Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৬ মঙ্গলবার, মে ২০২৫ | ২৩ বৈশাখ ১৪৩২ | ঢাকা, ২৫ °সে

যে শর্তে সাংবাদিক রোজিনার জামিন মঞ্জুর করেছে আদালত

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৩ মে ২০২১, ১১:১৯ AM
আপডেট: ২৩ মে ২০২১, ১১:১৯ AM

bdmorning Image Preview


সরকারি গোপন নথি চুরির অভিযোগে দাপ্তরিক গোপনীয়তা আইনে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের করা মামলায় দৈনিক প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলামকে জামিন দিয়েছে আদালত।

রাষ্ট্রপক্ষের জমা দেয়া তথ্য-উপাত্তের (সিডির কপি) ওপর ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) আদালতের বিচারক বাকী বিল্লাহর ভার্চুয়াল আদালত রোববার এ আদেশ দেন।

আদালতে রোজিনা ইসলামের পক্ষে ভার্চুয়াল শুনানিতে অংশ নেন আইনজীবী এহসানুল হক সামাজী, জ্যোতির্ময় বড়ুয়া ও আমিনুল গনি টিটো। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সিএমএম আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আব্দুল্লাহ আবু ।

পিপি তার বক্তব্যে বলেন, রোজিনাকে শর্তসাপেক্ষ অর্ন্তবর্তীকালীন জামিন দেয়া যেতে পারে। আসামিপক্ষে এহসানুল হক সামাজী সে বক্তব্য সমর্থন করেন।

রোজিনা ইসলামের আইনজীবী এহসানুল হক সামাজী বলেন, পাঁচ হাজার টাকা মুচলেকা ও পাসপোর্ট জমা দেওয়ার শর্তে তিনি জামিন পান। আপাতত তিনি বিদেশ যেতে পারবেন না।

‘এ ছাড়া রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আদেশের আগে কয়েকটি ভিডিও আদালতে উপস্থাপন করতে চেয়েছিলেন। আমরা তার বিরোধিতা করেছি। আমরা বলেছি, আদেশের ঠিক আগ মুহূর্তে এই ধরনের তথ্য উপস্থাপনের কোনো সুযোগ নেই। আদালত আমাদের যুক্তিতে সন্তুষ্ট হয়ে এই আদেশ জানিয়ে দেন।’

এর আগে গত ২০ মে ভার্চুয়াল জামিন শুনানি শেষে রোজিনার জামিন বিষয়ে আদেশ দেয়ার তারিখ রোববার নির্ধারণ করেন সিএমএম হাকিম মোহাম্মদ জসীম।

রোজিনা ইসলাম ১৭ মে সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে গেলে তাকে পাঁচ ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখেন সেখানকার কর্মকর্তারা। রাতে তাকে শাহবাগ থানায় নিয়ে রাষ্ট্রীয় গোপন নথি চুরির অভিযোগে মামলা করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অভিযোগের ভিত্তিতে মামলাটি করেন স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের উপসচিব ডা. মো. শিব্বির আহমেদ উসমানী।

মন্ত্রণালয় অভিযোগ করেছে, এই গণমাধ্যমকর্মী রাষ্ট্রীয় কিছু গোপন নথি সরিয়েছেন; কিছু নথির ছবি তুলেছেন। এগুলো প্রকাশ হলে বিদেশি রাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক নষ্ট হতে পারত। নথিগুলো ছিল টিকা ক্রয়-সংক্রান্ত।

অভিযোগে বলা হয়, বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের টিকা ক্রয়সংক্রান্ত আলোচনা চলছে। এর খসড়া সমঝোতা স্মারক ও নন ডিসক্লোজার অ্যাগ্রিমেন্ট প্রণয়নকাজ চলছে। সমঝোতা স্মারক নিয়ে পক্ষদ্বয়ের মধ্যে প্রতিনিয়ত পত্র ও ই-মেইলের মাধ্যমে যোগাযোগ হচ্ছে। সেখানে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সন্নিবেশিত।

১৮ মে তাকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করা হয়। মামলায় রোজিনাকে পাঁচ দিনের জন্য রিমান্ডে পেতে আবেদন করে পুলিশ। শুনানি শেষে রিমান্ড আবেদন নাকচ করে দেন বিচারক মোহাম্মদ জসীম।

জামিন আবেদন করেছিলেন আসামি পক্ষের আইনজীবী। এই আবেদন আংশিক শুনানি নিয়ে পূর্ণাঙ্গ শুনানির জন্য ২০ মে দিন রাখেন বিচারক। রোজিনাকে পাঠিয়ে দেয়া হয় কাশিমপুর কারাগারে।

২০ মে ভার্চুয়াল শুনানি শেষে বিচারক মোহাম্মদ জসিম রোববার জামিন শুনানির জন্য নতুন তারিখ রাখেন এবং রাষ্ট্রপক্ষকে নথি উপস্থাপন করতে বলেন।

রোজিনার বিরুদ্ধে মামলাটি করা হয়েছে দণ্ডবিধির অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট ১৯২৩-এর ৩ ও ৫ ধারায়। সেখানে তার বিরুদ্ধে সরকারি নথি সরানো ও ছবি তোলার অভিযোগ আনা হয়েছে।

শুরু থেকেই রোজিনাকে মুক্তির আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছিল সাংবাদিক সংগঠনগুলো। সাংবাদিক নেতারা রোজিনার নিঃশর্ত মুক্তি চাইছিলেন।

Bootstrap Image Preview