Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৩ শনিবার, মে ২০২৫ | ২০ বৈশাখ ১৪৩২ | ঢাকা, ২৫ °সে

বাবার দাফনে সন্তানদের বাধা, রাতভর লাশের পাহারায় কুকুর

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৬ জানুয়ারী ২০২০, ০৭:৩৫ PM
আপডেট: ০৬ জানুয়ারী ২০২০, ০৭:৩৫ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত


সম্পত্তি ভাগাভাগি নিয়ে বিবাদে জড়িয়ে বাবার মরদেহ ফেলে রাখেন সন্তানরা। রাতভর ওই মরদেহ পাহারা দেয় একটি কুকুর। জমিজমা বণ্টনের ফয়সালা না হওয়া পর্যন্ত মরদেহ দাফন করতে দেবেন না বলে সিদ্ধান্ত নেন সন্তানরা।

৩০ ডিসেম্বর বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার দাড়িয়াল ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। অনেকেই সম্পত্তি লোভী সন্তানদের শাস্তির দাবি করেছেন।

স্থানীয় সূত্র জানায়, বাকেরগঞ্জের দাড়িয়াল ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা আবুল হোসেন খানের তিন ছেলে ও দুই মেয়ে। ছোট ছেলে বাবার সম্মতি ছাড়া বিয়ে করেন। এ কারণে বাবার সঙ্গে ছোট ছেলের মনোমালিন্য চলছিল।

একপর্যায়ে ছোট ছেলে বউ নিয়ে ঢাকায় চলে যান। এরপর বড় দুই ভাই সব সম্পত্তি তাদের নামে লিখে নেন। কয়েক মাস আগে ছোট ছেলে ফিরে এলে বাবা আবুল হোসেন খান জমি সমান ভাগ করে দেবেন বলে সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু সম্পত্তি আর ভাগ করে যেতে পারেননি তিনি। ৩০ ডিসেম্বর আবুল হোসেন খান (৮৫) মারা যান। এরপর বাবার মৃত্যু শোক ভুলে সন্তানরা সম্পত্তি নিয়ে বিবাদে জড়িয়ে পড়েন।

প্রতিবেশীরা জানান, জমি বণ্টনের নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত মরদেহ দাফনে বাধা দেন ছোট ছেলে। বড় দুই ভাই সম্পত্তি দেবেন না বলে অনড় থাকেন। অন্যরা মরদেহ জানাজা ও দাফন করতে গেলে বাধা দেন ছোট ছেলে। একপর্যায়ে স্থানীয় মজিদের সামনে বাবার মরদেহ ফেলে রেখে যান ছেলেরা।

প্রতিবেশীরা বেশ কিছুক্ষণ মরদেহের পাশে অপেক্ষা করেন। কিন্তু আবুল হোসেন খানের ছেলেরা ফিরে না আসায় দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পর নিজ নিজ বাড়িতে চলে যান তারা। এরপর সেখানে আসে একটি বেওয়ারিশ কুকুর। সারারাত মরদেহের পাশে থেকে পাহারা দেয় কুকুর। মরদেহটি সামনে নিয়ে বসেছিল কুকুরটি।

এরপর মরদেহ কুকুর পাহারা দেয়ার ছবি তুলে ফেসবুকে পোস্ট দেন স্থানীয় এক ব্যক্তি। পরে তা ফেসবুকে ভাইরাল হয়। সেখানে ধিক্কার ও নিন্দা জানিয়ে নানা ধরনের মন্তব্য করেন অনেকেই। বিষয়টি জানাজানি হলে এ নিয়ে এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়। পরের দিন এলাকার চেয়ারম্যান ও পুলিশের মধ্যস্থতায় আবুল হাসেম খানের দাফন সম্পন্ন করা হয়।

দাড়িয়াল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল জব্বার বলেন, ঘটনা যা ঘটছে তা সত্যি লজ্জার। আমি ঢাকায় ছিলাম। আমি শুনেছি যে মরদেহের জানাজার জন্য সবাই একত্রিত হয়েছিল। এ সময় বাবার মরদেহের জানাজা দিতে বাধা দেয় ছেলেরা। জামাজমি বণ্টন না করে মরদেহ জানাজা দেয়া যাবে না বলে জানায় ছেলেরা। স্থানীয়রা এর সমাধান করতে না পারায় পরদিন আমার লোকজন দিয়ে জানাজা ও মরদেহ দাফন করা হয়।

বাকেরগঞ্জ থানা পুলিশের ওসি আবুল কালাম বলেন, মরদেহের দাফন সম্পন্ন হলেও আবুল হোসেন খানের তিন ছেলে ও দুই মেয়ের মধ্যে সম্পত্তি নিয়ে বিরোধ মেটেনি। গতকাল রোববার (০৫ জানুয়ারি) তাদের নিয়ে সালিশ বৈঠক করা হয়। তবে সমাধানে আসা যায়নি। সোমবার (০৬ জানুয়ারি) আবার সালিশ বৈঠকে বসার কথা রয়েছে।

Bootstrap Image Preview