অনেক নাটকীয়তা আর উদ্বেগ উৎকণ্ঠাকে পাশ কাটিয়ে অবশেষে পাকিস্তান সফরে যাচ্ছে বাংলাদেশ জাতীয় দল। সেখানে পূর্ণাঙ্গ সিরিজই খেলবে টাইগাররা। তবে একবারে নয়, তিন ধাপে পাকিস্তানের মাটিতে খেলবে বাংলাদেশ দল। যার প্রথম ধাপে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ।
২৪ জানুয়ারি থেকে শুরু সেই সিরিজকে সামনে রেখে মিরপুরে ঘাম ঝরানো অনুশীলন করছে টাইগাররা। গতকাল(সোমবার) দিনের অনুশীলন শেষে দলের প্রতিনিধি হিসেবে মিডিয়ার সামনে আসেন বিপিএলে দারুণ খেলে পাকিস্তান সফরে ডাক পাওয়া নাজমুল হোসেন শান্ত।
২০১৭ সালে টেস্ট অভিষেক। ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে খেলেছেন শেষ ওয়ানডে। টি-টোয়েন্টিতে শেষবার খেলেছেন গত বছরের সেপ্টেম্বরে। যুব ক্রিকেটে প্রতিভার বিচ্ছুরণ ঘটিয়ে জাতীয় দলে আসা শান্ত নিজেকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এখনও সেভাবে মেলে ধরতে পারেননি। দলেও তাই নিয়মিত নন। ২ টেস্ট, ৩ ওয়ানডে আর ২ টি-টোয়েন্টিতে আটকে আছে তার ক্যারিয়ার।
এবার অন্ততপক্ষে টি-টোয়েন্টির ক্যারিয়ারটা সমৃদ্ধ করার একটা সুযোগ এসেছে সামনে। বিপিএলে দারুণ ছন্দে ছিলেন। বাংলাদেশের একমাত্র ব্যাটসম্যান হিসেবে এবারের বিপিএলে সেঞ্চুরি করেন শান্ত। শুরুর দিকে তেমন ভালো না খেললেও শেষের কয়েকটা ইনিংসে দুর্দান্ত ছিলেন। খুলনা টাইগার্সকে ফাইনালে তোলার অন্যতম কুশীলব ছিলেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান।
বিপিএলের ফাইনালে ব্যর্থ হলেও (০ রানে আউট) তার আগের ছয় ইনিংসে করেছেন-৭৮, ১১৫*, ১, ৩৮, ৪১, ৩০ রান। ইনিংস উদ্বোধনে নেমে বেশিরভাগ ম্যাচেই দল খুলনাকে স্বস্তি দিয়েছেন।
এমন ফর্মে স্বস্তি পাচ্ছেন শান্ত নিজেও। বিপিএলের শেষ কয়েকটা ইনিংস নিয়ে তিনি বলেন, ‘অবশ্যই শেষের কয়েকটা বেশ ভালো গেছে বিপিএলে। তাই আত্মবিশ্বাসটা আছে। ওই অনুযায়ী যদি ওই আত্মবিশ্বাসটা ধরে রাখতে পারি, তাহলে ওখানেও ভালো করা সম্ভব।’
বিপিএলে প্রথম দিকে রান না পেলেও পরে আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে পারফর্ম করেছেন উল্লেখ করে শান্ত বলেন, ‘আমার কাছে মনে হয় মানসিকভাবে অনেক আত্মবিশ্বাস এসেছে যে, এই ফরমেটে রান করা সম্ভব। যেহেতু প্রথমে কয়েকটা ম্যাচ রান করিনি, একটু কনফিডেন্সের অভাব ছিল। তাই মানসিকভাবে ওভাবে প্রস্তুত হয়েছি যে- না, আমি এই ফরম্যাটেও রান করতে পারি। ওই বিশ্বাসটা নিজের মধ্যে আনার চেষ্টা করেছি। ওটা আসার কারণে আমার মনে হয় যে শেষের কয়েকটা ম্যাচ ভালো রান করেছি।’
কিন্তু বিপিএলে তো শান্ত রান পেয়েছেন ওপেনিংয়ে। জাতীয় দলে ওপেনিং পজিশনে খেলার সুযোগ পাবেন না। সেক্ষেত্রে কিভাবে মানিয়ে নেবেন? শান্তর জবাব, ‘ব্যাটিং পজিশন নিয়ে কোনো সমস্যা নেই। দলে এসেছি যেহেতু সেহেতু সব জায়গায় সব পজিশনে খেলার জন্য প্রস্তুত আছি। যেখানে খেলব, চেষ্টা করব পারফর্ম করার।’
দলের প্রয়োজনে সব জায়গায়ই খেলতে প্রস্তুত। তবু নিজের তো একটা পছন্দ থাকে। শান্তর বেলায় কোন পজিশনটা পছন্দ? আলাদা করে কোনো পজিশনের নাম না বললেও বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান জানিয়ে দিলেন, টপঅর্ডারে ব্যাটিং করতেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন বেশি।
তাই তো মুখে এমন কথা, ‘এমনিতে তো টপ অর্ডারে ব্যাটিং করি। সেখানে ব্যাটিং করলে তো অবশ্যই ভালো লাগবে। তবে আমি যেটা বললাম, পেশাদার খেলোয়াড় হিসেবে যেখানেই ব্যাটিংয়ের সুযোগ আসবে ওখানেই রান করতে হবে। কারণ বড় বড় প্লেয়াররা যে কোনো জায়গায় যে কোনো অবস্থায় ব্যাটিং করে ভালো করার সামর্থ্য রাখে। ওইভাবে আমি চিন্তা করছি যে, যেখানেই ব্যাটিংয়ের সুযোগ আসবে, ওখানেই পারফর্ম করার চেষ্টা করব।’