বৈশ্বিক ইন্টারনেট থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে নিজেদের তৈরি ওয়েব ভার্সন ‘রুনেটে’র পরীক্ষামূলক সংযোগ ‘সফল’ হয়েছে বলে জানিয়েছে রাশিয়ান সরকার।
ডিজিটাল নেটওয়ার্ক সিস্টেমে হাজার হাজার ক্রম বা শ্রেণি আছে। এসব নেটওয়ার্ক রাউটার-পয়েন্টের সঙ্গে যুক্ত থাকে। চেইনে এগুলোই হলো সবচেয়ে দুর্বল লিংক। রাশিয়া ওই রাউটার পয়েন্টগুলো নিয়ন্ত্রণ করছে। যার মধ্য দিয়ে দেশ-বিদেশে ডেটা আদান-প্রদান হয়।
দেশটির যোগাযোগ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, নিজেদের ইন্টারনেটে সাধারণ ব্যবহারকারীরা কোনো সমস্যায় পড়েননি। এখন ফলাফল প্রেসিডেন্ট পুতিনের কাছে পাঠানো হবে।
পৃথিবীর ইন্টারনেট ব্যবস্থার মূলত কোনো কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান নেই। নেটওয়ার্ক সচল রাখতে একটি দেশকে তার নিজের যন্ত্রপাতির ওপর যেমন নির্ভর করতে হয়, তেমনি বিদেশিদের দিকেও তাকিয়ে থাকতে হয়।
সম্মিলিত এই প্রক্রিয়া সাগরতলের কেবল কিংবা স্যাটেলাইট দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। যেখানে থাকে না কোনো সীমান্ত। অনলাইনের কল্যাণে পৃথিবীটা হয়ে যায় উন্মুক্ত।
কয়েক মাস আগে কঙ্গো তাদের নির্বাচনের সময় ইন্টারনেট বন্ধ করে দিয়েছিল। এখন রাশিয়াও এমনটি করছে। কিন্তু তাদের পরিকল্পনা আরও বড়।
নিজস্ব ইন্টারনেট ব্যবস্থার জন্য কঙ্গোর কোনো অবকাঠামো নেই। রাশিয়া কয়েক বছর ধরে হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয় করে সেই কাঠামো গড়েছে। একটি রাষ্ট্রের জন্য এটি কঠিনতম ঝুঁকির কাজ।
এ পলিসির কারণে রাশিয়ার সব ডোমেইন নেম সিস্টেম (ডিএনএস) সরকার নিয়ন্ত্রিত প্রক্সি ডোমেইন নেম সিস্টেমে (ডিএনএস) যেতে বাধ্য হচ্ছে। অর্থাৎ সাধারণ আইএসপি দিয়ে সচল থাকা একটি ডিএনএস সার্ভার যুক্ত হয়েছে সরকারের ডিএনএস সার্ভারে ।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন তার এই পরিকল্পনাকে ইন্টারনেট ‘বিপ্লব’ বললেও পশ্চিমা বিশ্লেষকেরা বলছেন, ‘গণতন্ত্রকে রুদ্ধ’ করার ‘ভয়ংকর’ খেলা।
সারে বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞানী অধ্যাপক অ্যালান উডওয়ার্ড বিবিসিকে বলেন, ‘এর মানে হল রাশিয়ার মানুষ আর নিজের সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলতে পারবেন না। ইন্টারনেটে তাদের সব কিছু সরকার নিয়ন্ত্রণ করবে।’