Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১০ শনিবার, মে ২০২৫ | ২৬ বৈশাখ ১৪৩২ | ঢাকা, ২৫ °সে

ছবি, ভিডিও এবং ডকুমেন্টস উদ্ধারের জন্য মুনিয়াকে হত্যা করা হয়: নুসরাত জাহান

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৮ এপ্রিল ২০২১, ০৫:৪৫ PM
আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০২১, ০৫:৪৫ PM

bdmorning Image Preview


ঢাকার গুলশানের একটি বিলাসবহুল ফ্ল্যাট থেকে ছাত্রী মোসারাত জাহান মুনিয়ার লাশ উদ্ধার নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড় বইছে। আলোচনা-সমালোচনার সঙ্গে চলছে প্রতিবাদ। মুনিয়ার মৃত্যুতে জড়িত ব্যক্তিকে দ্রুত আইনের আওতায় আনা এবং ন্যায় বিচারের দাবি করছেন অনেকেই।

এদিকে পরিবারের দাবি, মুনিয়ার মৃত্যু একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। দীর্ঘ সম্পর্কের কিছু ছবি, ভিডিও এবং ডকুমেন্টস মুনিয়ার মোবাইল ফোনে সংগ্রহ ছিল। ডকুমেন্টগুলো উদ্ধারের জন্য ৫০ লাখ টাকা চুরির মিথ্যা অপবাদ, মানসিকভাবে হ্যারেজমেন্ট করা হয়। বুধবার (২৮ এপ্রিল) সকালে এই কথাগুলো বলেন মুনিয়ার বড় বোন নুসরাত জাহান।

তিনি বলেন, ‘সর্বশেষ গত ৪ এপ্রিল কুমিল্লা নগরীর বাগিচাগাঁও এলাকায় অরণী ভবনে মোসারাত জাহান মুনিয়া বোনের বাসায় আসে। ১২ এপ্রিল ঢাকায় ফিরে যায়। ফেরার সময় বলে গিয়েছিল সায়েম সোবহান আনভীর দেশে আসছেন। আমাকে বলছে ঢাকায় ফিরে যাওয়ার জন্য।’

বোন নুসরাত আরও বলেন, ‘মুনিয়া কুমিল্লায় যে কয়দিন ছিল প্রায় বলতো, আনভীর তার মোবাইল ফোন অসংখ্যবার ছিনিয়ে নেওয়ার এবং লুকানোর চেষ্টা করে। বনানী থেকে গুলশানে ওঠার আগে কুমিল্লায় চলে আসে মুনিয়া। তখন সে বলেছিল, আনভীর মোবাইল ফোন নেওয়ার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু পারেনি। মোবাইলে থাকা সম্পর্কের ডকুমেন্টস উদ্ধারের জন্যই আনভীর আমার বোনকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে।’

এর আগে সোমবার (২৬ এপ্রিল) সন্ধ্যার পর গুলশান ২ নম্বরের ১২০ নম্বর সড়কের ফ্ল্যাটটি থেকে মোসারাত জাহান মুনিয়ার মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। এ নিয়ে কুমিল্লাসহ দেশব্যাপী তোলপাড় সৃষ্টি হয়। পুলিশ কর্তৃক ওই কলেজছাত্রীর মরদেহ উদ্ধারের পর তার বড় বোন নুসরাত জাহান বাদী হয়ে রাজধানীর গুলশান থানায় বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীরকে একমাত্র আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন।

এরপর মঙ্গলবার বাদ আসর কুমিল্লা নগরীর টমসমব্রিজ কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন করা হয়। এর আগে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মুনিয়ার মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে বিকালে কুমিল্লা নগরীর বাগিচাগাঁও এলাকায় তার বড় বোনের বাসায় নিয়ে আসা হয়। এ সময় উৎসুক মানুষ বাসাটির আশপাশে ভিড় জমায়। মঙ্গলবার বাদ আসর মুনিয়াকে কুমিল্লা নগরীর টমসমব্রিজ এলাকায় দাফন করা হয়।

নগরীর মনোহরপুরের উজির দীঘির দক্ষিণপাড় এলাকার বাসিন্দা মৃত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহর আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি সফিকুর রহমানের মেয়ে মোসারাত জাহান মুনিয়া রাজধানীর মিরপুর ক্যান্ট. পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী ছিল। এবার এ প্রতিষ্ঠান থেকে তার এইচএসসি পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল। এর আগে সে কুমিল্লা নগরীর বাদুরতলা এলাকার ওয়াইডব্লিউসিএ স্কুলে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করে। পরে সে নগরীর নজরুল এভিনিউ এলাকার মডার্ন হাইস্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হয়ে ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করে। সর্বশেষ রাজধানীর মিরপুর মনিপুরী স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এসএসসি পাস করে। পরিবারে এক ভাই ও দুই বোনের মধ্যে সে সবার কনিষ্ঠ।

জানা যায়, গুলশান দুই নম্বর এভিনিউয়ের ১২০ নম্বর সড়কের ১৯ নম্বর প্লটের বি/৩ ফ্ল্যাটে একা থাকতেন কলেজছাত্রী মুনিয়া। চলতি বছরের মার্চ মাসে এক লাখ টাকা মাসিক ভাড়ায় তিনি ওই ফ্ল্যাটে ওঠেন। সোমবার (২৬ এপ্রিল) সন্ধ্যায় ওই বাসা থেকে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় মুনিয়ার লাশ উদ্ধার করা হয়।

Bootstrap Image Preview