অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের ফাইনালে ভারতের মুখোমুখি বাংলাদেশ। রোববার পচেফস্ট্রুমে বৈশ্বিক ট্রফির জন্য লড়বে দুদল। হাইভোল্টেজ ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় বেলা ২টায়।
ম্যাচ ঘিরে উৎকণ্ঠা চেপে ধরেছে টাইগার সমর্থকদের। সবচেয়ে বেশি উত্তেজনার ঝড় বইছে টাইগারদের পরিবারে।
আজ খেলা দেখতে গাড়ি চালাবেন না বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের সেরা ব্যাটসম্যান শাহাদাত হোসেনের বড় ভাই আবুল হোসাইন।
ভাড়ায় গাড়ি চালিয়ে সংসারের খরচ জোগান তিনি। একদিন গাড়ি না চালালে হিমশিম খেতে হয় তার। তবু ছোট ভাই ও বাংলাদেশ দলের খেলা দেখতে আজ গাড়ি না চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আবুল হোসেন।
এ গণমাধ্যমকে আবুল হোসেন বলেছেন, ‘শত সমস্যা থাকলেও আজ কাজে বাইরে যাব না। গাড়ির স্টিয়ারিং ধরব না। আজ শাহাদাতের খেলা দেখব। প্রতি মুহূর্তে বাংলাদেশ দলের জন্য দোয়া করব। শুধু আমি নই, আমার বোনও তার সংসার ফেলে এখানে চলে এসেছে। পরিবারের সবাই মিলে আয়োজন করে খেলা দেখব। খেলা বেলা ২টার দিকে শুরু হলেও উৎকণ্ঠায় আগেই সবাই বাড়িতে একত্রিত হয়েছেন।’
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, অভাবের সঙ্গে যুদ্ধ করে এত দূর এসেছে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের অন্যতম ব্যাটসম্যান শাহাদাত। ২০১০ সালে তার বাবা আবদুস সবুর ক্যান্সারে মারা গেলে বড় ভাই আবুল হোসাইনের ওপর সংসার চালানোর দায়িত্ব এসে পড়ে। তখন সেই তিনি ভাড়ায় গাড়ি চালাচ্ছেন। এই গাড়ি চালিয়েই ছোট ভাইকে ক্রিকেটের খুদে তারকায় পরিণত করেছেন। বড় ভাইয়ের অক্লান্ত শ্রমের মূল্য দিয়েছেন শাহাদাত। নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেছেন টাইগার যুবাদের দলে।
উল্লেখ্য, বিশ্বকাপের প্রতিটি ম্যাচেই দারুণ ব্যাটিং করেছেন শাহাদাত। পাকিস্তানের বিপক্ষে ১৬ রানে অপরাজিত থাকার পর দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে খেলেছেন ৭৪ রানের অপরাজিত ইনিংস।
সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৪০ রানে অপরাজিত ছিলেন তিনি।
শাহাদাতের এমন পারফম্যান্সে প্রচণ্ড খুশি তার ভাই আবুল হোসেন। তবু টেনশনে এই শীতেও ঘামছেন তিনি।
তিনি বলেন, নিউজিল্যান্ডকে হারানোর পর থেকে টেনশন হচ্ছে আমার। পুরো টুর্নামেন্টে ভারত সবচেয়ে বেশি শক্তিশালী। তাই একটু বেশি দুশ্চিন্তা হচ্ছে। তবে আমার বিশ্বাস– দলের সবাই আজ তাদের সেরাটা দিলে কাপ আমাদেরই হবে। বিশেষ করে আমার ভাই যেন আজ তার আসল খেলাটা খেলে এ কামনা করছি।’
আজ সবচেয়ে বড় স্বপ্ন পূরণের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে প্রস্তুতি নিয়েই রেখেছেন শাহাদাত।
শনিবার তিনি বলেন, আমরা সব দিক দিয়ে তৈরি। ভারতকে মোকাবেলায় প্রস্তুত আমরা। ফাইনাল খেলা, তাই বলে চাপ নেয়ার দরকার মনে করছি না। সাধারণ একটা ম্যাচের মতোই খেলব। ইনশাল্লাহ ভালো কিছু হবে। সর্বোপরি আমাদের জন্য সবাই দোয়া করবেন।