ততদিনে পেরিয়ে গেছে টেস্ট অভিষেকের চার বছরের বেশি সময়। খেলে ফেলা হয়েছিল ৩৪টি ম্যাচ, সাফল্য বলতে ছিলো কেবল ৩টি মাত্র ড্র। জয়ের অপেক্ষা যেনো ফুরোচ্ছিলো না কিছুতেই। তখনই বাংলাদেশে খেলতে এলো জিম্বাবুয়ে, চট্টগ্রাম টেস্টে ২২৬ রানের বিশাল ব্যবধানের জয় শেষ হয় বাংলাদেশের অপেক্ষা।
ঘটনার ২০০৫ সালের চট্টগ্রাম টেস্টের, এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে ৬ জানুয়ারি শুরু হয়েছিল ঐতিহাসিক সেই টেস্টটি। যা শেষ হয়েছিল আজকের তারিখ অর্থাৎ ১০ জানুয়ারিতে। যার মানে আজ থেকে ঠিক ১৫ বছর আগে টেস্ট ইতিহাসে নিজেদের প্রথম জয়টি পেয়েছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট দল।
সেই ম্যাচে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসেই ৪৮৮ রানের পাহাড়সমান সংগ্রহ গড়ে তুলে বাংলাদেশ। অথচ এত বড় সংগ্রহ পেলেও সেঞ্চুরি ছিল না কোনো ব্যাটসম্যানের। দলের সবাই কম বেশি অবদান রাখেন। সর্বোচ্চ ৯৪ রান করেন অধিনায়ক হাবিবুল বাশার। ৮৯ আসে রাজিন সালেহর ব্যাট থেকে।
জবাব দিতে নেমে মোহাম্মদ রফিকের ঘূর্ণি আর মাশরাফি বিন মর্তুজার গতিঝড়ে দিশেহারা হয়ে পড়ে জিম্বাবুয়ে। ৮৬ রানের মধ্যে ৫ উইকেট হারানোর পর তাতেন্দা তাইবুর ৯২ আর এলটন চিগুম্বুরার ৭১ রানে কোনোমতে ৩১২ রান পর্যন্ত যেতে পেরেছিল সফরকারিরা। রফিক ৫টি আর মাশরাফি নেন ৩টি উইকেট।
বড় ব্যবধানে এগিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে নামা বাংলাদেশকে আবারও পথ দেখান অধিনায়ক হাবিবুল বাশার। তার ৫৫ রানের ইনিংসে ভর করে ৯ উইকেটে ২০৪ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করে টাইগাররা।
জিম্বাবুয়ের সামনে লক্ষ্য দাঁড়িয়েছিল ৩৮১ রানের। এবার ঘূর্ণি জাদু দেখান এনামুল হক জুনিয়র। একাই ৬ উইকেট নিয়ে সফরকারিদের ১৫৪ রানে গুটিয়ে দেন বাঁহাতি এই স্পিনার। ২টি করে উইকেট নেন তাপস বৈশ্য আর মাশরাফি বিন মর্তুজা।
ওই সিরিজেই নিজেদের ইতিহাসের প্রথম সিরিজ জয়েরও দেখা পায় বাংলাদেশ। দ্বিতীয় টেস্টটি ড্র করে ১-০ ব্যবধানে সিরিজ জিতে নেয় হাবিবুল বাশারের দল।
প্রায় ৪ বছর ও ৩৪ টেস্টের অপেক্ষার পর প্রথম জয় পাওয়া বাংলাদেশ এখনও পর্যন্ত সবমিলিয়ে জিতেছে ১৩টি ম্যাচ। ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টিতে যেমন-তেমন, টেস্ট ফরম্যাটে পরিসংখ্যানটা একটু বেশিই নাজুক টাইগারদের। ২০০০ সালের নভেম্বরে টেস্ট অভিষেকের পর থেকে এখনও পর্যন্ত ১১৭টি টেস্ট খেলে ১৩ জয় ও ১৬ ড্র ছাড়া বাকি ৮৮ ম্যাচেই হেরেছে বাংলাদেশ।