Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৩ বৃহস্পতিবার, জুলাই ২০২৫ | ১৯ আষাঢ় ১৪৩২ | ঢাকা, ২৫ °সে

রাস্তা নির্মাণে অনিয়ম, প্রতিবাদ করায় চাঁদাবাজির মামলা

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৭ জানুয়ারী ২০২০, ০৬:৪০ PM
আপডেট: ০৭ জানুয়ারী ২০২০, ০৬:৪০ PM

bdmorning Image Preview


অনিয়ম ও নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করে সড়কের সংস্কার কাজ চালানোর অভিযোগ উঠেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আশুগঞ্জে। এসব কাজে বাধা দেওয়ায় সদর ইউপি চেয়ারম্যান সালাউদ্দিনসহ তার সমর্থকদের বিরুদ্ধে আদালতে চাঁদাবাজির মামলা করেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স লোকমান হোসাইন ও মেসার্স মোস্তফা কামাল (জেভি)।

আশুগঞ্জ-তালশহর-ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আঞ্চলিক সড়কের আট কিলোমিটার সংস্কার কাজে অনিয়মের অভিযোগে দফায় দফায় বাধা দিয়েছে এলাকাবাসীও। কোন বাধাকে তোয়াক্কা না করে নিজের ইচ্ছেমত কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন ঠিকাদার। এসব অনিয়মে উপজেলা প্রকৌশল বিভাগের কিছু অসাধু কর্মকর্তার প্রত্যক্ষ সহযোগিতা রয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।

স্থানীয়রা জানান, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ এলাকায় ৬টি ইউনিয়ন ও জেলা সদরের সঙ্গে আঞ্চলিক যোগাযোগের একমাত্র সড়ক আশুগঞ্জ-তালশহর-ব্রাহ্মণবাড়িয়া এই সড়কটি। এই সড়কের দুইপাশে বেশ কয়েকটি চাতালকল থাকার কারণে প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণে ট্রাক ও ট্রাক্টর চলাচল করে এই সড়কটি দিয়ে।

দরপত্র অনুযায়ী ২৫, ১৬, ১২ ও ৬মি.লি. এ ৪ ক্যাটাগরির পাথর এবং পাথরের ডাস্ট ব্যবহার করার কথা ছিল। কিন্তু এক ইঞ্চি সিঙ্গেল ও বুজুরী পাথর সহ নিম্নমানের পাথর ও পাথরের ডাস্টের পরিবর্তে সাদা বালি ব্যবহার করা হচ্ছে। এছাড়া নিম্নমানের ইট দিয়ে ম্যাকাডম ব্যবহার করা হচ্ছে। প্যালাসাইটিং ওয়ালে ৪ সুতা লোহার পরিবর্তে ৩ সুতা এমএস রড ও জিআই তার দিয়ে রিং করে ডালাই দেয়া হয়েছে। স্থানীয় জনতার চোখ আড়াল করতে নিম্নমানের মালামাল রাখা হয় সদর উপজেলার পুথাই গ্রামের এক খালি জায়গায়।

স্থানীয়দের অভিযোগ , নির্ধারিত সময় পার হওয়ার প্রায় ৬ মাস পর কাজ শুরু করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কাজ শুরু করার পর থেকেই প্রশ্ন উঠে কাজের মান নিয়ে। স্থানীয় লোকজন ও জনপ্রতিনিধি একাধিকবার কাজ বন্ধ করে দেয়ার পরও অনিয়ম করে পাথর, ইট, বালু, খোয়া,বিটুমিন ও ম্যাকাডম ব্যবহার কিছুতেই থামছে না ঠিকাদারদের।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মোঃ হেলাল মিয়া জানান, নিম্নমানের মালামাল ব্যবহার করলে এই রাস্তা ৬ মাসও টিকবে বলে মনে হচ্ছে না।

সদর ইউপি চেয়ারম্যান সালাউদ্দীন বলেন, অনিয়ম দেখে ৪ ডিসেম্বর এলাকাবাসীকে সাথে নিয়ে রাস্তা সংস্কারের বাধা দেই। এনিয়ে হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ঠিকাদার লোকমান হোসাইন আমি এবং আমার সমর্থকদের বিরুদ্ধে আদালতে চাঁদাবাজির মামলা করে।

সড়কটির সংস্কার কাজের ঠিকাদার মো. লোকমান হোসাইন অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, কাজ শুরুর পর থেকে রাস্তাটি নিয়ে বিভিন্ন সময়ে বাধা আসার কারণে বিভিন্ন দফতর থেকে নজরদারী করা হচ্ছে। তাই এই রাস্তায় কাজের মান নিয়ে প্রশ্ন তোলার কোন সুযোগ নেই। তাছাড়া আমার ব্যবহার করা প্রতিটি মালামাল ভাল। প্রকৌশল বিভাগ থেকে প্রতিদিন তদারকি করছেন।

এদিকে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান মেসার্স লোকমান হোসাইন ও মেসার্স মোস্তফা কামাল (জেভি)কে নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহার না করতে চিঠি দিয়েছিল উপজেলা প্রকৌশল বিভাগ।

উপজেলা প্রকৌশল বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী আব্দুর রহিম সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, কাজ কোনভাবেই খারাপ হচ্ছে না। শিডিউল মোতাবেক কাজ হচ্ছে। প্রথমদিকে কাজের মান খারাপ থাকার কারণে ঠিকাদারকে চিঠি দেয়া হয়েছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শিরাজুল ইসলাম জানান, আমাদের কেউ নিম্নমানের কাজে সহায়তা করবে বিষয়টি সঠিক নয়। প্রতিটি সাইটে কাজ দেখার জন্য লোক থাকে একজন। আর এই কাজে লোক দেয়া আছে ৫ জন। পাশাপাশি সকল মালামাল ল্যাবে পরীক্ষা করে দেখা হয়েছে। তারপরেও যদি কোন যায়গায় কাজের মান খারাপ হয় তাহলে তা দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Bootstrap Image Preview