কক্সবাজারে অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা হত্যাকাণ্ডে হত্যা মামলাটি বেআইনি ও অবৈধ ঘোষণা চেয়ে প্রধান আসামী লিয়াকত আলীর আইনজীবীর দায়ের করা রিভিশন মামলাটি খারিজ করে দিয়েছেন আদালত।
রবিবার (১৩ ডিসেম্বর) রিভিশন মামলাটির পূর্ণাঙ্গ শুনানীর নির্ধারিত দিন ধার্য ছিলো।
রবিবার দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত নির্ধারিত দিনে দীর্ঘ শুনানী শেষে বিচারক মামলাটি খারিজ করে দেন বলে জানিয়েছেন বাদীপক্ষের আইনজীবী মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর।
গত ৪ অক্টোবর কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে সিনহা হত্যা মামলার প্রধান আসামী লিয়াকত আলীর পক্ষে তার আইনজীবী মাসুদ সালাউদ্দিন এ রিভিশন মামলাটি দায়ের করেন। ওই দিন আদালত মামলাটির পূর্ণাঙ্গ শুনানীর জন্য গত ২০ অক্টোবর দিন ধার্য করেন।
শুনানীর ওই নির্ধারিত দিনে (২০ অক্টোবর) সিনহা হত্যার মামলার বাদী শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস অসুস্থাতার কারণে আদালতে উপস্থিত থাকতে না পারায় আদালত পরবর্তী শুনানীর দিন ধার্য্য করেন ১০ নভেম্বর।
মামলাটি শুনানীর ওই পূর্ব নির্ধারিত দিনে (১০ নভেম্বর) লিয়াকতের নিযুক্ত আইনজীবী মাসুদ সালাউদ্দিন উদ্দিন অসুস্থ হয়ে পড়েন। এতে মামলাটির পূর্ণাঙ্গ শুনানীর দিন আবারো পিছিয়ে যায়।
ওই দিন (১০ নভেম্বর) আদালত মামলাটির পূর্ণাঙ্গ শুনানীর জন্য আজ ১৩ ডিসেম্বর দিন ধার্য করেন।
আদালত চত্বরে লিয়াকত আলীর নিযুক্ত আইনজীবী মাসুদ সালাহ উদ্দীন বলেন, রিভিশন মামলাটি আদালত খারিজ করে দিয়েছে। আদালতের এ আদেশে তারা ন্যায় বিচার পায়নি। তারা আদেশ পূর্নবিবেচনার জন্য আবেদন করবেন।
শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌসের আইনজীবী মোহাম্মদ জাহানগীর বলেন, একই হত্যা মামলায় অভিযুক্ত করে আজ ১৫ জন আসামীর বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে আদালতে। আদালত চার্জশিট গ্রহণ করেছেন। এ ঘটনার পরস্পরায় সম্পৃক্ত শ্রিপ্রা ও শাহেদুল ইসলাম সিফাতের বিরুদ্ধে দায়ের করা মাদক দ্রব্য আইনে করা দুইটি মামলার ও চুড়ান্ত অভিযোগপত্র ( ফাইনাল চার্জশিট) ও আদালতে দাখিল করা হয়েছে। তা ও আদালত গ্রহণ করেছে। ওই সবকিছু বিবেচনা করে আদালত বহিস্কৃত পুলিশ পরিদর্শক লিয়াকত আলীর করা রিভিশন মামলাটি খারিজের আদেশ দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, গত ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফের মেরিন ড্রাইভ রোডে শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান। এরপর ৫ আগস্ট এ ঘটনায় ৯ জনের বিরুদ্ধে কক্সবাজার আদালতে মামলা করেন সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস। মামলাটি র্যাবকে তদন্তভার দেওয়া হয়।
গত ৬ আগস্ট আদালতে আত্মসমর্পণ করেন টেকনাফের থানার বরখাস্ত হওয়া ওসি প্রদীপ এবং বাহারছরা পুলিশ ফাড়ীর তৎকালীন ইনচার্জ বরখাস্ত হওয়া পরিদর্শক লিয়াকতসহ পুলিশের ৭ সদস্য। পরে র্যাব এপিবিএন’র ৩ সদস্য, পুলিশের মামলার ৩ সাক্ষী ও সর্বশেষ পুলিশের একজন কনস্টেবলকে আটক করেন। এই মামলায় এখন মোট আসামী ১৪ জন। ১২ জন আসামী এ পর্যন্ত আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।