প্রায় পাঁচ বছর পর টেস্ট ম্যাচে মুখোমুখি বাংলাদেশ-পাকিস্তান। দীর্ঘ বিরতির পর এক সফরকে তিন ভাগে ভাগ করে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ হচ্ছে দুই ধাপে। রাওয়ালপিন্ডিতে আজ শুরু হয়েছে প্রথম টেস্ট।
দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট করাচিতে ৫-৯ এপ্রিল। খণ্ডিত সফরের মতো বাংলাদেশ দলটাও খর্বশক্তির। সাকিব আল হাসান নিষিদ্ধ। মুশফিকুর রহিম সফরবিমুখ। বৃহস্পতিবার প্রাক-ম্যাচ সংবাদ সম্মেলনে নিজেদের খানিকটা উপরে রাখার যুক্তি হিসেবে তাই পাকিস্তান টেস্ট অধিনায়ক আজহার আলী দলের দুই মুখ্য খেলোয়াড়ের অনুপস্থিতিকে বাংলাদেশের পিছিয়ে থাকার অন্যতম কারণ হিসেবে উল্লেখ করতে কুণ্ঠিত হননি।
২০১৫ সালের মে মাসে ঢাকায় শেষবার সাদা পোশাকের ক্রিকেটে মুখোমুখি হয়েছিল দু’দল। এরপর আবার ক্রিকেটের আদি সংস্করণে আজ দেখা হচ্ছে তাদের। লাহোরে তিন ম্যাচের টি ২০ সিরিজ খেলে আসার পর দ্বিতীয় দফা টাইগারদের এবারের পাকিস্তান সফর। শোয়েব আখতারের শহরে কেমন হবে দু’দলের টেস্ট ম্যাচ?
কোনো ঝুঁকি না নিয়ে বলে দেয়া যায়, পাকিস্তানের বোলিং আক্রমণ বনাম বাংলাদেশের ব্যাটিং- এই হচ্ছে ম্যাচের পূর্বানুমান তথ্য। সফরকারীদের ব্যাটিংয়ে সন্দেহাতীতভাবে নেতৃত্ব দেবেন একমেবাদ্বিতীয়ম তামিম ইকবাল। যিনি পিন্ডি যাত্রার আগে ঘরোয়া আসরে বিসিএলে ট্রিপল সেঞ্চুরি করে আত্মবিশ্বাসের জ্বালানি মজুদ করে নিয়েছেন। মিডলঅর্ডারে মুশফিকের শূন্যস্থান পূরণে দায়িত্ব নিতে হবে অধিনায়ক মুমিনুল হককে।
গেল বছরের শেষে ভারতে দুই টেস্টের সিরিজে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেয়ার টাটকা অভিজ্ঞতা নিয়ে পিন্ডিতে টস করতে নামবেন মুমিনুল। টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে নিজের দ্বিতীয় সিরিজে নেতৃত্বগুণের প্রকাশ ঘটাতে কতটা সমর্থ হবেন তিনি, সেটাই এখন দেখার।
রাওয়ালপিন্ডির উইকেট ব্যাটিং সহায়ক হতে পারে। পেসাররাও সুবিধা পেয়ে থাকেন। অতিরিক্ত বাউন্স ও গতি পান পেসাররা। যা বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের জন্য চ্যালেঞ্জ। প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গোর কথা ঠিক থাকলে তামিম ইকবালের সঙ্গে ওপেন করবেন সাইফ হাসান।
সাইফের অভিষেক হবে। তিনে মুমিনুলের জায়গা পাকা থাকলেও মুশফিক না থাকার কারণে তাকে এই টেস্টে চারে খেলতে হবে। তিনে নাজমুল হোসেন শান্ত। পাঁচে মাহমুদউল্লাহ, ছয়ে মোহাম্মদ মিঠুন এবং সাতে লিটন দাস। বাঁ-হাতি স্পিনার তাইজুল ইসলামের সঙ্গে তিন পেসার আল-আমিন হোসেন, আবু জায়েদ রাহি ও ইবাদত হোসেনকে একাদশে দেখা যেতে পারে।
বাংলাদেশ দলে একমাত্র অভিজ্ঞ বোলার স্পিনার তাইজুল ইসলাম। বাকি সবার উইকেট মিলিয়েও তার সমান নয়। উইকেট দেখে একজন বাড়তি স্পিনার নিতে পারে টিম ম্যানেজমেন্ট। এ পাকিস্তানের বিপক্ষে এখনও টেস্ট জেতেনি বাংলাদেশ। এদিকে দেশের বাইরে বাজে সময় যাচ্ছে। তিন-চার দিনেই ম্যাচ শেষ হয়। সর্বশেষ আট টেস্টে দেশের বাইরে হেরেছে দল। ২০১৭ সালে সবশেষ বাংলাদেশ জিতেছিল গল টেস্টে।
উইকেট নিয়ে ধোঁয়াশা না থাকলেও অননুমেয় আবহাওয়া নিয়ে শঙ্কা রয়েছে। ডিসেম্বরে এই ভেন্যুতে পাকিস্তান-শ্রীলংকা ম্যাচ বৃষ্টিতে ভেসে গেছে। বাংলাদেশ দলের জন্য অনুপ্রেরণা হতে পারে একটি তথ্য- রাওয়ালপিন্ডিতে ২৩ বছরে কোনো টেস্ট ম্যাচ জিততে পারেনি পাকিস্তান। এই ভেন্যুতে শেষ চার টেস্টের তিনটিতে তারা হেরেছে যথাক্রমে অস্ট্রেলিয়া (১৯৯৮), শ্রীলংকা (২০০০) এবং ভারতের (২০০৪) কাছে।