পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নানের মোবাইল ফোন ছিনতাইয়ের ঘটনায় কাফরুল থানারভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার ঘুম হারাম হয়ে গিয়েছে! তার নাওয়া-খাওয়ার রুটিন নেই এখন, নেই বিশ্রাম। ফোন উদ্ধারে পথে পথে হন্য ঘুরছেন ওসি।
ছিনতাইয়ের পর থেকে মন্ত্রীর ফোনটি বন্ধ। তাই এর অবস্থান শনাক্ত করা কিছুটা কঠিন হয়ে গেছে। যদিও সন্দেহভাজনকে চিহ্নিত করা হয়েছে জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ বলছে, সেই ব্যক্তি ঘটনাস্থল বিজয় সরণির মুখে স্থাপিত উড়োজাহাজের ভাস্কর্যের নিচে ঘুমাতেন। ঘটনার দিন থেকে তিনি সেখানে নেই।
কাফরুল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. সেলিমুজ্জামা বলেন, ‘ঘটনার পর থেকে বাসা তো ভালো, থানায়ও ঠিক মতো গেছি কি না ঠিক নাই।’
কতটা অগ্রগতি হলো? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘অভিযান চলমান। আশা করছি খুব শিগগির তাকে গ্রেপ্তার করা হবে।’
এদিকে ওই এলাকায় ভবঘুরেদের কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। তবে তাদের কাছ থেকে সুনির্দিষ্ট তথ্য মেলেনি। তবে ওই এলাকায় সড়কের পাশে ঘুমান, এমন একজন ফোনটি নিয়ে গেছেন, এ বিষয়ে অনেকটাই নিশ্চিত পুলিশ।
ঢাকা মহানগর পুলিশের মিরপুর বিভাগের উপকমিশনার আ স ম মাহতাব উদ্দিন বলেন, পরিকল্পনামন্ত্রীর মুঠোফোন ছিনতাইয়ে একজনকে চিহ্নিত করা গেছে। তদন্ত সাপেক্ষে আসামির নাম প্রকাশ করা হচ্ছে না। তিনি আমাদের নজরদারিতে আছেন। খুব শিগগির তাকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হব। তার নাম-ঠিকানাসহ বিস্তারিত তথ্য পাওয়া গেছে।’
তবে ঘটনাটি সিসিটিভি ক্যামেরায় ধরা পড়েনি। যেখানে ঘটনাটি ঘটেছে, সেটি ক্যামেরার আওতায় ছিল না। আর আশপাশের এলাকায় স্থাপিত সিসিটিভি ফুটেজ জব্দ করে বিশ্লেষণ করেও কিছু পায়নি বাহিনীটি।
গত রোববার রাতে ঢাকার বিজয় সরণি মোড়ে গাড়িতে বসে ফোনে কথা বলার সময় পরিকল্পনামন্ত্রীর ফোন টান দিয়ে নিয়ে যায় কেউ একজন। মঙ্গলবার এ ঘটনাটি প্রকাশ পায়। আর ফেসবুকে বলাবলি হতে থাকে, মন্ত্রীর ফোনের যখন নিরাপত্তা নেই, তখন সাধারণ মানুষের কী অবস্থা।
মোবাইল ফোন ছিনতাই কোনো নতুন ঘটনা নয়। প্রায়ই এখানে সেখানে এর শিকার হয় নগরবাসী। এ নিয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগই করে না বেশির ভাগ মানুষ। কারণ, অভিযোগ করলেও পুলিশের তৎপরতা থাকে না বললেই চলে। যদিও মাঝেমধ্যে দু-একটি ফোন উদ্ধার করে মালিকের হাতে তুলে দিয়ে তার ব্যাপক প্রচার চালায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
সাধারণের এই বক্তব্য উঠে এসেছে আইনশৃঙ্খলাবিষয়ক মন্ত্রিসভা কমিটির সভা শেষে সভাপতি মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের বক্তব্যেও। বুধবার তিনি বলেন, ‘মন্ত্রীর মোবাইল নিয়েছে বলেই... অবশ্যই প্রশ্ন জাগে যে মন্ত্রীরটা নিলে সাধারণ মানুষের অবস্থা কী?’