সাংসদ সদস্য নিক্সন চৌধুরীর ‘অনভিপ্রেত’ আচরণের প্রেক্ষিতে ফরিদপুরের জেলা প্রশাসকের (ডিসি) কাছে সমবেদনা ও সহমর্মিতা প্রকাশের পাশাপাশি এ ঘটনার বিচার দাবি করেছে জেলা আওয়ামী লীগ। একই সঙ্গে ডিসি ও এসিল্যান্ড (ভাঙ্গা) নিয়ে সাংসদের মন্তব্যের নিন্দা জানিয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের নেতারা।
বুধবার (১৪ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গিয়ে জেলা প্রশাসক অতুল সরকারের প্রতি তাদের এ সমর্থন ব্যক্ত করেন জেলা আওয়ামী লীগের নেতারা।
জেলা প্রশাসকের কাছে ওই দিনের ঘটনাবলি উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ নেতারা বলেন, আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। যে ব্যক্তি ডিসি ও এসিল্যান্ডের বিষয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করেছেন তার দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই। নেতারা জেলা প্রশাসকের কাছে সহমর্মিতা প্রকাশ করেন এবং এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক যেসব পদক্ষেপ নিয়েছেন তার প্রতি সংহতি প্রকাশ করে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জন্য প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার প্রতি আহ্বান জানান।
জেলা প্রশাসক অতুল সরকার জেলা আওয়ামী লীগ নেতাদের সহমর্মিতার জবাবে তাদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, গত ১০ অক্টোবর চরভদ্রাসনে নির্বাচন চলাকালীন এবং তারপর যেসব ঘটনা ঘটেছে তা ঊর্ধ্বতন মহলসহ রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ ব্যক্তিকে অবগত করা হয়েছে। এ বিষয়টি তারা দেখছেন। এ বিষয়ে আমার কোনো বক্তব্য নেই।
জেলা প্রশাসক বলেন, ‘আমি মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। আমাকে রাজাকার বলা হয়েছে। আমার সম্পর্কে এমন একটি শব্দ (রাজাকার) ব্যবহার করা হয়েছে তা আমার জন্য অমর্যাদাকর, যা আমি মেনে নিতে পারছি না।’
জেলা আওয়ামী লীগের নেতাদের মধ্যে সভাপতি অ্যাডভোকেট সুবল চন্দ্র সাহা, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মাসুদ হোসেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ঝর্ণা হাসান, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক মোল্লা, সদর উপজেলা সাধারণ সম্পাদক সামসুল আলম, জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক অনিমেষ রায়, সহ-দপ্তর সম্পাদক সোহেল রেজা, আইন বিষয়ক সম্পাদক জাহিদ ব্যাপারী, শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক দীপক মজুমদার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, চরভদ্রাসন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় গত শনিবার। ওই নির্বাচনের সময় চর অযোধ্যা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে নিক্সনের এক সমর্থককে কর্তব্যরত ম্যাজিস্ট্রেট আটক করেন।
এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে সাংসদ নিক্সন চরভদ্রাসনের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মুঠোফোনে ফোন করে ওই ম্যাজিস্ট্রেটকে মা-বাবা তুলে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করেন। নির্বাচনের পর সন্ধ্যায় চরভদ্রাসন উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে এক সমাবেশে ফরিদপুরের জেলা প্রশাসককে ‘রাজাকার’ আখ্যায়িত করে তাকে দাঁতভাঙ্গা জবাব দেয়ার হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।