অফিস সময় তখনো শুরু হয়নি। তার পরও সব সরকারি কর্মকর্তা একসঙ্গে হাজির! ব্যাপারটা অবাক করার মতোই। তবে তাঁরা কেউই অফিস করেননি। অফিসে তালা ঝুলিয়ে আমোদ করেছেন। ফুটবল খেলেছেন, গান শুনেছেন। ভূরিভোজ তো ছিলই। বাদ পড়েনি ফটোসেশনও। তবে এত আনন্দের মাঝেও বিষাদের ছায়া নামে এ বিষয়ে কালের কণ্ঠে প্রতিবেদন করার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে জেনে।
অফিসার্স ক্লাবের উদ্যোগে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার সরকারি কর্মকর্তারা গতকাল রবিবার ছুটে যান হবিগঞ্জের চরে। সকাল ৯টার দিকে নবীনগর লঞ্চঘাট থেকে যাওয়ার সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ মাসুম জানিয়েছেন, একটি প্রকল্পের কাজ দেখতে তাঁরা কাছে কোথাও যাচ্ছেন। ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই ফিরে আসবেন।
এদিকে কর্মকর্তারা আমোদভ্রমণে চলে যাওয়ায় দিনভর নবীনগরের সরকারি অফিসগুলোতে তালা ছিল। কর্মকর্তাদের সঙ্গে কর্মচারীরাও যোগ দিয়েছেন ওই ভ্রমণে। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, ইউএনও, এসি ল্যান্ড, পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত), প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা থেকে শুরু করে অন্তত ১০০ জন এতে অংশ নিয়েছেন। লঞ্চে করে নবীনগর থেকে হবিগঞ্জের একটি চরে গিয়ে সেখানেই রান্না করে খাওয়াদাওয়া করেন তাঁরা। এ ছাড়া সারা দিন গান ও খেলাধুলার আয়োজন ছিল।
এ বিষয়ে সেখানে উপস্থিত অনেকের সঙ্গেই যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তাঁরা কেউ ফোন ধরেননি। অনেকে ফোন বন্ধ করে রাখেন। বেশ কয়েকবার চেষ্টার পর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মনিরুজ্জামান ফোন ধরলেও পরে কথা বলবেন বলে জানান। এ বিষয়ে জানতে চাইলে পাল্টা এসএমএস করে এক সরকারি কর্মকর্তা ‘স্যরি’ লেখেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ শামছুজ্জামান বলেন, ‘বিষয়টি আমি অবগত নই।’ কর্মদিবসে অফিসে তালা ঝুলিয়ে এমন ভ্রমণ করা যায় কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আগে আমি বিষয়টি জেনে নিই।’