Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৪ মঙ্গলবার, জুন ২০২৫ | ১০ আষাঢ় ১৪৩২ | ঢাকা, ২৫ °সে

ওসি ধমক খেয়ে টয়লেট থেকে বের হয়ে আসলেন করোনা রোগী

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২১ এপ্রিল ২০২০, ০৫:০৫ PM
আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০২০, ০৫:০৫ PM

bdmorning Image Preview


প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের (কভিড-১৯) সংক্রমণে ভয়াবহতার চেয়ে দেশে এ নিয়ে সামাজিক হেনস্তা নিয়েই বেশি আতঙ্কিত লোকজন। আক্রান্ত রোগীকে লুকিয়ে রাখারও চেষ্টা করছেন কেউ কেউ। এমনই একটি চিত্র পাওয়া গেছে হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ উপজেলায় একটি পল্লীতে।

সোমবার রাতে সিলেট থেকে পাঠানো রিপোর্টে হবিগঞ্জ জেলায় ১০ জন করোনা আক্রান্ত বলে জানানো হয়। এ ১০ জনের মধ্যে সাতজনই ছিলেন হোম কোয়ারেন্টাইনে।

রিপোর্ট পাওয়ার পর প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগ হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা রোগী ও তার পরিবারকে আরও সচেতন করতে তাদের বাড়িতে যান।

আজমিরীগঞ্জ উপজেলার কাকাইলছের আলীপুর গ্রামের জালাল মিয়া (৫৫) বর্তমানে একই উপজেলার বিরাট মির্জাপুর গ্রামে শ্বশুরবাড়ির একটি ভিটায় বসবাস করেন।

সিলেটের জাফলংয়ে পাথর কোয়ারীতে শ্রমিকের কাজ করেন। কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ১০ দিন আগে সপরিবারে বাড়িতে আসেন। প্রশাসন তাকে হোম কোয়ারেন্টাইনে পাঠায় এবং নমুনা সংগ্রহ করে।

সোমবার আসা রিপোর্টে করোনা আক্রান্তদের মধ্যে জালালের নামও আসে। রাতেই আজমিরীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোশারফ হোসেন তরফদার, উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলীসহ আরও কয়েকজন ছুটে যান তার বাড়িতে।

জালাল মিয়া ও তার পরিবারকে বিষয়টি জানাতে গেলে বাড়ি থেকে বের হন স্ত্রী রেহেনা বেগম। তারা জালাল মিয়াকে ডেকে দিতে বললে রেহেনা বেগম জানান এই বাড়ি জালাল মিয়ার নয়। তিনি জালাল নামে কাউকে চেনেনও না। এমনকি স্বামীর নামও পাল্টে আরেকজনের নাম বলেন তিনি।

প্রায় আধা ঘণ্টা সময় ধরে ওসি ও প্রকল্প কর্মকর্তাকে তিনি মিথ্যা তথ্য দিয়েই যাচ্ছিলেন। একপর্যায়ে তারা প্রতিবেশী এক বৃদ্ধার সহযোগিতা চাইলে তিনি জানান জালাল মিয়াই হচ্ছেন রেহেনার স্বামী।

এ সময় ওসি তার ‘পুলিশি মেজাজে’ ধমক দিলে বাড়ির লাগোয়া টয়লেট থেকে বের হয়ে আসেন জালাল মিয়া।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জালাল মিয়া তিন কন্যা ও এক পুত্রের জনক। তার বাড়িতে স্ত্রী-পুত্র ছাড়াও স্বামী পরিত্যক্তা এক কন্যা, দুই নাতি রয়েছে।

তবে জালাল মিয়া জানান, করোনাভাইরাসের কোনো উপসর্গ তার শরীরে নেই।

যোগাযোগ করা হলে ওসি ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, জালাল মিয়া ভয়ে পালানোর চেষ্টা করছিলেন। তাকে বাড়ির লোকজনের সঙ্গে দূরত্ব বজায় রাখা ও বাড়ি থেকে বের না হওয়ার জন্য বলে এসেছি।

তিনি বলেন, এই উপজেলার বদলপুর গ্রামে সাবিত্রী রানী দাশ নামে এক নারীর করোনা পজিটিভ এসেছে। তিনি নারায়ণগঞ্জ থেকে এসেছেন। তিনি শুরু থেকেই আমাদের দেওয়া উপদেশ মেনে চলেছেন। মঙ্গলবার তাদেরকে হবিগঞ্জ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হতে পারে।

Bootstrap Image Preview