Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৯ শুক্রবার, মে ২০২৫ | ২৬ বৈশাখ ১৪৩২ | ঢাকা, ২৫ °সে

তরুণী স্ত্রীর সাথে ‘পরকীয়ার’, মসজিদে যুবককে খুন করে ৬ টুকরো করেন ইমাম

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৫ মে ২০২১, ০৯:০৫ PM
আপডেট: ২৫ মে ২০২১, ০৯:০৫ PM

bdmorning Image Preview


 

৪ বছরের শিশু আরিয়ান দক্ষিণখানের সরদার বাড়ির বড় মসজিদ মক্তবে পড়তো। আরিয়ানের বাবাও ওই মক্তব থেকে কুরআন শিক্ষা নিয়েছেন। তার বাবা আজহার এবং তার মা তাকে মাঝে মাঝে মসজিদে রেখে আসতেন। ওই মসজিদের ইমাম মাওলানা আব্দুর রহমানের সঙ্গে তাদের ব্যক্তিগত সম্পর্ক গড়ে উঠে। সম্পর্ক থেকে তাদের বাড়িতে যাতায়াত ছিল মাওলানা আব্দুর রহমানের। মাওলানা আব্দুর রহমানের সঙ্গে আজহারের স্ত্রী পরকীয়ার সম্পর্ক গড়ে উঠে বলে সন্দেহ করতেন আজহার। এতে তাদের মাঝে সম্পর্কের ফাটল ধরে। এ নিয়ে গত ১৯ শে মে রাতে ভিকটিম আজহার ইমামকে তার স্ত্রীর দিকে কুনজর না দিতে শাসানোর জন্য মসজিদে গিয়েছিলেন।

ইমাম তখন মসজিদের ভেতর তার শয়ন কক্ষে শুয়ে ছিলেন। এসময় তাদের মাঝে কথা কাটাকাটি হয়। হাতাহাতিরও ঘটনা ঘটে। তখন ক্ষিপ্ত হয়ে বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে কোরবানির গরু জবাইয়ের ছুরি দিয়ে আজহারের গলায় আঘাত করেন ইমাম মাওলানা আব্দুর রহমান। মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর আজহারের মরদেহ ছয় টুকরা করে মসজিদের সেপটিক ট্যাংকে লুকিয়ে ফেলেন তিনি।

ইমাম আব্দুর রহমান পুরো কাজটি করেন দক্ষিণখানের সরদার বাড়ি জামে মসজিদে তার শয়ন কক্ষে। সেফটিক ট্যাংকি থেকে দুর্গন্ধ ছড়ালে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে আজহারের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে ইমাম আব্দুর রহমানকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-১। বিকালে রাজধানীর কাওরানবাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।

লে. কর্নেল মোত্তাকিম জানান, এই ঘটনায় সঙ্গে পরকিয়ার কোনো সম্পৃক্ততা আছে কিনা তা আমরা যাচাই বাছাই করছি। এখনই কিছু বলতে পারছি না। তবে ইমাম আব্দুর রহমান বলেছেন, আজহার আমাকে ভয়ভীতি দেখিয়েছে এবং বলেছে তার স্ত্রীর দিকে আমি (আব্দুর রহমান) কু-দৃষ্টি দিয়েছি। এই কারণে তার সঙ্গে বাকবিতণ্ডা হয়। এরপরই রাগান্বিত হয়ে হত্যার ঘটনা সংগঠিত হয়। এশার নামাজের পর থেকে ফরজের আযানের আগ পর্যন্ত আজহারকে কুপিয়ে ছয় টুকরা করা হয়। এরপর মসজিদের সেফটি ট্যাংকে টুকরা করা মরদেহ লুকিয়ে রাখা হয়।

নিহতের স্ত্রী র‍্যাব হেফাজতে আছেন কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কিছুক্ষণ আগে নিহতের স্ত্রী আসমা বেগমকে আমাদের হেফাজতে নিয়েছি। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। বিস্তারিত পরে জানানো হবে।

ধারালো অস্ত্রগুলো কিভাবে এলো জানতে চাইলে লে. কর্নেল আব্দুল মোত্তাকিম বলেন, তিনি (ইমাম) দীর্ঘদিন ধরে ওই মসজিদে চাকরি করতেন। কোরবানির সময় পশু জবাই করার জন্য তিনি এগুলো রাখতেন। সেই অস্ত্র দিয়েই এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

এর আগে গতকাল সোমবার মসজিদের সিঁড়িতে রক্তের দাগ ও সেফটি ট্যাংক থেকে দুর্গন্ধ বের হচ্ছিল। এছাড়া স্থানীয় আজহারকে ১৯ তারিখ থেকে নিখোঁজ ছিল। এমন ঘটনায় অনুসন্ধান শুরু করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। পরে র‍্যাব ইমামকে আটক করে এবং জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার ঘটনা জানতে পারে। এ সময় অভিযুক্তের কাছ থেকে হত্যায় ব্যবহৃত তিনটি চাকু ও মোবাইল উদ্ধার করা হয়।

Bootstrap Image Preview