বিমানটি তখন মাঝ আকাশে। হঠাৎ এক তরুণী যাত্রী বিমান সেবিকাকে ডেকে হাতে একটি চিরকুট ধরিয়ে দেন। বলেন, 'এটা ক্যাপ্টেনকে গিয়ে দিন, এখনই।’ চিঠি পৌঁছানো মাত্রই তা খুলে দেখেন পাইলট। চিঠির লেখা দেখেই বিমান ল্যান্ড করার জন্য তড়িঘড়ি করতে থাকেন পাইলট।
ওই চিঠিতে লেখা ছিল, ‘আমার শরীরের মধ্যে বোমা ভরে এনেছি।'
সঙ্গে সঙ্গেই কলকাতার এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। কলকাতায় ফিরে যাওয়ার জরুরি অনুমতি চান।
গতকাল শনিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে কলকাতা থেকে মুম্বইগামী এয়ার এশিয়ার। রাত ১০টা ১০ মিনিটে কলকাতার মাটি ছেড়ে ওড়া বিমান আবার কলকাতায় ফিরে আসে রাত সাড়ে ১১টার দিকে।
নিরাপত্তার স্বার্থে বিমানবন্দরের মূল ভবন থেকে দূরে ও বিচ্ছিন্ন একটি জায়গায় বিমানটিকে রাখা হয়। একে একে ওই তরুণীসহ ১১৪ জন যাত্রীকে নামিয়ে আনেন কেন্দ্রীয় শিল্প নিরাপত্তা বাহিনী বা সিআইএসএফ’র সদস্যরা। তরুণীকে আলাদা করে তল্লাশি শুরু করেন সিআইএসএফ’র নারী কর্মীরা। কিন্তু কোনো বিস্ফোরক বা সন্দেহজনক কিছু পাওয়া যায়নি তার শরীরে। বিমানেও আলাদা করে তল্লাশি করা হয়। সেখানেও পাওয়া যায়নি কিছুই।
ভারতের আনন্দবাজার পত্রিকার একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রাথমিক তদন্তের পর সিআইএসএফ এবং বিধাননগর পুলিশের কর্তারা নিশ্চিন্ত হন যে, বোমার ভুয়া আতঙ্কই ছড়িয়েছেন ওই যাত্রী। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ এনএসসিবিআই থানার হাতে তুলে দেন ওই যাত্রীকে। রাতেই গ্রেপ্তার করা হয় কলকাতার সল্টলেকের বাসিন্দা ২৩ বছর বয়সী ওই তরুণীকে।
পুলিশকে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, মাত্রাতিরিক্ত অ্যালকোহল পাওয়া গেছে ওই তরুণীর রক্তে। মদের ঝোঁকেই বোমার আতঙ্ক ছড়ান। সল্টলেকের বিএফ ব্লকের বাসিন্দা ওই তরুণী বিবিএ'র ছাত্রী। তার বাবা একজন ব্যবসায়ী।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ওই তরুণীর হবু স্বামী থাকেন মুম্বাইয়ে। হবু শ্বশুর হাসপাতালে ভর্তি। তাকে দেখতেই মুম্বাই যাচ্ছিলেন ওই তরুণী।
আজ রোববার ব্যারাকপুর আদালতে তোলা হয় ওই তরুণীকে। পুলিশ জেরার জন্য তাকে হেফাজতে চেয়েছে। তদন্তকারী এ কর্মকর্তা জানান, মদের ঘোরে তিনি এই আতঙ্ক ছড়িয়েছেন না অন্য কোনো কারণে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।