খেলা হচ্ছে ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে। ভর শীতকাল। শিশির পড়ছে প্রচুর। সঙ্গে কুয়াশাও আছে। সব মিলে একটা আদর্শ সিমিং কন্ডিশন। তার ওপর উইকেট আগের যে কোনো আসরের তুলনায় স্পোর্টিং। পিচে বল পড়ে স্লথ হয়ে নয়, বল ব্যাটে আসছে ভালো গতিতে। বাউন্সেও আছে স্থিতি। আর টার্ন নেই বললেই চলে। কাজেই স্পিনারদের ভালো করা, প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যানদের ওপর জেঁকে বসা এবং ম্যাচ ভাগ্য গড়ে দেয়া-সবই কঠিন হয়ে পড়েছে।
আর তাই এবারের বিপিএলে এখন পর্যন্ত স্পিনারদের তেমন কোন ভূমিকা নেই। সে অর্থে ব্যাটসম্যানদের পাশাপাশি ছড়ি ঘোরাচ্ছেন পেসাররা। স্পিনাররা ‘ঠটু জগন্নাথ’ হয়ে আছেন।
নিষেধাজ্ঞার কারণে সাকিব আল হাসান নেই এবারের বিপিএলে। কিন্তু মেহেদি হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম, সানজামুল ইসলাম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, আরাফাত সানি, নাসির হোসেন, আফিফ হোসেন ধ্রুব, আমিনুল ইসলাম বিপ্লব আর মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের কেউই এখন পর্যন্ত এক ম্যাচেও বল হাতে ভাগ্য নির্ধারণী ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে পারেননি।
উইকেট শিকারে প্রথম ১৫ জনে নেই কোন বাংলাদেশি স্পিনার। ঢাকার অফস্পিনার মেহেদি হাসান ৬ ম্যাচে ৫ উইকেট শিকার করে স্থানীয় স্পিনারদের মধ্যে সবার ওপরে অবস্থান করছেন।
অন্যদিকে অফস্পিনার মেহেদি হাসান মিরাজ (৫ ম্যাচের ৪টিতে ৮ ওভার বল করে উইকেট নেই), বাঁহাতি তাইজুল (৩ ম্যাচে ১ উইকেট), সানজামুল হক নয়ন (৩ ম্যাচে ৩ উইকেট), নাসুম আহমেদ ( ৬ ম্যাচে ২ উইকেট), এনামুল হক জুনিয়র ( ১ ম্যাচে উইকেটশূন্য), আরাফাত সানিরাও (তিন ম্যাচে উইকেটশূন্য) নিজেদের খুঁজে পাচ্ছেন না।
বাকি অফস্পিনারদের মধ্যে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ (৩ ম্যাচের একটিতে বোলিং করে ১ উইকেট), নাসির হোসেন (৬ ম্যাচে ২ উইকেট), আফিফ হোসেন (৫ ম্যাচে ৩ উইকেট), মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত (৬ ম্যাচের ৪টিতে ৮ ওভার বোলিং করে ৩ উইকেট), সঞ্জিত সাহা (২ ম্যাচে ৩ উইকেট) আর লেগস্পিনার আমিনুল ইসলাম বিপ্লবও (২ ম্যাচে ১ উইকেট) হালে পানি পাচ্ছেন না।
শুধু স্থানীয় স্পিনারদের কথা বলা কেন? শহীদ আফ্রিদীর মত বিশ্বমানের লেগস্পিনারকেও উইকেট পেতে কাঠখড় পোড়াতে হচ্ছে। তার বল ঘুরছে না। কোন জারিজুরিই কাজ হচ্ছে না এ পাকিস্তানি স্পিনারের। যেখানে প্রতি ম্যাচে হাত ঘুরালেই জমা পড়েছে গড়পড়তা দুটি করে উইকেট, সেই আফ্রিদি এবার এখন পর্যন্ত ৫ ম্যাচে ১৬ ওভার বল করে পেয়েছেন মোটে ২ উইকেট।
আরেক বিদেশি আফগান অফস্পিনার মোহাম্মদ নবীর অবস্থাও খুব ভালো বলা যাবে না। ৫ ম্যাচে নিয়েছেন ৪ উইকেট।