চট্টগ্রামের বাঁশখালীর নির্মাণাধীন বিদ্যুৎকেন্দ্রে শ্রমিক-পুলিশ সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশের গুলিতে নিহত ৭ জন শ্রমিকের প্রত্যেক পরিবারকে দুই লাখ এবং আহত ১৫ শ্রমিকের চিকিৎসার জন্য প্রত্যেককে পঞ্চাশ হাজার টাকা করে সহায়তা দেওয়া হবে।
বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন তহবিল থেকে এই সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান। আজ সোমবার (২৬ এপ্রিল) এক বিবৃতিতে প্রতিমন্ত্রী এ সহায়তার ঘোষণা দেন।
বাঁশখালীর ঘটনা অত্যন্ত মর্মান্তিক এবং বেদনাদায়ক উল্লেখ করে শ্রম প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘একটি শ্রমজীবী পরিবারের কর্মক্ষম ব্যক্তিটির মৃত্যু হলে সে পরিবারটি অসহায় হয়ে পড়ে। সে অসহায় শ্রমিক পরিবারকে শ্রম মন্ত্রণালয়ের শ্রমিক কল্যাণ তহবিল থেকে সহযোগিতার সুযোগ রয়েছে।’
বাংলাদেশ শ্রম আইন অনুযায়ী গঠিত বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন তহবিল থেকে কর্মস্থলে দুর্ঘটনায় কোনো শ্রমিক নিহত হলে নিহত শ্রমিকের পরিবারকে সর্বোচ্চ ২ লাখ পর্যন্ত এবং আহতদের চিকিৎসার জন্য ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত সহায়তার বিধান রয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ১৭ এপ্রিল বাঁশখালী উপজেলার গন্ডামারা এলাকায় শিল্প গ্রুপ এস আলম এবং চীনা প্রতিষ্ঠান সেফকো থ্রি পাওয়ার কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড এর অর্থায়নে এসএস পাওয়ার প্ল্যান্ট নামে নির্মাণাধীন বিদ্যুৎকেন্দ্রে শ্রমিক-পুলিশ সংঘর্ষে ৭ জন শ্রমিক নিহত এবং ১৫ জন আহত হন। এ ঘটনায় বাঁশখালী থানায় আলাদা দু’টি মামলা হয়েছে।
নিহতরা হলেন- শুভ (২৩), রাহাত (২৪), আহমদ রেজা (১৯), রনি হোসেন (২২) ও রায়হান (২০)।
পরবর্তী সময়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২১ এপ্রিল মো. শিমুল (২৩) নামে আহত এক শ্রমিক মারা যান।
এদিকে বৃহস্পতিবার (২২ এপ্রিল) মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের পক্ষে আইনজীবী সৈয়দা নাসরিন হাইকোর্টে একটি রিট দায়ের করেন। রিটে পুলিশের গুলিতে নিহত প্রত্যেক পরিবারকে ৩ কোটি টাকা ও আহত প্রত্যেকের পরিবারকে ২ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে বলা হয়েছে। এছাড়া নিহত ও আহত শ্রমিকদের পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।
রিট করার বিষয়টি নিশ্চিত করেন মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সৈয়দা নাসরিন।
তিনি জানান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ সাত সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শকসহ ১৬ জনকে বিবাদী করা হয়েছে।
রিটে ওই হতাহতের ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলাসহ আইনগত ব্যবস্থা নিতে এবং নিহত–আহত শ্রমিকদের পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে।