Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০২ শুক্রবার, মে ২০২৫ | ১৯ বৈশাখ ১৪৩২ | ঢাকা, ২৫ °সে

ভিক্ষুককে কোলে পাওয়া শিশুটির বাবা এখন কিশোরগঞ্জের ডিসি

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৮ জানুয়ারী ২০২০, ০৭:১১ PM
আপডেট: ২৮ জানুয়ারী ২০২০, ০৭:১১ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত


ভৈরবে ফেলে যাওয়া তিনদিনের শিশুটি আদালতের আদেশে কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক সারোয়ার মুর্শেদ চৌধুরী দত্তক নিলেন। গতকাল সোমবার বিকেলে কিশোরগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল আদালতের বিচারক রফিকুল বারী এ আদেশ দেন।

বর্তমানে শিশুটি ভৈরব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লুবনা ফারজানার হেফাজতে রয়েছে। তবে আগামী বৃহস্পতিবার জেলা সমাজসেবা অধিদফতরের প্রবেসন অফিসার ভৈরবে এসে শিশুটিকে আনুষ্ঠানিকভাবে জেলা প্রশাসকের কাছে হস্তান্তর করবেন বলে জানান ইউএনও।

সোমবার রাত সাড়ে ৯টায় ভৈরবের ইউএনও লুবনা ফারজানা নিজে হাসপাতালে গিয়ে শিশুটিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে মাতৃস্নেহে কোলে নিয়ে তার বাসায় নিয়ে আসেন। আদালতের আদেশের পর কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক ইউএনওকে জানিয়েছেন শিশুটিকে তার হেফাজতে দিতে।

গত শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় এক নারী ভৈরবে বাস থেকে নেমে বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এক ভিক্ষুকের কাছে শিশুটি রেখে টয়লেটে যাওয়ার কথা বলে পালিয়ে যায়। ওই ভিক্ষুক এক ঘণ্টা পর স্থানীয় এক যুবক আশরাফুলকে ঘটনাটি জানায়। পরে সে ঘটনাটি ভৈরব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লুবনা ফারজানাকে অবহিত করে। এরপর ইউএনও'র নির্দেশে আশরাফুল এদিন রাত ১০টায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডা. বুলবুল আহমেদের কাছে শিশুটিকে রেখে আসে। এরপর ইউএনও'র নির্দেশে শুক্রবার রাতেই পুলিশ এ ব্যাপারে থানায় একটি জিডি করে। শিশুটি সুস্থ আছে বলে জানান হাসপাতালের ডা. বুলবুল আহমেদ।

জানা গেছে, উদ্ধারের পর গত রোববার ইউএনও লুবনা ফারজানার নির্দেশে উপজেলা সমাজসেবা অফিসার কিশোরগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল আদালতে শিশুটির বিষয়ে সিদ্ধান্ত দিতে একটি আবেদন করেন। আদালতের বিচারক রফিকুল বারী এদিন কোনো আদেশ দেননি।

এদিকে শিশুটি দত্তক নিতে ইউএনও এবং হাসপাতালের ডাক্তারের কাছে কমপক্ষে ২০ জন আগ্রহ প্রকাশ করেছে বলে জানান ইউএনও। এর মধ্যে খবর পেয়ে কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক সারোয়ার মুর্শেদ চৌধুরী গতকাল সোমবার শিশুটিকে দত্তক নিতে আবেদন করেন।

বিকেলে বিচারক তাকে দত্তক দেয়ার আদেশ দেন। আদেশ পাওয়ার পর সোমবার রাতে শিশুটিকে পরম মমতায় ইউএনও লুবনা ফারজানা বাসায় নিয়ে আসেন।

ইউএনও লুবনা ফারজানা জানান, শিশুটির নিরাপদ হেফাজতের জন্য সমাজসেবা অধিদফতরের মাধ্যমে আদালতে আবেদন করা হয় গত রোববার। কিন্তু আদালত রোববার আদেশ দেননি। সোমবার ডিসি শিশুটি দত্তক নেয়ার আবেদন করলে আদালত ডিসিকে দত্তক দেয়ার আদেশ দেন।

কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক সারোয়ার মুর্শেদ চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি ও আমার স্ত্রী সুমনা আনোয়ারের আগেই ইচ্ছা ছিল কোনো স্থানে শিশু পেলে দত্তক নেব। এরই মধ্যে সুযোগ পেয়ে সোমবার আদালতে আবেদন করি। আদালত শিশুটি আমার কাছে দত্তক দিতে আদেশ দেন। আদেশটি পেয়ে আমি ও আমার স্ত্রী খুশি হয়েছি।

তিনি বলেন, আমার দুই বছরের একটি মেয়ে আছে। তার নাম সামিহা চৌধুরী। এখন আমার দুটি মেয়ে হলো। শিশুটিকে লালন পালন করে মানুষের মতো মানুষ করার চেষ্টা করবো।

Bootstrap Image Preview