বৈষম্যের শিকার হয়ে ভারতের তামিলনাড়ুর ‘তামিল পুলিগাল কাতচি’ নামক দলিত সম্প্রদায়ের ৩ হাজার মানুষ ইসলাম ধর্মগ্রহণ করার ঘোষণা দিয়েছেন। সম্প্রতি এক ঘোষণায় তারা জানিয়েছেন, আগামী ৫ জানুয়ারি বর্ণ বৈষম্যের প্রতিবাদে তারা ইসলাম ধর্মগ্রহণ করার ঘোষণা দিয়েছেন।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে জানায়, চলতি মাসের শুরুর দিকে তামিলনাড়ুর কোয়েম্বাটোর জেলার মেট্টুপাল্যাম এলাকায় অতিবৃষ্টিতে মর্মান্তিক প্রাচীর ধসের ঘটনা ঘটে। ২০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ২ ফুট প্রস্থের সে প্রাচীর ধসে দলিত সম্প্রদায়টির ১১ নারী ও ৩ শিশুসহ ১৭ জন নিহত হন।
ধনাঢ্য ও প্রভাবশালী ওই ব্যক্তি দলিত সম্প্রদায়ের লোকজন যাতে তার জমিতে প্রবেশ না করতে পারেন সে জন্যই এ প্রাচীর তৈরি করেন বলে দলিতরা অভিযোগ করেন। এ ঘটনাকে তারা পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড বলে দাবি করেন।
এরপর ওই ব্যক্তিকে দায়িত্বে অবহেলোর অভিযোগে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৪ ধারায় গ্রেপ্তার করে জেলে পাঠানো হয়। পরে তিনি জামিনে মুক্তি পেয়ে যান।
দায়ী ব্যক্তির বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ না তোলায় এবং জামিন দেওয়ায় আন্দোলন গড়ে তোলে ‘তামিল পুলিগাল কাতচি’ সম্প্রদায়। আন্দোলন থেকে এ দলিত সংগঠনটির সভাপতি নাগাই তিরুভল্লুয়ানকে গ্রেপ্তার করা হয়, যিনি এখনো জেলে রয়েছেন। তার জামিন আবেদন করা হলেও তা মঞ্জুর করেননি আদালত।এ ঘটনায় আরও বেশি ক্ষোভ সৃষ্টি হয় তাদের মনে।
তালিম পুলিগাল কাতচির সাধারণ সম্পাদক এম ইলাভেনিল বলেন, ‘আমরা দশকের পর দশক ধরে বৈষম্যের শিকার। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, অনেক হয়েছে আর নয়। আমরা এবার ধর্ম পরিবর্তন করব। প্রাচীর ধস সেই সুযোগ করে দিয়েছে। আমরা এখন বলতে পারব, আমরা কেন এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘একটি ধর্ম যদি আমাদের জীবনের মূল্যই না দিতে পারল, তাহলে আমরা কেন নিজেদের শুধু শুধু বিসর্জন দিয়ে যাব।’
রনজিত নামের ‘তামিল পুলিগাল কাতচ’ এক সদস্য বলেন, ‘ধাপে ধাপে আমাদের তিন হাজার সদস্য ইসলাম গ্রহণ করবেন। ৫ জানুয়ারি প্রথমদিন ২০০ জন ধর্ম পরিবর্তন করেবেন। পরবর্তীতে এ প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে। আমাদের প্রায় তিন হাজার সদস্য মুসলমান হতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।