আবাহনী-মোহামেডান ম্যাচে আম্পায়ারের সঙ্গে বাজে আচরণ, আবাহনী কোচ খালেদ মাহমুদ সুজনের সঙ্গে ঝগড়া- সব মিলিয়ে ফের দেশের ক্রিকেটে আলোচনায় এসেছেন সাকিব আল হাসান। আজ শুক্রবার ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের (ডিপিএল) ম্যাচে এমন ঘটনা ঘটেছে। এরপর আবাহনীর ড্রেসিংরুমে গিয়ে সুজনের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন মোহামেডান অধিনায়ক সাকিব। এরপর তিনি সোশ্যাল সাইটেও ভক্তদের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন।
নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজে সাকিব লিখেছেন, 'প্রিয় ভক্তবৃন্দ, এভাবে মেজাজ হারিয়ে একটা ম্যাচ নষ্ট করার জন্য এবং যারা ঘরে বসে খেলা দেখছিলেন তাদের কষ্ট দেওয়ার জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখিত। আমার মতো একজন অভিজ্ঞ ক্রিকেটারের এমন আচরণ করা কখনই উচিত নয়। আমি আমার দল, ম্যানেজম্যান্ট, টুর্নামেন্ট অফিসিয়ালস এবং সাংগঠনিক কমিটির কাছে এই মানবিক ভুলের জন্য ক্ষমা চাইছি। আশা করিছি, ভবিষ্যতে কখনই আর এমন কাজ করব না। সবাইকে ধন্যবাদ এবং ভালোবাসা।'
যদিও বিতর্ক আর সাকিব যেন হাত ধরাধরি করে হাঁটে। এক সপ্তাহও পার হয়নি তার ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ ক্রিকেটের জৈব সুরক্ষা বলয় ভাঙার ঘটনার। এজন্য কড়া সতর্কবার্তাও পেয়েছেন তিনি ও তার ক্লাব মোহামেডান। এর মধ্যেই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আবাহনীর বিপক্ষে ম্যাচে সব সীমা পেরিয়ে গেলেন। প্রথমে আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে সন্তুষ্ট না হয়ে মেজাজ হারিয়ে স্টাম্পে লাথি, এরপর আম্পায়ারের সঙ্গে তর্কে জড়ানো এবং সবশেষ অদ্ভুত আচরণে তিন স্টাম্প উপড়ে আছাড় মারা!
যদিও কয়দিন আগেই সাকিব আল হাসান এক সাক্ষাতকারে বলেছিলেন, জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের খুব কাছের মানুষটি হলেন খালেদ মাহমুদ সুজন। তিনিই ক্রিকেটারদের সবকিছু দেখভাল করেন। তবে আজ শুক্রবার আবাহনী-মোহামেডান ম্যাচে সাকিব আল হাসান ঝগড়ায় জড়িয়ে পড়েন আবাহনীর কোচ খালেদ মাহমুদ সুজনের সঙ্গেও। সেইসময় দুই দলের ক্রিকেটার এবং স্টাফরা এই দুজনকে আলাদা করে যার যার টেন্টে নিয়ে যান।
ঘটনার শুরু আবাহনীর ইনিংসের পঞ্চম ওভারের। আবাহনীর মুশফিকের কাছে একটি করে চার-ছক্কা হজমের পর শেষ বলটা দারুণভাবে ভেতরে ঢুকিয়েছিলেন মোহামেডানের অধিনায়ক সাকিব। ব্যাটসম্যান মুশফিক পরাস্ত হন। এলবিডাব্লিউর জোরালো আবেদন উঠলেও নাকচ করে দেন আম্পায়ার। সাদা চোখে সেটাকে এলবিডাব্লিউ বলেই মনে হয়েছিল। এরপর এক মুহূর্ত অপেক্ষা না করে ক্ষেপে গিয়ে লাথি মেরেই স্টাম্প ভেঙে ফেলেন সাকিব! পরের ওভার শেষে ফের স্টাম্প তুলে আছাড়ও মারেন!
পরের ওভারেই বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ হয়ে যায়। এক সময় আম্পায়ারকে আঙুল তুলে শাসাতে দেখা যায় সাকিবকে। বৃষ্টি শুরু হওয়ায় সাকিবসহ বাকি ক্রিকেটাররা মাঠ ছাড়ছিলেন। ড্রেসিংরুমে ফেরার পথে সাকিবকে উদ্দেশ্য করে গালি দেন আবাহনীর কয়েকজন সমর্থক। সাকিবও তাদের পাল্টা গালি দেন। এসময় আবাহনীর কোচ খালেদ মাহমুদ সুজন সাকিবের এমন ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ মেনে নিতে পারেননি। তিনি রাগে গজগজ করছিলেন।
সাকিব যখন আবাহনী সমর্থকদের বকা দিচ্ছিলেন, তখন তার দিকে তেড়ে যান সুজন। তখন সুজনের সঙ্গে সাকিবের কথা কাটাকাটি লেগে যায়। খালেদ মাহমুদ সুজন ভেবেছিলেন, সাকিব তাকে উদ্দেশ্য করে কটু কথা বলেছেন। কিন্তু সুজনকে পরে সাকিব বোঝানোর চেষ্টা করেন যে, আবাহনীর সমর্থকেরা গালি দেওয়ায় তিনি তাদের পাল্টা বলেছিলেন। সুজনকে কিছু বলেননি। এরপর দুজনকেই নিজ নিজ দলের ক্রিকেটার ও স্টাফরা টেনে আলাদা করে। এমন একটা ঘটনা ঘটানোর পর সাকিব বড় ধরনের শাস্তি পেতে যাচ্ছেন বলে ক্রিকেটমহল মনে করছে।