Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৯ মঙ্গলবার, আগষ্ট ২০২৫ | ৪ ভাদ্র ১৪৩২ | ঢাকা, ২৫ °সে

করোনাভাইরাস: ক্ষুধার্ত সন্তানদের পাশে বসিয়ে পাতিলে পাথর রান্না করছে মা

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০১ মে ২০২০, ০৩:২৫ PM
আপডেট: ০১ মে ২০২০, ০৩:২৫ PM

bdmorning Image Preview
ছবি: বিবিসি


পেটে দেওয়ার মত ঘরে কোনো খাবার নেই। ক্ষুধার্ত সন্তানদের সান্ত্বনা দিতে উপায় না পেয়ে পাতিলে পাথর রেখে চুলোয় আগুন ধরান এক মা। এই আশায়, বাচ্চারা খাবারের অপেক্ষা করতে করতে এক সময় ঘুমিয়ে পড়বে!

কেনিয়ার উপকূলীয় মোম্বাসা শহরের এমনই এক মর্মস্পর্শী ঘটনা নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

পেনিনা বাহাতি কিতসাও নামের ওই বিধবা মায়ের দুর্দশার খবর প্রচারে আসে তার এক প্রতিবেশীর মাধ্যমে। এরপর তার প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়েছেন অনেকে।  

স্থানীয় একটি লন্ড্রিতে কাজ করতেন অক্ষরজ্ঞানহীন কিতসাও। কিন্তু করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে সরকারি বিধিনিষেধের কারণে কাজটি এখন আর নেই। অল্প দিনেই অন্নহীন হয়ে পড়েন আট সন্তানের জননী।

ক্ষুধায় কোনোভাবেই থামছিল না বাচ্চাদের কান্না। উপায় না পেয়ে পাতিলে পাথর রেখে চুলোয় আগুন ধরিয়ে বাচ্চাদের ধোঁকা দেওয়ার পথ বেছে নেন মা কিতসাও। হৃদয়বিদারক ঘটনাটি নজরে পড়ে প্রতিবেশী প্রিসকা মোমানির। বিষয়টি সংবাদমাধ্যমে অবগত করেন তিনি।

কেনিয়ার এনডিটিভিতে এ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর ওই মাকে সাহায্যের শেষ নেই মানুষজনের। প্রতিবেশী মোমানির মাধ্যমে অনেকে মোবাইল ফোন ও ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে টাকা পাঠিয়েছেন।

সহায় সম্বলহীন কিতসাও দুটি বেডরুমের যে বাড়িতে থাকেন সেখানে নেই পানি বা বিদ্যুতের সংযোগ। মানুষের উদারতায় মুগ্ধ তিনি।

স্থানীয় একটি নিউজ পোর্টালকে কিতসাও বলেন, “আমি বিশ্বাস করতাম না, যে কেনিয়ানদের এত দয়া আছে। সারা দেশ থেকে আমি ফোন পেয়েছি, কিভাবে তারা সাহায্য করতে পারে জানতে চাচ্ছে।”

সন্তানদের খুব বেশি দিন ‘পাথর রান্নার’ ধোঁকা দেখতে হয়নি বলেও জানান কিতসাও, “তারা আমাদের বলতে শুরু করেছিল, খাবার রান্না নিয়ে আমি তাদের মিথ্যা বলছি। কিন্তু আমার কিছু করার ছিল না। কারণ আমার কিছুই ছিল না।”

গত বছর গুন্ডা দলের আক্রমণে স্বামী নিহত হলে আট সন্তানকে নিয়ে চরম দুর্দশায় পড়ে যান কিতসাও।

তার প্রতিবেশী প্রিসকা মোমানি জানান, বাচ্চাদের কান্নার শব্দ শুনে সেখানে কী হয়েছে তা দেখার জন্য বের হন। এরপর এই মর্মস্পর্শী দৃশ্যটি দেখতে পান। কিতসাওকে সাহায্যে এগিয়ে আসায় দেশটির কর্তৃপক্ষ ও কেনিয়া রেড ক্রসকে ধন্যবাদ জানান তিনি।

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে কেনিয়ার অল্প আয়ের মানুষদের দুর্দশার কথাই মনে করিয়ে দিচ্ছে কিতসাওয়ের এই দৃশ্য। করোনার কারণে কর্মহীন হয়ে পড়েছেন দেশটির অনেক মানুষ।

পূর্ব আফ্রিকার দেশ কেনিয়ায় করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৪০০ কাছাকাছি। মৃত্যু হয়েছে ১৭ জনের। যদিও এসব দেশে কত সংখ্যক করোনা টেস্ট হয় সে নিয়ে প্রশ্ন আছে অনেক।

Bootstrap Image Preview