Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২০ মঙ্গলবার, মে ২০২৫ | ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ | ঢাকা, ২৫ °সে

রেকর্ড হয়নি নুরের মামলা, ছাত্রলীগ নেতা সাব্বিরের মামলার তদন্তের নির্দেশ

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৮ ডিসেম্বর ২০১৯, ০৫:১১ PM
আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০১৯, ০৫:১১ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদে হামলার ঘটনায় ভিপি নুরের অভিযোগ মামলা হিসেবে রেকর্ড হয়নি। উল্টো করা মামলার তদন্তের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। নুরদের বিরুদ্ধে নুরের লিখিত অভিযোগটি আদৌ মামলা হিসেবে রেকর্ড হবে কিনা এ নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের নেতাকর্মীদের মধ্যে। অপরদিকে নুরসহ ২৯ জনের বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় দায়েরকৃত মামলায় হত্যাচেষ্টা ও চুরির অভিযোগ আনা হয়েছে।

মামলার বাদী ডিএম সাব্বির হোসেন, তিনি সার্জেন্ট জহরুল হক হল ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি। ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়ের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।

তার আগে ডাকসু ভবনে হামলার ঘটনায় ছাত্রলীগের ৩৭ নেতাকর্মীকে আসামি করে এজাহার জমা দিলেও তা মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়নি। পুলিশ জানিয়েছে, ডাকসু ভবনে ভিপি নুর ও তার সহযোগীদের ওপর হামলার ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করেছে।

একই ঘটনায় একটি পক্ষের একাধিক মামলা নেয়ার নিয়ম নেই বলে জানিয়েছে পুলিশ। সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের নেতাকর্মীরা জানান, ডাকসু ভবনে গুরুতর আহত তুহিন ফারাবিকেও আসামি করা হয়েছে। হামলার পর গুরুতর আহত ফারাবি লাইফ সাপোর্টে ছিলেন। এখনও তিনি মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন।

সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের নেতাকর্মীরা জানান, তাদের বিরুদ্ধে মামলা রেকর্ড করে পক্ষপাতমূলক আচরণ করা হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ তথা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা হামলা করেছে। আবার তারাই মামলা করেছে। পুরো বিষয়ে প্রশাসনের অবস্থান স্পষ্ট বলে মন্তব্য করেন তারা। এ বিষয়ে ডাকসু’র সমাজসেবা সম্পাদক এবং বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের নেতা আকতার হোসেন বলেন, সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে আমাদের আহত করা হলো। আমরা মামলা করতে গেলাম। কিন্তু আমাদের মামলা পুলিশ রেকর্ড করলো না। অথচ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের মামলা নেয়া হলো। পুলিশের নিরপেক্ষতা নিয়ে এখন সবার মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসান জানান, ভিপি নুর ও তার সহযোগীদের ওপর হামলার ঘটনায় পুলিশ বাদি হয়ে মামলা করেছে। এ ঘটনায় তিন জনকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। এই ঘটনায় এই পক্ষের আরেকটি অভিযোগ আলাদা মামলা হিসেবে রেকর্ড করার নিয়ম নেই। এটি জিডি হিসেবে রেকর্ড করা হয়েছে। পরবর্তীতে পুলিশ বাদী হয়ে দায়ের করা মামলার সঙ্গে সম্পূরক করা হবে বলে জানান তিনি।

এদিকে, পুলিশের দায়েরকৃত মামলা নিয়েও প্রশ্ন তোলেছেন সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের নেতাকর্মীরা। তারা অভিযোগ করেছেন, পুলিশ হামলাকারীদের অনেককে বাদ দিয়ে শুধু মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের আট নেতার বিরুদ্ধে মামলা করেছে। অথচ হামলায় মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ ছাড়াও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা অংশ নিয়েছিলো। নিরপেক্ষতা প্রমাণ করতে চাইলে নুরের অভিযোগটি মামলা হিসেবে নিয়ে আসামিদের গ্রেপ্তার করতে হবে বলে মন্তব্য করেন তারা।

এ বিষয়ে সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী তাসলিমা ইয়াসমিন বলেন, উচ্চ আদালতের সিদ্ধান্ত রয়েছে অভিন্ন ঘটনায় একটি এজাহার দায়েরের পরবর্তী সময়ে যদি একই বিষয়ে আরও অভিযোগ পাওয়া যায়, তা হলে ওই অভিযোগ ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬১ ধারার বিধান অনুসারে মূল মামলার এজাহারের অংশ হিসেবে গণ্য হবে। এ বিষয়ে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা যাবে।

পাল্টা মামলা প্রসঙ্গে তিনি জানান, সেটা হতে পারে। এক্ষেত্রেও ঘটনার সত্যতা তদন্ত সাপেক্ষ পুলিশ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে জানান তিনি। ছাত্রলীগ নেতা ডিএম সাব্বির বাদি হয়ে গত বুধবার রাতে দায়েরকৃত মামলাটি পরদিন বৃহস্পতিবার আদালতে পাঠানো হয়েছে। আদালত এ বিষয়ে থানা পুলিশকে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।

উল্লেখ্য, ২২শে ডিসেম্বর দুপুর পৌনে ১টার দিকে ডাকসু ভবনের মূল ফটক বন্ধ করে ঢাকা ডাকসু’র সহ-সভাপতি নুরুল হক নুর ও তার অনুসারীদের ওপর হামলা চালায় মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের একাংশের নেতাকর্মীরা। এছাড়া বাইরে থেকেও মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের নেতাকর্মীরা ইট-পাটকেল ছুড়েছেন। এসময় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। এই হামলার পর ডাকসু ভবনের সিসি টিভির ফুটেজগুলো গায়েব হয়ে যায়।

Bootstrap Image Preview