Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৮ শনিবার, জুন ২০২৫ | ১৪ আষাঢ় ১৪৩২ | ঢাকা, ২৫ °সে

শ্বশুরবাড়ি যাওয়ার আগেই হবু বরের হাতে নিহত নববধূ

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২২ জানুয়ারী ২০২০, ০৬:৩৪ PM
আপডেট: ২২ জানুয়ারী ২০২০, ০৬:৩৪ PM

bdmorning Image Preview


ঘর বাঁধা হল না নববধূ চম্পার। বিয়ের ১২ দিনের মাথায় স্বামী বাবুল হাওলাদারের হাতে খুন হয়েছেন চম্পা।নিখোঁজের ১০ দিন পরে বুধবার চম্পার অর্ধগলিত লাশ চাকামুইয়া ইউনিয়নের গামুরীবুনিয়া গ্রামের স্বামী বাবুল হাওলাদারের বাড়ির কাছে একটি গর্ত থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।

এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

তালতলী থানার ওসি শেখ শাহিনুর রহমানের গড়িমসির কারণেই এ হত্যাকাণ্ডটি ঘটেছে বলে চম্পার বাবা চাঁন মিয়া সিকদার অভিযোগ করেন।

জানা গেছে, এ বছরের ১ জানুয়ারি তালতলী উপজেলার কলারং গ্রামের চাঁন মিয়া সিকদারের কন্যা চম্পার সঙ্গে পার্শ্ববর্তী কলাপাড়া উপজেলার চাকামুইয়া ইউনিয়নের গামুরীবুনিয়া গ্রামের কাদের হাওলাদারের ছেলে বাবুলের বিয়ে হয়। গত ১৫ জানুয়ারি নববধূকে তুলে নেয়ার কথা ছিল।

১২ জানুয়ারি রাতে স্বামী বাবুল হাওলাদার শ্বশুর বাড়িতে এসে নববধূ চম্পাকে বন্ধুর বাড়ি বেড়াতে যাওয়ার কথা বলে নিয়ে যায়। এরপর থেকে নববধূ চম্পা ও তার স্বামী বাবুলের সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না।

এ ঘটনায় চম্পার বাবা চাঁন মিয়া সিকদার গত ১৪ জানুয়ারি তালতলী থানায় জামাতা বাবুলের বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরি করেন।

এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত বাবুলের বড় বোনের মেয়ের স্বামী মাহবুব গাজীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তালতলী থানা পুলিশ আটক করে নিয়ে যায়।

তালতলী থানার ওসি শেখ শাহিনুর রহমান এ ব্যাপারে কোনো গুরুত্ব না দিয়ে নামমাত্র জিজ্ঞাসাবাদ করে অজ্ঞাত কারণে তাকে ছেড়ে দেয় বলে অভিযোগ করেন নিহত চম্পার বাবা চাঁন মিয়া সিকদার।

তিনি দাবি করেন, তালতলী থানার ওসি দ্রুত পদক্ষেপ নিলে তার মেয়ের এ অবস্থা হতো না। ওসির গড়িমসির কারণেই জামাতা বাবুল, জামাতার প্রথম স্ত্রী কহিনূর ও মাহবুব গাজীসহ তার সহযোগীরা সুপরিকল্পিতভাবে তার (চাঁন) মেয়েকে হত্যা করেছে। তিনি ওসির গড়িমসির কারণ খতিয়ে দেখার জন্য পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট দাবি জানিয়েছেন।

এ দিকে গত ১০ দিনেও তালতলী থানা পুলিশ চম্পার কোনো হদিস দিতে পারেনি। বুধবার সকালে স্থানীয় লোকজন জামাতা বাবুল হাওলাদারের বাড়ির কাছে মাঠে পচা গন্ধ পেয়ে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য জাকির হোসেন অভিকে জানান। পরে ইউপি সদস্য কলাপাড়া থানার পুলিশে খবর দেন।

কলাপাড়া উপজেলার চাকামুইয়া ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের সদস্য মো. জাকির হোসেন অভি বলেন, স্থানীয় লোকজন মাঠে গরু চড়াতে গিয়ে দুর্গন্ধ পেয়ে আমাকে জানান। পরে স্থানীয় চৌকিদার ও লোকজন নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে একটি মাটি চাপা দেয়া লাশের মুখমণ্ডল দেখতে পাই। পরে কলাপাড়া থানা পুলিশকে খবর দিলে তারা এসে লাশ উদ্ধার করে।

এ ঘটনায় চম্পার বাবা চাঁন মিয়া সিকদার বাদী হয়ে কলাপাড়া থানায় জামাতা বাবুলকে প্রধান আসামি করে ১১ জনের নামে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

স্থানীয় সূত্র জানায়, বাবুল হাওলাদারের প্রথম স্ত্রী এক সন্তানের জননী কহিনুর বেগমকে বাবুল গত বছর নভেম্বর মাসে তালাক দেয়। এর পরে এ বছর ১ জানুয়ারি চম্পাকে বিয়ে করেন তিনি। চম্পাকে বিয়ে করার পরপরই প্রথম স্ত্রী কহিনুর বাবুলের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করে। বাবুলও প্রথম স্ত্রীকে নিয়ে পুনরায় ঘর-সংসার করার সিদ্ধান্ত নেয়। এরপর থেকেই বন্ধুর বাড়িতে বেড়াতে নেয়ার কথা বলে চম্পাকে হত্যার পরিকল্পনা করে বাবুল ও তার প্রথম স্ত্রী কহিনুর বেগম।

বাবুল, কহিনুর বেগম ও মাহবুব গাজীর পরিকল্পনাতে চম্পাকে খুন হয় বলে অভিযোগ করেন চাঁন মিয়া সিকদার।

কলাপাড়া থানার ওসি মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, নববধূ চম্পার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মর্গে পাঠানো হয়েছে। আসামি গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।এ ব্যাপারে তালতলী থানার ওসি শেখ শাহিনুর রহমানের মোবাইলে বারবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।

Bootstrap Image Preview