ফেসবুক প্রোফাইলে নিজের নাম রেখেছিলেন স্নিগ্ধা চট্টোপাধ্যায়। সঙ্গে চনমনে এক সুন্দরীর ছবি। ফলে বন্ধু পেতে একটুও অসুবিধা হয়নি তার। প্রতিদিন প্রচুর ছেলে তাকে ফ্রেন্ড রিক্যুয়েস্ট পাঠাত। তাদের কাছে নিজেকে বিমানবন্দরের কর্মরতা বলে পরিচয় দিতেন তিনি। মূলত বেকার যুবক-যুবতীরাই টার্গেট ছিলো তার। এভাবে গত কয়েক মাসে মোট ১২ জনকে ঠকিয়েছেন তিনি। তবে প্রকৃত সংখ্যা আরো বেশি হবে বলে ধারণা পুলিশের।
স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম আনন্দবাজার বলছে, তিনি আসলে কোনো নারী নয়। পঁয়ত্রিশ বছর বয়সী এক যুবক, নাম অভিজিৎ বেরা। দমদম থানার পুলিশ জানিয়েছে, চাকরি দেওয়ার নাম করে সেখানকার কয়েক জনের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন তিনি। এ ঘটনায় বুধবার রাতে ওই প্রতারককে মারধর করে পুলিশের হাতে তুলে দেন কয়েক জন যুবক।
স্থানীয় পুলিশ সূত্রে জানা যায়, অভিজিতের বাড়ি দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসন্তী থানার মঠগ্রামে। সুমন পটেল নামে দমদম সুকান্তপল্লির এক যুবক অভিজিতের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। অন্য কোনও থানায় তার বিরুদ্ধে এমন প্রতারণার অভিযোগ দায়ের হয়েছে কি না, সেটি খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
পরিচয় গোপন রাখতে অভিজিৎ মূলত বিভিন্ন ইউপিআই ওয়ালেটে টাকা নিতেন। পুলিশ জানায়, ফেসবুকে বন্ধুত্ব হওয়ার পরই বেকার যুবকদের কাছে চাকরি দেয়ার নাম করে থেকে মোটা টাকা দাবি করতেন অভিজিৎ। কেবল কাগজ তৈরির কথা বলে ১০ হাজার টাকা করে নিতেন ওই প্রতারক। পরে তার পাঠানো নিয়োগপত্র নিয়ে চাকরিতে যোগ দিতে গেলে জানা যায় পুরোটাই ভাওতাবাজি।
এরপর টাকা খোয়ানো যুবকেরা তাকে ধরার জন্য পাল্টা ফাঁদ পাতেন। এলাকার কয়েক জন তরুণী চাকরির জন্য তাকে টাকা দিতে চায় বলে মেসেঞ্জারে অভিজিৎকে জানান তারা। প্রথমে তিনি আসতে রাজি হননি। মোটা টাকার গন্ধ পেয়ে লোভ সামলাতে পারলেন না। পরে স্নিগ্ধার ভাই সেজে বুধবার রাতে দমদমে আসেন অভিজিৎ নিজে। তখন তাকে ধরে ভালোমতো উত্তম মাধ্যম দেন ওই যুবকেরা। এত মার খাওয়ার পরও নিজের পরিচয় ফাঁস করেননি অভিজিৎ। মারধরের পর যুবকেরা তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। পরে পুলিশি জেরায় নিজের আসল পরিচয় প্রকাশ করেন অভিজিৎ।
চাকরির আশায় অভিজিৎকে টাকা দিয়েছেন কমপক্ষে এমন ১২ জনের সন্ধান পেয়েছে পুলিশ।