ইরাকে বাংলাদেশিরা বাগদাদ বিমান বন্দরে হামলা বাগদাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলায় ইরানি জেনারেল কাসেম সোলাইমানি হত্যার পর থেকে ইরাকে আতঙ্ক বিরাজ করছে জনসাধারণের মধ্যে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যকার টানা উত্তেজনায় ইরাকের রাজধানী বাগদাদসহ গোটা দেশেই এখন পাল্টাপাল্টি হামলা আর বোমা আতঙ্ক।
এমতাবস্থায় দেশটির ১৮টি প্রদেশে ছড়িয়ে থাকা ২ লক্ষাধিক বাংলাদেশি চরম আতঙ্কে সময় পার করছেন। হামলায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কায় ঘরে থেকে রেব হচ্ছেন না তারা।
জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাসস্থান এবং কর্মস্থল থেকে তাদের বের হতে নিষেধ করেছে বাগদাদস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস। দূতাবাসের তরফে এ সংক্রান্ত সতর্ক-বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে।
গতকাল ৩ জানুয়ারি, শুক্রবার এক বিবৃতিতে এ অনুরোধ জানান বাগদাদে অবস্থিত দূতাবাসের হেড অব চ্যান্সারি মো. অহিদুজ্জামান লিটন।
এতে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ইরাকে বসবাসরত সব বাংলাদেশিদের বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া যত্রতত্র যাতায়াত, সভা-সমাবেশ ও গোলযোগ এড়িয়ে চলার অনুরোধ জানানো হয়।
সেখানকার বাংলাদেশ দূতাবাস ইরাক পরিস্থিতির উদ্বেগজনক রিপোর্ট ঢাকায় পাঠিয়েছে।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, ইরাক জুড়ে যে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে তাতে বাংলাদেশ দূতাবাস অত্যন্ত ঘনিষ্ঠভাবে গোটা বিষয়ের ওপর নজর রাখছে। ১৮টি প্রদেশে থাকা বাংলাদেশিদের সঙ্গে নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ চ্যানেল স্থাপন করা হয়েছে।
দূতাবাসে কোন ছুটি নেই, ৭দিনই ২৪ ঘণ্টা কনস্যুলার সার্ভিস খোলা থাকছে। বাগদাদে থাকা বাংলাদেশি কূটনীতিক ও স্টাফরা নিরাপদে থাকলেও তারা তাদের চলাফেরা সীমিত করেছেন।
ডিপ্লোমেটিক প্রটেকশনে তারা বাসা টু মিশন যাতায়াত করছেন। এর বাইরে তাদেরও যাওয়া আসা বারণ রয়েছে। উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতিতেও মিশনের কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা রয়েছে জানিয়ে রিপোর্টে বলা হয়, ইরাকের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং বাগদাদ ভিত্তিক অন্যান্য দেশের মিশনের সঙ্গে বাংলাদেশ মিশন নিয়মিতভাবে যোগাযোগ রাখছে এবং পরিস্থিতির আপডেট নেয়ার চেষ্টা করছে।
ইরাকে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আবু মাকসুদ মো. ফরহাদ বলেন, ইরানী জেনারেল নিহত হওয়ার পর পরিস্থিতির বিস্তারিত জানিয়ে ঢাকায় মিশন তাৎক্ষণিক যে রিপোর্ট পাঠিয়েছে তার বাইরে তেমন কোন আপডেট নেই। তবে রাষ্ট্রদূত নিশ্চিত করেছেন কোন বাংলাদেশি হতাহতের ঘটনা নেই।
শুক্রবার রাতে ইরানের রেভোলিউশনারি গার্ডসের অভিজাত বাহিনী কুদ’স ফোর্সের প্রধান কাসেম সোলাইমানিসহ অন্তত ১০ জন মার্কিন রকেট হামলায় বাগদাদ বিমানবন্দরের কাছে নিহত হন। এরপর থেকে দফায় দফায় হামলা পাল্টা হামলা চলছে। গত ২৪ ঘণ্টায় অন্তত ৩টি বড় হামলার ঘটনা ঘটেছে। তাতে বহু হতাহতের খবর এসেছে। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনির পর জেনারেল সোলাইমানিকে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ক্ষমতাধর ব্যক্তি হিসেবে মনে করা হতো।
এদিকে দিনে দিনে অবনতির দিকে যাচ্ছে এ আশঙ্কায় বাংলাদেশিদের নিরাপদ রাখার প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। আগাম সতর্কতা জারিসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। দূতাবাসের তথ্য মতে, রাজধানী বাগদাদেই ১লাখ বাংলাদেশি রয়েছেন। দ্বিতীয় অবস্থানে বসরা। সেখানে ৩০ হাজারের মত বাংলাদেশির অবস্থান। কুর্দিস্থানে প্রায় ২০ হাজার, কারবালায় ১৫ হাজার এবং নাজাফ, কিরকুকসহ অন্যান্য শহর এবং প্র্রদেশে ছড়িয়ে আছেন আরও প্রায় ৪০ হাজারের মত বাংলাদেশি। ইরাকে ২ লাখ বাংলাদেশিকে বাইরে যেতে নিষেধাজ্ঞা মানা সতকর্তা দূতাবাসের