বড়লেখার শাহবাজপুর আইডিয়াল একাডেমির ১২৭ জন শিশু শিক্ষার্থীকে বরাদ্দ থাকা স্বত্তেও সরকারী বই দেয়া হয়নি। ফলে বছরের প্রথম দিন বই উৎসবের আনন্দ-উল্লাস থেকে তারা বঞ্চিত হয়েছে। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেন শিক্ষার্থীদের অভিভাবক ও এলাকাবাসী।
বুধবার পর্যন্ত নানা চেষ্টা তদবিরের পরও প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক বই পাননি। এর প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার বই বঞ্চিত ক্ষুদে শিক্ষার্থীরা রাস্তায় ব্যানার ও প্ল্যাকার্ড নিয়ে মানববন্ধন করেছে।
জানা গেছে, ২০১৮ সালে উপজেলার শাহবাজপুর বাজারে স্থানীয় কয়েকজন উদ্যোক্তারা আইডিয়াল একাডেমি নামে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালু করেন। ওই বছর ও ২০১৯ সালে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের জন্য নতুন পাঠ্য বই সরবরাহ করে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয়। কিন্তু এবারের বই উৎসবের আগে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীদের বই আটকে দেয়া হয়। প্রতিষ্ঠান প্রধান উপজেলা শিক্ষা কার্যালয়ে অনেক যোগাযোগ করেও বই নিতে পারেননি। এর প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার ক্ষুদে শিক্ষার্থীরা স্কুলের সামনের রাস্তায় মানবিক দাবী সম্বলিত ব্যানার ও প্ল্যাকার্ড নিয়ে মানববন্ধন করেছে।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. রফিজ মিয়া জানান, ওই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বিজয় দিবসসহ জাতীয় দিবসগুলো পালন না করায় এলাকার মুক্তিযোদ্ধারা তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে তিনি ওই স্কুলের বই আটকে রাখেন। তবে বই প্রাপ্তির জন্য শাহবাজপুর আইডিয়াল একাডেমির পক্ষ থেকে ৬ জানুয়ারী উপজেলা চেয়ারম্যান বরাবরে একটি আবেদন করা হয়েছে। উক্ত আবেদনটি বিবেচনাধীন অবস্থায় স্কুল কর্তৃপক্ষ শিশু শিক্ষার্থীদের রাস্তায় নামিয়ে মানববন্ধন করানো ঠিক হয়নি।
প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক ফারহানা আক্তার জানান, ‘যথানিয়মে বইয়ের চাহিদা প্রেরণ করেন। ২৬ ডিসেম্বর বই আনতে গেলে বই দেয়া হয়নি। এরপর খোঁজ নিয়ে জানতে পারি এলাকার মুক্তিযোদ্ধারা লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এ জন্য শিক্ষার্থীদের বই আটকে দেয়া হয়। ইউএনও স্যারসহ সবার কাছে যোগাযোগ করেছি। কিন্তু সুরাহা না হওয়ায় শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করেছে। মুক্তিযোদ্ধারা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করেছেন তা মোটেও সত্য নয়। বিভিন্ন জাতীয় দিবস পালনের প্রমাণ স্কুলে সংরক্ষিত আছে।’
অভিযোগকারী মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল খালিক জানান, ‘তারা ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসসহ কোন জাতীয় দিবস পালন করেনি। তাই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য অভিযোগ দিয়েছি। বই বন্ধ করার বিষয়ে আমরা কিছু জানি না। এটা প্রশাসন সঠিক বলতে পারেন।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শামীম আল ইমরান জানান, ‘প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে জাতীয় কোন অনুষ্ঠান না করার অভিযোগ এলাকাবাসীর অনেকদিনের। মুক্তিযোদ্ধারা লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এ অভিযোগের প্রেক্ষিতে তাদের বই বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।’