মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিশংসনের বিচার কাজ কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটে বৃহস্পতিবার শুরু হয়েছে। এর মধ্যে ইউক্রেনের নিরাপত্তার জন্য মার্কিন কংগ্রেস কর্তৃক বরাদ্দকৃত সহায়তা আটকে রাখার মাধ্যমে আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে।
বৃহস্পতিবার এই অভিযোগ তুলেছে সরকারি জবাবদিহি অফিস (জিএও)। সংস্থাটি কংগ্রেসের নিরপেক্ষ পর্যবেক্ষক হিসেবে কাজ করে।
বৃহস্পতিবার জবাবদিহি সংস্থাটি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, গত বছর ইউক্রেনের নিরাপত্তার জন্য অর্থ সহায়তা বরাদ্দ করে কংগ্রেস। তবে সেই বরাদ্দ দুই মাস আটকে রাখে হোয়াইট হাউজ। ১৯৭৪ সালের ‘কংগ্রেস বাজেট এবং সমীক্ষা নিয়ন্ত্রণ আইন’ অনুযায়ী কংগ্রেস কর্তৃক পাশকৃত সহায়তা হোয়াইট হাউস আটকে রেখে নিজস্ব নীতিকে অগ্রাধিকার দিতে পারেন না। আর আটকে দেওয়ার ব্যাপারে অবশ্যই কংগ্রেসকে অবহিত করতে হবে। যা করেনি হোয়াইট হাউজ।
আইন অনুযায়ী ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারবে জিএও। তবে মামলার বিষয়ে এখনও কোন সিদ্ধান্ত নেয়নি সরকারের জবাবদিহি অফিস। ট্রাম্পের আগে একাধিক প্রেসিডেন্ট এই আইন লঙ্ঘন করেছেন। তবে জিএও কর্তৃক মামলা করার ঘটনা একবারই ঘটেছে।
এদিকে আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ অস্বীকার করেছে হোয়াইট হাউজ। তাদের দাবি, সংস্থাটি আলোচনায় আসতে হোয়াইট হাউসের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করেছে।
ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ প্রকাশিত হওয়ার পর ব্যাপক উচ্ছ্বসিত ডেমোক্র্যাট শিবির। অন্যদিকে রিপাবলিকানদের দাবি তাদের প্রেসিডেন্ট কোন অপরাধ করেননি।
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের জুলাই মাসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জেলেনস্কির একটি ফোনালাপ ফাঁসের পর থেকে বিতর্ক শুরু হয়। অভিযোগ উঠে আগামী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে নিজের সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দ্বী জো বাইডেনের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরুর জন্য জেলেনস্কিকে চাপ দেন ট্রাম্প। তাছাড়া তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হলে সেটাতেও বাঁধা প্রদান করেন ট্রাম্প। এই দুই অভিযোগ প্রমাণিত হবার পর মার্কিন কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদে অভিশংসিত হন ট্রাম্প।
পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে বৃহস্পতিবার কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটে ট্রাম্পের অভিশংসন বিচারের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে সিনেটের ১শ’ আইনপ্রণেতা শপথ নিয়েছেন। এমতাবস্থায় ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে ইউক্রেন ইস্যুতে সরকারি কোন সংস্থার করা আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ বিতর্ক আরও উস্কে দিয়েছে।