Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ৩০ বুধবার, এপ্রিল ২০২৫ | ১৭ বৈশাখ ১৪৩২ | ঢাকা, ২৫ °সে

ভারতে করোনা টিকা নিতে পারবেন গর্ভবতী নারীরা

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৩ জুলাই ২০২১, ০১:৫৪ PM
আপডেট: ০৩ জুলাই ২০২১, ০১:৫৬ PM

bdmorning Image Preview
ছবি সংগৃহীত


ভারতে গর্ভবতী নারীদের করোনার টিকা গ্রহণের অনুমোদন দিয়েছে দেশটির ইউনিয়ন হেলথ মিনিস্ট্রি।

শুক্রবার ন্যাশনাল টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজরি গ্রুপ অন ইম্যুনাইজেশন থেকে পরামর্শ পাওয়ার পরপরই এই অনুমোদন দেওয়া হয়।

মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়, গর্ভবতী নারীরা এখন চাইলেই করোনার টিকা নিতে পারবেন। এটি সম্পূর্ণ তাদের সিদ্ধান্ত। তারা চাইলে এখন থেকে অ্যাপের মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশন করতে পারেন কিংবা সরাসরি টিকা কেন্দ্রে গিয়েও টিকা গ্রহণ করতে পারবেন।

নতুন এই সিদ্ধান্ত দেশটির সব রাজ্য ও প্রতিটি ইউনিয়ন অঞ্চলে সমন্বয় করে সফল করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি অন্যান্য নাগরিকদের জন্য দেশব্যাপী টিকা কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে বলেও জানানো হয়েছে মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে।

এর আগে এক গবেষণায় দেখা গেছে, স্তন্যদানকারী নারীকে টিকা দেওয়া হলে এ থেকে তৈরি হওয়া অ্যান্টিবডি তার শরীর থেকে সন্তানের শরীরে পৌঁছায়-যা শিশুর শরীরে এ ভাইরাসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধব্যবস্থা গড়ে তোলে। তবে স্বল্পপরিসরের গবেষণায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যুক্তিতে বাংলাদেশে এখনো গর্ভবতী বা দুগ্ধদানকারী মায়েদের টিকা দেওয়ার অনুমোদন দেয়নি সরকার।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশে আগের চেয়ে বেশি গর্ভবতী ও স্তন্যদানকারী নারী করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন। এমনকি এ কারণে গর্ভধারণকালে অনেকের মৃত্যুও হচ্ছে। তাই সামগ্রিক বিবেচনায় এখনই এ বিষয়ে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কয়েক মাস আগেও বিশেষজ্ঞরা গর্ভবতী ও স্তন্যদানকারী নারীদের করোনা টিকার আওতার বাইরে রেখেছিলেন। কারণ এ দুই শ্রেণির ওপর টিকার ট্রায়াল করা হয়নি।

তবে বর্তমানে বলা হচ্ছে, এ দুই শ্রেণির মানুষের জন্যও করোনা টিকা নিরাপদ। পৃথিবীতে কয়েক কোটি মানুষের শরীরে করোনা টিকা দেওয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত উল্লেখ করার মতো তীব্র কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

বিপরীতে গর্ভবতী নারী করোনায় সংক্রমিত হলে মা ও শিশু উভয়েরই মৃত্যু ঝুঁকি বেড়ে যায়। এসব বিষয়ে মাথায় রেখেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, সিডিসি ইত্যাদি প্রতিষ্ঠান গর্ভবতী ও স্তন্যদানকারী নারীকে করোনা টিকা নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছে।

সম্প্রতি ‘করোনা টিকা এবং বুকের দুধ খাওয়ানো : মায়েদের কী জানা উচিত’ শীর্ষক এক প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক ‘প্যারেন্টস’ জার্নালে। প্রবন্ধে নিকোল হ্যারিস বলেছেন, কয়েক মাস অপেক্ষার পরে তিনটি কোভিড-১৯ টিকা শেষ পর্যন্ত খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন (এফডিএ) এর থেকে জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন পেয়েছে। টিকাগুলো বর্তমানে সারাদেশে স্বাস্থ্যসেবা কর্মী এবং উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তিদের মধ্যে বিতরণ করা হচ্ছে।

কিছু ক্ষেত্রে করোনার টিকার সুরক্ষা সম্পর্কে সন্দেহ রয়েছে। এর মধ্যে বুকের দুধ খাওয়ানো মায়েরাও রয়েছেন-যারা মূলত ক্লিনিকাল ট্রায়াল থেকে বাদ পড়েছেন। তাদের বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তারা টিকা নিতে পারবেন। যদিও টিকা এখনো নতুন এবং এর প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে খুব বেশি তথ্য নেই।

এ সম্পর্কে ‘ল্যানসিনোহ ক্লিনিকাল অ্যাডভাইজরি নেটওয়ার্ক’-এর এক গবেষণায় বলা হয়েছে, টিকা নেওয়ার পর গর্ভবতী নারীদের অন্য কারও চেয়ে খারাপ প্রতিক্রিয়া দেখা যায় না। ল্যানসিনোহ ক্লিনিকাল অ্যাডভাইজরি নেটওয়ার্কের সদস্য সহযোগী অধ্যাপক হেনরি সি লি বলেন, যত বেশি লোক টিকা দেবে, সম্ভাব্য প্রতিকূল পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলো সম্পর্কে আরও জানা সম্ভব হবে।

আমেরিকান কলেজ অব অবস্টেট্রিশিয়ানস অ্যান্ড গাইনোকোলজিস্টস (এসিওজি) ও একাডেমি অব ব্রেস্টফিডিং মেডিসিন (এবিএম)-ও সুপারিশ করেছে, স্তন্যদানকারী নারী টিকা নিতে পারবেন। এতে টিকার উদ্দীপিত অ্যান্টিবডি ও টি-সেলগুলো নিষ্ক্রিয়ভাবে দুধে স্থানান্তরিত হয়। দুধে স্থানান্তরিত অ্যান্টিবডি শিশুকে সার্স-কোভ-২ ভাইরাসের সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা করতে সক্ষম। সংস্থা দুটির বিশেষজ্ঞরাও বলছেন, গর্ভবতী ও স্তন্যদানকারী নারীদের টিকায় অংশ নেওয়ার সুযোগ দেওয়া উচিত।

ভারতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ৪ লাখ ১ হাজার ৫০ জন মারা গেছেন। দেশটিতে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৩ কোটি ৫ লাখ ২ হাজার ৩৬২ জন। সংক্রমণের শতকরা হার ৭ দশমিক ৩২ ভাগ।

Bootstrap Image Preview