধ্য হন। তারপর আচার্যের চেয়ার ফাঁকা রেখেই শুরু হয় বিশ্ববিদ্যালয়টির সমাবর্তন অনুষ্ঠান।
আনন্দবাজার পত্রিকার খবরে বলা হয়, বেশ কিছুক্ষণ বিক্ষোভের পর গাড়ি থেকে নেমে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন রাজ্যপাল। তিনি রাজ্যে ক্ষমতাসীন তৃণমূল সরকারের উদ্দেশে বলেন, ‘রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভেঙে পড়েছে। রাজ্যপাল ও বিশ্ববিদ্যালেয়র আচার্য হিসেবে এটা আমার কাছে অত্যন্ত বেদনাদায়ক মুহূর্ত। আমি মর্মাহত।’
রাজ্যপাল ক্যাম্পাসে ঢুকতে চাইলে তার গাড়ি ঘিরে রেখে বিক্ষোভ করে শিক্ষার্থীরা। কালো পতাকা হাতে ‘গো ব্যাক’ (ফিরে যান) স্লোগান দিতে শুরু করে। বিক্ষোভকারীদের একাংশ রাজ্যপালকে বয়কটেরও সিদ্ধান্ত নেন।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে রাজ্যপাল বলেন, ‘পরিকল্পিতভাবে এই পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছে। দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। এটা পুরোপুরি প্রশাসনিক ব্যর্থতা। রাজ্য সরকার শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে রাজনীতি করছে। এতে শিক্ষার্থীদেরই ক্ষতি হচ্ছে। রাজ্য সরকার ও মুখ্যমন্ত্রীকে অনুরোধ করব, এটা না করতে।’
ছাত্রদের একাংশের রাজ্যপালকে বয়কট অন্যদিকে রাজ্যপাল অবরুদ্ধ থাকায় সমাবর্তন অনুষ্ঠান নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যপালকে ছাড়াই সমাবর্তন করা যায় কি না তা নিয়ে আলোচনা করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুরঞ্জন দাস বিভিন্ন পদে আসীন শিক্ষকদের নিয়ে বৈঠকে বসেন।
তবে রাজ্যপাল ও আচার্য জগদীপ ধনখড় স্পষ্ট জানিয়ে দেন, ‘আচার্য ছাড়া কোনোভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবর্তন অনুষ্ঠানের অনুমোদন দেব না আমি। সাংবিধানিক প্রধান হিসেবে এটা আমি কিছুতেই মেনে নিতে পারি না। আমি কোনোভাবেই নীরব দর্শক হয়ে থাকব না।’
শিক্ষার্থীদের সিএএ-এনআরসি বিরোধী স্লোগান নিয়ে রাজ্যপাল বলেন, ‘সংসদে পাশ হওয়া আইন সবাই মেনে চলতে বাধ্য।’
বিক্ষোভকারীরা বলেন, তারা কিছুতেই রাজ্যপালকে ভেতরে যেতে দেবেন না।
পুর্বের ইতিহাস উল্লেখ করে তারা আরও বলেন, এর আগেও আচার্যকে ছাড়াই বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবর্তন অনুষ্ঠান হয়েছে। এবারও তাই হোক।